USA

শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সেই ব্যক্তি বাঁচলেন না

মানব শরীরে প্রথমবারের মতো সফলভাবে শুকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের দুই মাস পর সেই রোগী মারা গেছেন।

এ বছরের মার্চ মাসে রিচার্ড ‘রিক’ স্লেম্যান নামের ওই ব্যক্তির শরীরে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত শুকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করেন। সে সময় চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, এই কিডনি অন্তত দুই বছর স্থায়ী হবে। তবে দুই মাসও বাঁচলেন না স্লেম্যান। রিকের পবরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিবৃততে তারা জানায়, কিডনি বিকল হয়েই যে তিনি মারা গেছেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের সার্জন ওয়েইমাউথ।

এর আগেও স্বল্প সময়ের জন্য মানব শরীরে শুকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। রিকের আগে ২ জনের শরীরে শুকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। তারা দুজনও কয়েক মাসের মধ্যেই মারা যান।

নিজের কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর ২০১৮ সালে প্রথম শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করেন রিক স্লেম্যান। তবে গত বছর ফের সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাকে ডায়ালাইসে ফিরতে হয়। কিন্তু ডায়ালাইসিসেও তার শরীরে জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসকরা তাকে ‘শেষ ভরসা’ শুকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।

স্লেম্যানকে বাঁচাতে চিকিৎসকদের আন্তরিকতার কোনো কমতি ছিল না জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে তার পরিবার।

এক বিবৃতিতে তারা জানান, চিকিৎসকদের প্রচেষ্টার কারণেই আমরা রিকের সঙ্গে আরও ৭ সপ্তাহ সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছি। জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টের কারণেই শেষ সময়ে তার সঙ্গে কাটানো স্মৃতিগুলো আমাদের হৃদয়ে অমলিন হয়ে থাকবে।

আধুনিক এ চিকিৎসা পদ্ধতি ভবিষ্যতে হাজারো মানুষকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাবে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই রিক নিজের শরীরে শুকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করান।

অন্য প্রাণীর দেহকোষ, টিস্যু বা অঙ্গ নিয়ে মানব শরীরে লাগিয়ে রোগ নিরাময় প্রক্রিয়াকে জেনোট্রান্সপ্ল্যান্ট বলা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের এ ধরনের বহু প্রচেষ্টা অতীতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ মানব শরীরে অন্য প্রাণীর দেহাংশ সংযুক্ত করলেই শরীর তা আপন করে নিতে পারে না এবং আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য রোগ-জীবাণুর মতো সেগুলোকেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেরে ফেলতে চায়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button