লোকসভার ডেপুটি স্পিকার পদে চমক দিতে চায় কংগ্রেস
ভারতের লোকসভায় এখনও ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ পদে নির্বাচন কবে হবে, তাও জানা যায়নি। বিষয়টি স্পিকার এবং সরকারের হাতে। কিন্তু এই নির্বাচনকে ঘিরে বড় রাজনৈতিক চমক দিতে পারে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া।
লোকসভার স্পিকার পদের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে থেমে না গিয়ে ডেপুটি স্পিকার পদে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ সেরেছে ইন্ডিয়া জোট। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছেন জোটের প্রধান দল কংগ্রেস, তৃণমূল ও সমাজবাদী পার্টির তিন নেতা– রাহুল গান্ধী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অখিলেশ যাদব।
দিল্লিতে বৈঠক করে তারা ঠিক করেছেন, ডেপুটি স্পিকার বাছাই করার ক্ষেত্রে ‘আউট অব দ্য বক্স’ আইডিয়া প্রয়োগ করা হবে। তাদের মনোনীত প্রার্থী হতে পারেন ফৈজাবাদের সাংসদ অবধেশ প্রসাদ। তৃণমূল সূত্রের দাবি, এই নামটির পরামর্শ এসেছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। এ ছাড়া দুই দিন আগে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে অবধেশকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন অখিলেশ।
ফৈজাবাদের দু’বারের সাংসদ বিজেপির লাল্লু সিংহকে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়ে কার্যত ইতিহাস গড়েছেন তিনি। বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদির রামমন্দিরকে সামনে রেখে হিন্দুত্বের জোয়ারকে উত্তরপ্রদেশের আটবারের বিধায়ক অবধেশ রুদ্ধ করে দিয়েছেন বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। অযোধ্যা যে লোকসভার অন্তর্গত, সেই ফৈজাবাদ কেন্দ্রেই সমাজবাদী পার্টির এই দলিত প্রার্থীর কাছে পরাজয় প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বিজেপিকে। আর সেই অস্বস্তিকে আরও বাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন ইন্ডিয়ার নেতারা। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী যাঁকেই করা হোক, লোকসভায় সংখ্যার হিসাবে পরাজয় অনিবার্য। কিন্তু তা এখানে বিবেচ্য নয়।
অবধেশকে দাঁড় করিয়ে একটি জোরালো বার্তা দেওয়ার কথাই ভাবছেন বিরোধীরা।
প্রথমত, তাঁকে কেন্দ্র করে অযোধ্যায় বিজেপির লজ্জাজনক পরাজয়কে জনসমক্ষে আবার তুলে ধরার সুযোগ পাওয়া যাবে। বারবার বিষয়টি নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে সরব হবেন কংগ্রেস, এসপি, তৃণমূলসহ বিরোধী দলগুলোর নেতারা। পাশাপাশি ৭৭ বছর বয়সী দলিতদের মধ্যে পাসি সম্প্রদায়ভুক্ত অবধেশকে দাঁড় করিয়ে সমাজের এই অত্যন্ত পিছিয়ে থাকা অংশের প্রতিও বিশেষ বার্তা দিতে চাইছেন বিরোধীরা।
অবধেশের রাজনীতিতে হাতেখড়ি উত্তরপ্রদেশের কৃষক নেতা তথা প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংহের হাত ধরে। তিনি বলেছিলেন, আমি দলিত ভাইবোনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছি। দলিত সম্প্রদায় গতবারে বিজেপিকে সমর্থন করেছিল। তা ছাড়া ওবিসি এবং সংখ্যালঘু ভোটও আমরা পেয়েছি। ফলে তাঁকে দাঁড় করিয়ে এই সম্প্রদায়গুলোর প্রতি নির্দিষ্ট সমর্থক বার্তা দিতে পারবে বলে মনে করছেন ইন্ডিয়া জোটের নেতারা।