Hot

রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ইউরোপে রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশিদের আবেদন

‘ইইউ প্লাস’ অঞ্চলে (ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সংক্ষেপে ইইউর ২৭ দেশ এবং নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড) গত বছর রেকর্ডসংখ্যক বাংলাদেশি আশ্রয় চেয়েছেন। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

‘ইইউ প্লাসে’ আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশির রেকর্ড

প্রতিবেদনের তথ্য মতে, গত বছর ওই অঞ্চলে আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৪০ হাজার ৩৩২। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে আবেদন করেছেন ২০ হাজার ৯২৬ বাংলাদেশি।

আর জুলাই থেকে ডিসেম্বরে আবেদনকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৪০৬।

আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশিদের আবেদনের সংখ্যা গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১৫ সালে ছিল ১৭ হাজার ২১৭ জন, ২০১৬ সালে ১৫ হাজার ৮৭ জন, ২০১৭ সালে ১৯ হাজার ১২৮ জন, ২০১৮ সালে ১৩ হাজার ৩৪০ জন, ২০১৯ সালে ১৪ হাজার ৩৭৫ জন, ২০২০ সালে ১১ হাজার ২৬৯ জন, ২০২১ সালে ১৯ হাজার ৯৯৪ জন ও ২০২২ সালে ৩৩ হাজার ৭৩১ জন বাংলাদেশি আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। অর্থাত্ ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

গত বছর বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে ইতালি, ফ্রান্স ও রুমানিয়ায়। ইতালিতে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন বেড়েছে। গত বছর শেষে দেশটিতে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের ৬৯ শতাংশ আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল।

গত বছর শেষে বাংলাদেশিদের ৩২ হাজার ৯৪৬টি আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল।

দুই হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থী তাঁদের আবেদন প্রত্যাহার করেছেন। গত বছর ইইউ প্লাস অঞ্চলে আশ্রয়প্রার্থী ৪০ হাজার ৩৩২ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৩৮ হাজার ৯৯২ জনই প্রথমবারের মতো আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ হাজার ১৭৩ জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার হার ১ শতাংশেরও অনেক কম।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ইউরোপে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার হার বেশ কম।

কারণ আশ্রয়ের জন্য তাঁদের নিজ দেশে থাকতে না পারার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে হবে। যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে না পারলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক বলেন, এখনো অনেক বাংলাদেশি আফ্রিকার দেশগুলো থেকে প্রতিবছর অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের অনেকের মৃত্যু হয় সাগরে। যাঁরা ইউরোপে পৌঁছে আশ্রয় চান তাঁদেরও বেশির ভাগ দীর্ঘ মেয়াদে আশ্রয় পান না।

ইইউয়ের হিসাবে ২০২৩ সালে ১১ লাখ বিদেশি ইইউ প্লাস অঞ্চলে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। ২০২২ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ১৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সাল শেষে ইইউ প্লাস অঞ্চলে সাময়িক আশ্রয় পাওয়া ইউক্রেনীয়র সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৪ লাখ। তাঁরা ইউক্রেনে রাশিয়ার পুরো মাত্রার অভিযান শুরুর পর ইইউ প্লাস অঞ্চলে আশ্রয় নেন।

২০১৫-১৬ সালে ১০ লাখেরও বেশি অভিবাসী ও শরণার্থী ইউরোপে আশ্রয় চেয়েছিলেন। ওই সময়টিকে ইইউ অঞ্চলে শরণার্থী সংকট হিসেবে গণ্য করা হয়। এর পর থেকে ইইউয়ের বিভিন্ন নীতিতে শরণার্থী ইস্যু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

কভিড মহামারির কারণে মাঝে চলাচল বিধি-নিষেধের কারণে আশ্রয়প্রার্থী ও আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের হার কমেছিল। কয়েক বছর ধরে এটি আবার বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button