হুঁশিয়ারি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হলে সর্বাত্মক যুদ্ধ
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো রকম হামলা হলে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। শুক্রবার কাতার সফরকালে আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে কোনো হামলা করে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে এবং সুচিন্তিত জবাব দেয়া হবে।
আরাঘচি সতর্ক করে বলেন যে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলা হলে তা হবে ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর অন্যতম। উল্লেখ্য, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অনুমতি দিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নেতানিয়াহুকে তিনি হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ করেছেন। সেখানে দুই নেতার বৈঠকে এমন নির্দেশনা আসতে পারে। একই সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে আরো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন ট্রাম্প। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ইরানে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি কাতারে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে দোহায় সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শুক্রবার প্রচারিত সাক্ষাৎকারে আরাঘচি বলেন,গাজায় যুদ্ধবিরতিতে কাতার মধ্যস্থতা করেছে। এ জন্য তাদের প্রশংসা করি। আমি আশা করি অন্য সব ইস্যুর সমাধান হবে।
ওদিকে কাতারে অবস্থানকালে গাজার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। এরপর বলেছেন, ইসরাইলের বিধ্বংসী যুদ্ধের পরও গাজায় ফিলিস্তিনিরা জয় পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সব হত্যাকা- ও ধ্বংসযজ্ঞ বিশ্ববাসী দেখেছে। ফিলিস্তিনি জনতা তাদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সমুন্নত রেখেছেন। আমি মনে করি এটাই হলো বিজয়। হামাসকে নিঃশেষ করে দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ইসরাইলি বাহিনী তাদের সর্বশক্তি ব্যবহার করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা হামাসের সঙ্গে বসতে এবং সমঝোতা করতে বাধ্য হয়েছে। এটাই হামাসের বিজয়।
আরাঘচি বলেন, সিরিয়ায় সমাজের সব পক্ষের জনগণের অংশগ্রহণ আছে, এমন একটি সরকার গঠনকে সমর্থন করে ইরান। তিনি আরও বলেন, ইরানের লক্ষ্য হলো সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা এবং দেশটিতে ঐক্য বজায় রাখা। সিরিয়ার জনগণের বেছে নেয়া এবং সমর্থিত যেকোনো সরকারকে আমরা উৎসাহিত করি। সিরিয়ার জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা প্রত্যাশা করি আমরা। সীমাহীন উত্তেজনা ও জাতিগত সহিংসতার উৎসভূমি হিসেবে আমরা সিরিয়াকে দেখতে চাই না। এসব উত্তেজনা ও সংঘাত অব্যাহত থাকলে সেখানে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ স্বর্গ হয়ে উঠবে। সিরিয়ার অস্থিতিশীলতা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে।