International

২২ বছর পর তালেবানের ওপর থেকে সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার রাশিয়ার

রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের শাসকদল তালেবানের ওপর থেকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ তকমা প্রত্যাহার করেছেন। ফলে এখন থেকে রাশিয়ায় তালেবান বৈধভাবে কার্যক্রম চালাতে পারবে।

চার বছর আগে দ্বিতীয়বার আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণকারী তালেবানকে ২০০৩ সাল থেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রাশিয়া। তাই এত দিন পর্যন্ত গোষ্ঠীটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা রাশিয়ার আইন অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর বাহিনী প্রায় দুই দশক অবস্থানের পর ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে তালেবান। এরপর থেকে তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত মধ্য এশিয়ার দেশটিকে স্থিতিশীল করতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলারও আহ্বান জানাতে থাকেন রাশিয়ার কর্মকর্তারা।

 ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত চার বছরে তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা একাধিকবার রাশিয়া সফর করেছেন। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, আফগানিস্তানের ‘বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা প্রয়োজনীয়’। কারণ আফগানিস্তানে বর্তমানে তাঁরাই ক্ষমতায়।

২০২৪ সালের মে মাসে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিচার মন্ত্রণালয় তালেবানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়। চলতি মাসের শুরুতে প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় সুপ্রিম কোর্টে প্রস্তাব জমা দেয়। গতকাল প্রস্তাবটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানান সুপ্রিম কোর্ট। 

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত প্রায় এক দশক আফগানিস্তানে তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার সেনা মোতায়েন ছিল। তখন তাঁরা দেশটিতে চলমান গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অর্থাৎ তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাতময় অতীত রয়েছে। তবে মস্কোর সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার তালেবানকে আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্য করতে সহায়তা করবে।

গত কয়েক বছরে এশিয়ার অন্যান্য দেশও তালেবানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে শুরু করেছে। ২০২৩ সালে কাজাখস্তান তালেবানের ওপর থেকে সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার করে। পরের বছর একই পথে হাঁটে কিরগিজস্তান। 

তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। নারীদের প্রতি তালেবানের মনোভাব আন্তর্জাতিক মহলে চরমভাবে সমালোচিত হয়ে আসছে।

স্বীকৃতি না দিলেও কাবুলে বর্তমানে চীন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং ইরানের দূতাবাস রয়েছে। তালেবানের অধীনে ২০২৩ সালে আফগানিস্তানে প্রথম রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে চীন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto