Bangladesh

সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না: তারেক রহমান

সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করায় তারা আস্থা রাখতে চাচ্ছে, আবার চাচ্ছেও না।’

রাজধানীর রমনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ মিলনায়তনে শনিবার বিকেলে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (জেটেব) তৃতীয় জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এই কথা বলেন।

সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘একটি দেশের রাজনীতি যদি রুগ্ন হয়, তাহলে অর্থনীতিও রুগ্ন হতে বাধ্য। পতিত স্বৈরাচারের আমলে আমরা দেখেছি কয়েকটি মেগাপ্রজেক্ট, উন্নয়নের নামে কীভাবে এসব মেগাপ্রজেক্ট করা হয়। এটা কিন্তু উন্নয়নের আসল চিত্র নয়! অর্থনীতি থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সব কিছুই বেরিয়ে আসছে, অর্থাৎ বাংলাদেশই এর বড় প্রমাণ, একটি দেশের অর্থনীতি কীভাবে রুগ্ন হয়ে যায়।’

‘জুলাই-আগস্টের ছাত্রজনতার গণআন্দোলনে দুই হাজার মানুষ হত্যা এবং প্রায় ৩০ হাজার লোককে নির্মমভাবে আহত করে স্বৈরাচার পলিয়েছে। আহতদের মধ্যে কারও অঙ্গহানি হয়েছে বা কারও চোখ নষ্ট হয়েছে। আমি আগেও বলেছি, সংস্কারকাজ করতে গিয়ে অগ্রাধিকার সেটিংস যদি ভুল হয় তাহলে জনগণের কাছে সরকারের অদক্ষতা হিসেবেই সেটা বিবেচিত হবে। দুদিন আগে আহতরা হাসপাতাল থেকে যেভাবে বের হয়ে এসেছেন, সেটা আমাদের বিবেকবান প্রত্যেকটা মানুষের জন্যই লজ্জার বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে আহতদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কেন অগ্রাধিকার লিস্টে নেই, থাকলেও কত নম্বরে ছিল,’ বলেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকায় মানুষ কষ্টের মধ্যে রয়েছে, দুর্বিসহ অবস্থায় জীবন যাপন করছে। কিন্তু এ বিষয়টি অগ্রাধিকার তালিকায় কত নম্বরে আছে তাও স্পষ্ট নয়। স্বৈরাচার পালানোর পর একটি বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বরতী সরকার। মাফিয়া সরকারের তৈরি করা জঞ্জাল তিন মাসে দূর করা সম্ভব নয়। আবার তিন মাস পরে সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক বা অন্যায্যও নয়। তবে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখতে পেলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না। জনগণের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করায় তারা আস্থা রাখতে চাচ্ছে, আবার চাচ্ছেও না।’

তারেক রহমান বলেন, ‘গত ১৫ বছর স্বৈরাচারী সরকার দেশকে আমদানি নির্ভর, পরনির্ভর ও ঋণনির্ভর করে গেছে। এই অবস্থা থেকে দেশকে বের করে এনে যে কোনো উপায়ে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল খাতকে আরও লাভজনক ও বিশ্ববাজারে এই দুটি খাতের চাহিদা তৈরিতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করছে বিএনপি। এ ছাড়া, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিশেষত এসএমই খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়টিও বিএনপির বিবেচনায় রয়েছে।’

বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই ৩১ দফা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের উন্নয়নে ঐতিহাসিক সনদ বলে আমরা মনে করি। ঘোষিত এই ৩১ দফা বাস্তবায়নে মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক শিক্ষার ওপরও কিন্তু জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, জনসংখ্যা কোনো অভিশাপ নয় বরং এই জনসংখ্যাকে যদি মানবসম্পদে রূপান্তর করা যায়, তাহলে দেশের উন্নয়নে এটাই বড় শক্তি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে দক্ষ শ্রমিকের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা যদি এই জনসংখ্যাকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে বিশ্ববাজারে আমাদের শ্রম শক্তির চাহিদাও বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, আন্তর্বতী সরকার জনগনের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। আমরা দেখেছি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণ আশা করছে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ পরিবেশে ভোট দিতে সক্ষম হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে। জনগণ যখন সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারবে তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে, তখন জনগণের সঙ্গে সম্পর্কটা দৃঢ় হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার কাজ করছে, আমরা তাদের সমর্থন করি। প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। আমাদের সতর্ক থেকে কাজ করতে হবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। এদিন প্রত্যক্ষ গোপন ভোটের মাধ্যমে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন ফখরুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এ কে এম রুহুল আমিন আকন্দ।

জেটেব এর সভাপতি ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু ও নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d