Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

হেভিওয়েটদের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে এনসিপিকে

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) শীর্ষ নেতাদের কঠিন লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে। কারণ তাদের নির্বাচনি আসনগুলোতে বিএনপির অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে। আবার জামায়াতে ইসলামীও শক্ত প্রার্থীর মনোনয়ন এক রকম চূড়ান্ত করে ফেলেছে। সেক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এনসিপির শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনে জিতে আসা নিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষ করে ভোটের মাঠে গণ-অভ্যুত্থানের আবেগ ও সমর্থনের ঝড় তুলতে ব্যর্থ হলে ফলাফলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। নবসৃষ্ট এনসিপির বিভিন্ন দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে যুগান্তরের কাছে এমন মন্তব্য করেন কয়েকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনি মাঠ গোছাতে তৎপর রাজনৈতিক দলগুলো। শুধু তাই নয়, দলগুলোর শীর্ষ নেতারা কে কোন আসন থেকে লড়বেন সেটিও প্রায় নির্ধারণ করে ফেলেছেন। নির্বাচনি প্রচারণাও শুরু করেছেন। তবে অনেকের আগ্রহ গণ-অভ্যুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন দল এনসিপিকে নিয়ে। দলটির নেতারাও ইতোমধ্যে নিজ এলাকায় জোরেশোরে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সূত্রমতে, এনসিপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, সারোয়ার তুষার, ডা. তাসনিম জারা, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও আবদুল হান্নান মাসউদ। তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে লড়তে হবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর হেভিওয়েট প্রার্থীদের বিপক্ষে। বিশেষ করে এনসিপির শীর্ষ দশ নেতার আসনে বিএনপি থেকে সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, কেন্দ্রীয় নেতা এমএ কাইয়ুম, সাবেক এমপি প্রয়াত রহিম উদ্দিন ভরসার ছেলে মোহাম্মদ এমদাদুল হক ভরসা, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে ব্যারিস্টার মুহম্মদ নওশাদ জমির, তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের মতো ব্যাপক জনপ্রিয় প্রার্থীরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারাও। এ অবস্থায় এনসিপির নেতারা নিজ আসনে সাধারণ ভোটারদের কীভাবে-কতটুকু মন জয় করতে পারবেন, তার ওপর নির্ভর করবে ভোটের ফলাফল। অবশ্য এ বিষয়ে ভোটের আগে মাঠের সত্যিকার অবস্থা জানতে ভোটার ও উৎসুক জনতাকে নির্বাচনি প্রচারণা পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতেই হবে।

এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, এনসিপির সম্ভাবনা তৈরি হবে নতুন দল হিসাবে ও দলের অবস্থানগতভাবে, প্রার্থীগতভাবে নয়। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দলটি পুরোনো ধারার রাজনৈতিক দলের চেয়ে নতুন কী ধারা তৈরি করল অথবা ভবিষ্যতের জন্য নতুন কী প্রতিশ্রুতি দিতে পারল-তার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। এছাড়া মাঠপর্যায়ে এনসিপির সাংগঠনিক ভিত্তি একটা বড় ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করবে। শুধু ফেসবুক স্ট্যাটাস আর সংবাদ সম্মেলন করে ভোটের রাজনীতিতে সফল হওয়া যাবে না। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বের সফলতা আর ভোটের রাজনীতি এক বিষয় নয়। ভোট রাজনীতি বড় কঠিন বিষয়। ভোটের হিসাব-নিকাশ হয় ভিন্নভাবে। এছাড়া আমাদের দেশে এখনো শুধু প্রার্থীকে দেখে ভোট দেওয়ার সংস্কৃতি তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, এনসিপির প্রার্থীদের বড় দলগুলোর প্রার্থীদের মতো হলে হবে না। তাদের একেবারে দুর্নীতিমুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু যদি তাদের উত্থাপিত অনেক প্রশ্নের সঠিক জবাব জনগণ খুঁজে না পায় সেক্ষেত্রে ভোটের প্রচারণা ও ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আবার জোট করলেও তাদের জয়ের নিশ্চয়তা নাও থাকতে পারে। যে আসনে যে দলের প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি সেখানে সেই দলের হয়ে নির্বাচন করলে জয় নিশ্চিত হতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ওই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে অঘটন ঘটে যেতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ আসনে (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ২১, ২২, ২৩, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২) নির্বাচন করতে পারেন। আসনটি রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকা হিসাবে বেশি পরিচিত। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ ড. এমএ কাইয়ুম। জামায়াতের প্রার্থী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান। ফলে এই আসনে এনসিপির প্রার্থীকে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপক্ষেই লড়তে হবে। এমএ কাইয়ুম নিজ এলাকায় জনপ্রিয় ও একজন প্রভাবশালী নেতা। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন কাইয়ুমের সহধর্মিণী শামীম আরা বেগম।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নির্বাচনি আসন রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া)। তিনি ইতোমধ্যে নিজ নির্বাচনি এলাকায় সময় দিচ্ছেন। নানা সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ আসনে সাবেক এমপি প্রয়াত রহিম উদ্দিন ভরসার ছেলে মোহাম্মদ এমদাদুল হক ভরসা বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন। হেভিওয়েট এই প্রার্থী কাউনিয়া উপজেলার সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তাকে প্রার্থী করেছিল বিএনপি। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী এটিএম আজম খান। তিনি রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির। জামায়াতের এ নেতাও স্থানীয় পর্যায়ে বেশ প্রভাবশালী ও জনপ্রিয়। সুতরাং এ আসনে এনসিপির সদস্যসচিবকে বিএনপি ও জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করতে হবে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ভোলা-১ আসনে (সদর) নির্বাচন করতে পারেন। যদিও তার প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে দল থেকে এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। ভোলা জেলার সংগঠক মো. মাকসুদুর রহমান বুধবার যুগান্তরকে জানান, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’ তবে গেল কয়েক মাসে কেন্দ্রীয় নেতা সামান্তা শারমিন কয়েক দফা জেলার সব উপজেলায় সাংগঠনিক সফর করেছেন। তার নামে ঈদে ভোলাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়। ফলে অনেকে মনে করছেন তিনি এখানে প্রার্থী হচ্ছেন।

এদিকে বিএনপি থেকে ২০১৮ সালে এ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারফ হোসেন শাজাহানের ভাই গোলাম নবী আলমগীর। আগামী নির্বাচনের জন্য তিনি ইতোমধ্যে গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিএনপি থেকে আরও মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হায়দার আলী লেলিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ। তবে তরুণ নেতা হায়দার আলী লেলিন মনোনয়ন দৌড়ে অনেক এগিয়ে আছেন। আবার বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ এর আগে বিএনপি জোট থেকে এ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি শক্তিশালী প্রার্থী। জামায়াতের প্রার্থী রয়েছেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম। গেল ১০ মাস ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দলটির সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অতএব বোঝাই যাচ্ছে, এখানে এনসিপির প্রার্থীকে কাদের সঙ্গে নির্বাচনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ঢাকা-১৪ আসনের (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ এবং সাভার উপজেলার কাউনিয়া ইউনিয়ন) সম্ভাব্য প্রার্থী। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন। তরুণ উচ্চশিক্ষিত এ নেতা নিজ নির্বাচনি এলাকায় অনেক আগে থেকেই কাজ করছেন। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাশেম আরমান। তিনি জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা প্রয়াত মীর কাসেম আলীর ছেলে। তরুণ এই নেতা দীর্ঘ বছর গুম ছিলেন। এনসিপির প্রার্থীকে মাহদী আমিনের মতো জনপ্রিয় নেতার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার নরসিংদী-২ আসনের (পলাশ ও সদর উপজেলার আমদিয়া, পাঁচদোনা ও মেহেরপাগা ইউনিয়ন) সম্ভাব্য প্রার্থী। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তুমুল জনপ্রিয় এ বর্ষীয়ান নেতা সাবেক এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আমজাদ হোসাইন। এনসিপির প্রার্থীকে ড. মঈন খানের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। স্থানীয় এক নেতা জানান, এ আসনে মঈন খানের যে জনপ্রিয়তা, তাতে অন্যদের জামানত থাকবে কিনা সন্দেহ আছে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা ঢাকা-১৭ আসনে (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ১৫, ১৮, ১৯, ২০ এবং ক্যান্টনমেন্ট এলাকা) নির্বাচন করতে পারেন। আসনটি রাজধানীর গুলশান-বনানী-ক্যান্টনমেন্ট এলাকা হিসাবে পরিচিত। ঢাকার আসনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপিরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। এ আসনে গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ। আসনটিতে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগরী মজলিশে শূরা সদস্য ডা. এসএম খালিদুজ্জামান। তবে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে একেবারে শেষদিকে বড় চমক দেখাতে পারে।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ আসনের (সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী) সম্ভাব্য প্রার্থী। তিনি নিজ এলাকায় অনেক আগে থেকে কাজ করছেন। আসনটি মূলত বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এ আসনে সারজিসকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হতেই হবে। এখানে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার মুহম্মদ নওশাদ জমির। তিনি সাবেক মন্ত্রী, স্পিকার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে। আসনটিতে এ পরিবারের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও জেলা আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসেন। স্থানীয়রা জানান, ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের মতো প্রার্থীর কাছে সারজিস আলম কতটা সুবিধা করতে পারবেন তা এখন দেখার বিষয়।

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ আসনে (দেবিদ্বার) নির্বাচন করতে পারেন। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে বিএনপি-এনসিপি এবং জামায়াতের মধ্যে ত্রিমুখী ভোটের লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত হলেও ভোটের মাঠে দলটি জনপ্রিয়। সাবেক এমপি মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক এমএ আউয়াল খান বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম। কিন্তু আসনটিতে অনেকটা ধূমকেতুর মতো সামনে এসেছেন জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া হাসনাত আবদুল্লাহ। তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশ এখন তার অনুসারী। ৫ আগস্টের পর তিনি এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে একটা সেতুবন্ধ তৈরি করেছেন।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার বলেন, এ আসনে মুন্সি পরিবারের ঐক্যে জটিল সমীকরণ সৃষ্টি হবে। কারণ এখানে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এ পরিবারের হাতে। অর্থাৎ মুন্সি পরিবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেদিকে মোড় নেবে সেদিকেই পাল্লা ভারী হবে। তাছাড়া আসনটি অনেক আগে থেকে বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এখানে ভোটের হিসাব-নিকাশে বিএনপির পরেই আওয়ামী লীগের অবস্থান। এখন প্রশ্ন হলো-নির্বাচনটা কোন ক্রাইটেরিয়ায় হবে? এখানে বিএনপির মনোনয়ন কে পাবেন? কাদের সঙ্গে জামায়াতের ঐক্য হবে? নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হলে এবং ভোটের দিনক্ষণ এগিয়ে এলেই এসব সমীকরণের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী চাঁদপুর-৫ আসনে (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থীসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের নির্বাচনি তৎপরতা লক্ষণীয়। এক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা দৃশ্যমান। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন ও জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার কামাল উদ্দিন। তবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা আবুল হোসাইন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যুগান্তরকে বলেন, আমরা এখন বিচার এবং সংস্কারটা নিয়ে ফোকাসে আছি। যখনই বিষয়গুলোর ফয়সালা হবে তখন আমরা ওটাতে (নির্বাচনে) যাব। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমার জন্মস্থান ওইখানে (শাহরাস্তি) সেহেতু মানুষের সঙ্গে একটা সংযোগ অবশ্যই ঘটবে। সেই হিসাবে মানুষ যদি চায় তাহলে একটা আশা থাকতে পারে। আমরা দলীয়ভাবে এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। বিচার ও সংস্কার দুইটা বিষয় কমপ্লিট হলে বা দেখার পরে দলীয়ভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেব।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ আসনে (হাতিয়া) সম্ভাব্য প্রার্থী। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে শীর্ষে আছেন এক সময়ের জনপ্রিয় সংসদ-সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক আজিম। তিনি ১৯৯৬ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পুনরায় নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি সংসদে একমাত্র স্বতন্ত্র সদস্য হিসাবে নজর কাড়েন। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। এছাড়া হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী তানভীর উদ্দিন রাজিব, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ মুহাম্মদ মাহফুজুল হক। তিনি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য এবং শাহবাগ পশ্চিম থানার আমির।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto