‘রাশিয়ায় পুতিনের সামনে যেমন কেউ নেই, বিজেপি এখানে একই পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়’
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ৬৩ দিন ব্যাপী ভারত জোড়া ন্যায় যাত্রার শেষে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া ব্লকের’ সদস্যরা মিলিত হলেন মুম্বাইয়ের বুকে। সেখানে তারা ‘জাতীয় মহাগঠবন্ধন’-এর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুর থেকে এই ন্যায় যাত্রা শুরু হয়েছিল। বিরোধী মঞ্চ থেকে রাহুল গান্ধী বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। হিন্দু ধর্মে একটি শব্দ আছে ‘শক্তি’ । আমরা সেই শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছি। বিরোধীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার এবং ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) কারসাজির অভিযোগ তুলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রকে নিশানা করে রাহুল বলেন, ইভিএম, ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) ছাড়া শাসক দল লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারবে না। উনি হলেন সেই রাজা, যার প্রাণভোমরা ইভিএম।
মুম্বাইয়ের শিবাজি পার্কে রাহুল গান্ধীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে তেজস্বী যাদব, এম কে স্ট্যালিন, মল্লিকার্জুন খাড়গে , শরদ পাওয়ার, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা, উদ্ধব ঠাকরে এবং মেহবুবা মুফতি সহ বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতা উপস্থিত ছিলেন। বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে… রাহুল গান্ধীর আমন্ত্রণে আমরা সবাই আজ মুম্বাই এসেছি।
লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ইন্ডিয়া ব্লকের প্রচার শুরু করার জন্য সমগ্র গান্ধী পরিবারের উপস্থিতিতে শিবাজি পার্কে বিরোধীদের সমাবেশকে সর্বকালের সর্ববৃহৎ শক্তি প্রদর্শন হিসাবে ফোকাস করা হচ্ছে। শিবসেনা সভাপতি উদ্ধব ঠাকরের অভিযোগ, ‘নির্বাচনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সামনে যেমন কেউ ছিল না।
তারা (বিজেপি) এখানে একই পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়’।সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছিলেন, ‘বিজেপি রাহুল গান্ধিকে ভয় পায়।’এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অন্ধ্র প্রদেশে বিজেপির হয়ে প্রচারের সময় কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছিলেন। মোদি, মুম্বাইতে ভারত ব্লকের বৈঠক প্রসঙ্গে বলেছিলেন,’কংগ্রেসের এজেন্ডা তার অংশীদারদের প্রথমে ব্যবহার করা এবং তারপর তাদের ছুড়ে ফেলে দেয়া’। যে প্রসঙ্গে বিরোধীদের দাবি, ‘ভারত ব্লকের লড়াই ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদি বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের ঘৃণার আদর্শের বিরুদ্ধে।’
শরদ পাওয়ার, যিনি এখন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধান, বলেছেন, ‘মহাত্মা গান্ধী মুম্বাই থেকে ‘ভারত ছাড়ো’ ডাক দিয়েছিলেন, এবং তাই বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ইন্ডিয়া ব্লকের নেতাদের মুম্বাই থেকে একই কাজ করা উচিত’।উদ্ধব ঠাকরে আবার সরাসরি শাসকদলকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘যখন মানুষ একত্রিত হয়, তখন একনায়কত্ব শেষ হয়।’