Hot

রেমালে নেটওয়ার্ক ব্ল্যাকআউট, বিদ্যুৎ-পানির অভাবে তীব্র দুর্ভোগ, এখনো বিদ্যুৎহীন ১ কোটি ৭২ লাখ গ্রাহক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিলেন দেশের প্রায় অর্ধেক গ্রাহক। বিদ্যুৎ সংকটে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের অনেক এলাকা অনেকটা ব্ল্যাকআউট হয়ে পড়ে। গত রোববার রাত থেকে গতকাল দিনভর এসব এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না। এমনকি রাতেও অনেক এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল হয়নি। এর সঙ্গে ব্রডব্র্যান্ড ইন্টারনেটও বিচ্ছিন্ন ছিল অনেক এলাকায়। এতে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন বেশির ভাগ মানুষ সারারাত নির্ঘুম রাত কাটান। পরিবার ও স্বজনরাও আদৌও নিরাপদে আছেন কি না তার খোঁজও নিতে পারেননি তারা। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। রেমালের আঘাত পাওয়া জেলা ছাড়াও রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে দেখা যায়। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জেলাগুলোতে থেকেও নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। 

ওদিকে ঘূর্ণিঝড়ের একদিন পরও দেশের অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি।

এমনকি রাজধানী ঢাকায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। এ কারণে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েন। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সংকট দেখা দেয় এসব এলাকায়। ঢাকা ওয়াসা সূত্র জানিয়েছে, গতকাল পরীবাগ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবীর সুজাতনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পাম্প বন্ধ থাকায় পানি সরবরাহ করা যায়নি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দারা। জরুরি প্রয়োজনে ওয়াসার কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে পানি পেতেও বাসিন্দাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। 
ক্যাবল কাটা পড়া ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার মধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর এলাকা পুরোপুরি ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দুর্যোগের কারণে ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চলের ৯০ শতাংশ ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী জোয়ার ও ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত সংযোগ পুনঃস্থাপন সম্ভব নয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। 

রেমালের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার পাশাপাশি সারা দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবায় ব্যাঘাত ঘটেছে। বিটিআরসি তাদের এক হিসাবে জানিয়েছে, দেশের ৬৪টি জেলায় মোট সাইট রয়েছে ৫৮ হাজার ২৯৮টি। এরমধ্যে অসচল হয়ে পড়া সাইটের সংখ্যা ২৬ হাজার ২৫১টি। অর্থাৎ মোট সাইটের ৪৫ ভাগ অসচল হয়ে পড়ে। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে ছোট জেলা মেহেরপুরে মোট সাইটের সংখ্যা ২৬৮টি। এরমধ্যে অসচল হয়ে পড়ে ১৩৩টি। গড়ে ৫০ ভাগ সাইট অসচল হয়ে পড়ে। কিন্তু রেমালের আঘাত মেহেরপুর পর্যন্ত যায়নি। বলা হচ্ছে- বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের কারণে সাইটের এ অসচলতা। এ প্রসঙ্গে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, মোবাইল অপারেটরদের অপর্যাপ্ত টাওয়ার, মানহীন মাইক্রোওয়েভ, মানহীন ব্যাটারি, ওভার হেড ফাইবার ও জেনারেটর না থাকা এবং দেশের ফাইবার অপটিক্যাল এখনো ৬৫ শতাংশ ওভারহেড থাকায় ঝড়-বৃষ্টি এলেই নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় হয়েছে ১৭ জেলায় নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে ৫৬ জেলায়! 

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে বিটিআরসি বেসরকারি চারটি টাওয়ারকো কোম্পানির লাইসেন্স দিয়ে যে নীতিমালা তৈরি করেছে।  সেখানে বলা রয়েছে, মোবাইল অপারেটর নতুন করে আর টাওয়ার তৈরি করতে পারবে না। অর্থাৎ টাওয়ারকো কোম্পানি থেকে তাদের অর্থের বিনিময়ে সার্ভিস নিতে হবে। এই টাওয়ার কোম্পানিগুলো মূলত মোবাইল অপারেটর থেকে টাওয়ারগুলো কিনেছে। এই টাওয়ারগুলোর মাইক্রোওয়েভ মানসম্মত নয়, সেই সঙ্গে ব্যাটারিগুলো মানহীন হয়ে পড়েছে। যেখানে ছয় ঘণ্টা পাওয়ার ব্যাক দেয়ার কথা সেখানে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নেটওয়ার্ক অচল হওয়ার কারণ কি? এক প্রশ্নে মানবজমিনকে তিনি বলেন, নেটওয়ার্ক ব্ল্যাকআউটের দায়ভার মোবাইল অপারেটর ও বিটিআরসিকে নিতে হবে। যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রাহকরা অর্থের বিনিময়ে সেবা নেয় অপারেটরদের কাছ থেকে। তাই সেবায় সমস্যা হলে দিনশেষে তারা অপারেটরদের দায়ী করবে। নিয়ম অনুযায়ী বিটিএসগুলো ছয় ঘণ্টা ব্যাকআপ থাকার কথা। অথচ বেশির ভাগ বিটিএসে ওই ব্যাকআপ থাকে না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটকের বিটিএস একেবারে মানহীন। 

নিম্নমানের ব্যাটারি ব্যবহার করায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিটিএসও অসচল হয়ে পড়ে। বিটিআরসির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, কলড্রপ আর রেডিয়েশনের মাত্রা পরীক্ষা ছাড়া বিটিআরসি তেমন কোনো কাজ করে না। তারা চাইলে প্রতিটি বিটিএসএ’র মান পরীক্ষা করতে পারে। দেশে সক্রিয় সিমধারী গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৯ কোটি ২৬ লাখ। এর বিপরীতে যেখানে টাওয়ার থাকার কথা প্রায় লক্ষাধিক সেখানে আছে ৪৫ হাজার ২৩১টি। এরমধ্যে রবির দুই হাজার দুইশ ৯৬, গ্রামীণফোনের ১২ হাজার পাঁচশ ২৬, বাংলালিংকের চার হাজার ছয়টি, টেলিটকের ছয়শ’ ২১ এবং এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের আটশ’ ৬০, ইডটকো লিমিটেডের ১৬ হাজার ছয়শ’ ৮৩, সামিট চার হাজার তিনশ’ ৮৮ ও কীর্তনখোলা ছয়শ’ ২১ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের পাঁচশ’ ১৪টি। মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের ফাইবার অপটিক্যাল এখনো ৬৫ ভাগ ওভারহেড থাকায় ঝড়-বৃষ্টি এলেই কেটে যাচ্ছে ফাইবার। ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে নেটওয়ার্ক। বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করার জন্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট মহল উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে মনে করি। 

একই প্রসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, উপকূলীয় এলাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হয়েছে। অনেক বিটিএস অসচল হয়ে পড়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ দুপুরের মধ্যে হয়তো সব বিটিএস সচল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, পাওয়ার ট্রান্সমিশন সিস্টেমটাকে আরও উন্নত করা না গেলে এ ধরনের বিপর্যয় ভবিষ্যতেও হতে পারে। পাশাপাশি বিটিএসগুলোর ব্যাকআপ আরও বাড়ানো দরকার বলে মনে করি। প্রায় একই সুরে মন্তব্য করেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ রাশেদ মেহেদী। মানবজমিনকে তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে নেটওয়ার্ক সিস্টেম নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। তা না হলে এ ধরনের নেটওয়ার্ক ব্ল্যাকআউটের শিকার আরও হতে পারে। সিমলেস বা নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করা অন্যতম একটি শর্ত। সেক্ষেত্রে আমাদের উচিত ছিল দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য কিছু জরুরি ব্যাকআপ রাখা। 

অপারেটরদের অফার নিয়ে প্রশ্ন: এদিকে রেমালের প্রভাবে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্নের মাঝে মোবাইল অপারেটরদের ফ্রি অফার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের ট্রল হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ছয় অঞ্চলের গ্রাহকদের ফ্রি মিনিট এবং ইন্টারনেট দিচ্ছে গ্রামীণফোন। গতকাল গ্রামীণফোন তার ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালে আক্রান্ত দুর্যোগকবলিত অঞ্চলে আমাদের নেটওয়ার্ক টিম ২৪ ঘণ্টা তৎপর আছে যেকোনো সমস্যা মোকাবিলায়। দুর্যোগের এই সময়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, খুলনা, যশোর ও বরিশাল অঞ্চলের গ্রামীণফোন গ্রাহকদের জন্য ১০ মিনিট এবং ৫০০ এমবি ইন্টারনেট সম্পূর্ণ ফ্রি। তবে গ্রামীণফোনের ওই পোস্টে মাহতাব হোসেন নামের একজন কমেন্টে লিখেছেন, ওদিকে তো ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক নাই, ব্যবহার করবে কীভাবে? তার চেয়ে সারা দেশ দেন, যারা পারবে তারা ব্যবহার করবে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামীণফোনের এক কর্মকর্তা বলেন, মূলত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনা করেই এ ধরনের অফার দেয়া হয়েছে। প্রায় একই অফার দিয়ে বাংলালিংক জানিয়েছে- দেশের অন্যতম উদ্ভাবনী ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক, ঘূর্ণিঝড়  রেমাল-আক্রান্ত গ্রাহকদের সহায়তা করার জন্য বেশকিছু উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এই সংকটের সময়ে সংযোগের গুরুত্ব অনুধাবন করে, বাংলালিংক ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত এলাকার গ্রাহকদের জন্য বিনামূল্যে টকটাইম, ইন্টারনেট এবং বিশেষ মূল্যছাড়ে পণ্য ও সেবা প্রদান করছে। অপারেটরটি দশ মিনিটের বিনামূল্যের টক-টাইম ও তিনদিন মেয়াদের ৫০০ এমবি বিনামূল্যের ইন্টারনেট প্রদান করে গ্রাহকদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, যেন ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত এলাকায় গ্রাহকেরা তাদের পরিবারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে। 

সাইক্লোন রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার গ্রাহকরা এসএমএস’র মাধ্যমে অফার, এর সুবিধা ও অফার চালু করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। বিনামূল্যের মিনিট ও ইন্টারনেট অফার ছাড়াও, বাংলালিংক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তা করার জন্য আরও নানান উদ্যোগ গ্রহণ করছে, যেমন ২৮শে মে, ২০২৪ থেকে পরবর্তী ৩ দিনের জন্য সেবাপ্রাপ্তির জন্য উপযুক্ত গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিনামূল্যে সিম প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। ঘূর্ণিঝড়  রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ অফারগুলো বাংলালিংকের ডেডিকেটেড ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গ্রহণ করা যাবে। এ ছাড়াও অপারেটরটি গ্রাহকদের জন্য জরুরি মোবাইল ব্যাল্যান্স রিচার্জ ও ঋণ সুবিধা প্রদান অব্যাহত রাখবে। 

বাংলালিংক-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার উপাঙ্গ দত্ত বলেন, বাংলালিংক সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সক্রিয়ভাবে সাইক্লোন রেমাল আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই কঠিন সময়ে মানুষের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করতে বাংলালিংক বিনামূল্যে টক টাইম ও মোবাইল ডাটা প্যাকেজ দিচ্ছে। সংকটের এই সময়ে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে পারস্পরিক যোগাযোগের সম্ভাব্য বাধাগুলো দূর করে অবিচলভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের লক্ষ্য। চলমান এই দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমেও বাংলালিংক সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে, যা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। তাদের এ ধরনের অফারের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহিউদ্দিন নামের একজন লিখেছেন- বিপর্যস্ত ১৭ জেলা ছাড়াও দেশের প্রায় ৩৫টি জেলায় নেটওয়ার্ক নেই। অথচ গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক বিজ্ঞাপন দিচ্ছে ইন্টারনেট ও টকটাইম ফ্রি দিচ্ছে! ইয়ার্কির একটা লিমিট থাকা উচিত। 

খোরশেদ আলম পলাম নামের আরেকজন লিখেছেন- আজকের এই সময়ে আমরা সাধারণ মানুষগুলো বাটপার দালাল দুর্নীতিবাজ ভাঁওতাবাজিদের কাছে জিম্মি। দেশটা তাদের আর আমরা হচ্ছি রোহিঙ্গা। রেমালের তাণ্ডবে হাতিয়া, ভোলা পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, সাতক্ষীরা, বরগুনাসহ গরিব ও অসহায় মানুষের কান্না ও হাহাকারে আজ বাটপার দালালরা তামাশা ও মজা করছে। এমডি এ হালিম লিখেছেন- ইয়ার্কি আর ফাইজলামির কোনো লিমিট থাকে না। থাকলে চার্জও থাকতো। 

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিদ্যুৎ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঝড়ে মোট ৩ কোটি ৩ লাখ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১ কোটি ৩১ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে এবং ১ কোটি ৭২ লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বুধবার (২৯ মে) সকালের মধ্যে ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি লাইন চালু করার মাধ্যমে ৮০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে এবং মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ৬০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ পাবেন।

বাকি ২০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহককে তাদের সেবা বন্ধ থাকায় অপেক্ষা করতে হবে এবং তাদের মিটার মেরামতের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, রিমালের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিকারে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) তার ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন এলাকায় এবং পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডব্লিউজেডপিডিসি) নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনা করা এলাকায় সরেজমিন তদারকির মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ৩৩টি কেভি ফিডারের মধ্যে মোট ৭৬৬টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৪৫৫টি মেরামত ও ৩১১টি এখনো মেরামত করা হয়নি। এছাড়া ৩৩/১১ কেভির ১ হাজার ১০৫টি উপকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫৪টি মেরামত করা হয়েছে এবং ৪৫১টি এখনো মেরামত করা হয়নি।

১১টি কেভি ফিডারের মধ্যে মোট ৬ হাজার ২৩৫টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার ৩৮৪টি মেরামত করা হয়েছে এবং বাকি ৩ হাজার ৮৫১টি মেরামত বাকি রয়েছে। মোট ৩ হাজার ৮৩৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে, ২ হাজার ৫৬৭টি পুনস্থাপন করা হয়েছে এবং বাকি ১ হাজার ২৬৬টি এখনো পুনস্থাপন করা হয়নি। ২ হাজার ৮১৮টি বিতরণ ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার মধ্যে ১ হাজার ৬৯৬টি সচল করা হয়েছে এবং বাকি ১ হাজার ১২২টি এখনো সচল করা হয়নি।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ১০৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।

বিআরইবির ঠিকাদারসহ ৩০ হাজারের বেশি জনবল মাঠে কাজ করছে।

ডব্লিউজেডপিডিসির মোট গ্রাহক ১৫ লাখ ৪৮ হাজার, যার মধ্যে ১৪ লাখ ৩ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার গ্রাহককে এখনো বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহ শুরু করা হয়নি। আর রেমালে ডব্লিউজেডপিডিসির ৫ কোটি ৭ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
Toto Gacor
bacan4d
bacansport login
slot gacor
pasaran togel resmi
bacan4d
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d toto
Slot Casino
bacan4d toto
slot gacor
bacan4d
bacan4d
Slot Toto
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto slot
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
Slot Gacor
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports
bacansports
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d
slot gacor
pasaran togel resmi
situs toto
bacan4d login
pasaran togel
pasaran togel
situs toto
bacan4d
bacan4d gacor
bacan4d slot
bacan4d rtp
bacan4d rtp
bacan4d slot gacor
toto slot
situs toto
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor