Bangladesh

আ.লীগের মার্কিন দুশ্চিন্তা কাটছে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া দুশ্চিন্তা দূর হতে শুরু করেছে। নির্বাচনের আগে একদিকে বিএনপি ও তার মিত্রদের আন্দোলন, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতা আওয়ামী লীগকে চাপে ফেলে দিয়েছিল। তবে নির্বাচন করে ফেলার পর দলটি সেই চাপ থেকে বেরিয়ে এসেছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করেন। তাদের দাবি, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগবিরোধী যে অবস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, এখন সেখান থেকে সরে এসেছে।

ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক দেশ রূপান্তরকে বলেন, তাদের মধ্যে এখন আর আমেরিকা-ভীতি নেই। নেই কোনো নিষেধাজ্ঞা-ভীতিও।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েক নেতা দাবি করেন, চলতি বছর সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠবে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আগামী পাঁচ বছর যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করেই পররাষ্ট্র কৌশল সাজিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। নির্বাচনের আগের অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রেরও নেই, সরকারেরও নেই।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভবিষ্যতে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে।’

এদিকে আগামী শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার ঢাকা সফরে আসছেন। আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদের সরকার গঠনের পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কর্মকর্তার প্রথম সফর এটি। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সফরের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি অত্যন্ত গুরুত্ববহ এবং তাদের কর্মকর্তাদের সফর আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর ও বিস্তৃত করবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা আর এখনকার তৎপরতা মিলিয়ে দেখলেই অনেক কিছু বোঝা যাবে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজের শক্তিতে পথ চলে। অন্যের কাঁধে ভর করে নয়।’

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়। নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে সংলাপে বসার আহ্বান জানায়। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা জানিয়ে দেশটি প্রায় দুই বছর ধরে তৎপর ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের একাধিক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। তারা প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে। তবে আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন না করার বিষয়ে অনড় থাকে। অন্যদিকে বিএনপিও নিরপেক্ষ সরকারের দাবি ছেড়ে নির্বাচনে আসতে রাজি হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের এসব তৎপরতার মধ্যে গত বছর ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে এবং জুলাই মাসে তারা এ ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানায়। তখন আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে এক ধরনের ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। আরও নিষেধাজ্ঞা আসবে, এমন গুজবও ছড়িয়ে পড়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র শ্রমনীতি ঘোষণা করে। ওই শ্রমনীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশের একজন পোশাকশ্রমিক নেত্রীর কথা উল্লেখ করা হয়। এর আগে গাজীপুর, সাভার এলাকার পোশাক কারখানাগুলোতে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে এবং তা সহিংস রূপ নেয়। নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান দিনে দিনে পরিষ্কার হতে থাকে। দুর্নীতি দমন ও মানবাধিকার ইস্যু সামনে নিয়ে আসে দেশটি। এ ছাড়া জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৎপরতা সরকারকে বেশ চাপে ফেলে দেয়। এমন আলোচনাও শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সরাতে চায়। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের একাধিক মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠেন।

এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে, এমন ধারণা তৈরি হয় দেশের রাজনৈতিক মহলে। তবে নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপেক্ষ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নিরপেক্ষ করতে পারলেও যুক্তরাষ্ট্রকে বশে আনতে ব্যর্থ হন। পরে দেশটিকে পাশে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে উল্টো চাপে ফেলার কৌশল গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই কৌশল কাজেও আসে। অনেকটাই নীরব হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র।

আমেরিকা-ভীতি সঙ্গী করে যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে মনোযোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সব ঠিক রেখে শেষ পর্যন্ত বড় কোনো অভিযোগ ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করে গত ১১ জানুয়ারি নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হওয়া আওয়ামী লীগ। সরকার গঠনের প্রথম দিন থেকেই বিদেশি সম্পর্ক গুরুত্ব দিয়ে যাত্রা শুরু করে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও পরিবর্তন করেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মূলত নিষেধাজ্ঞামুক্ত থাকতে চেয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই চাওয়া অনুযায়ী সফলও হয়েছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার পর ভারত, রাশিয়া ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস মন্ত্রিসভার শপথের দিন বঙ্গভবনে উপস্থিত ছিলেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সমর্থন দেওয়ার কথা জানান। পাশাপাশি একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো-প্যাসিফিক) অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন স্বপ্নপূরণে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় ঢাকার সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় জানান।

এ বিষয় বিবেচনায় আওয়ামী লীগের সম্পাদকম-লীর এক সদস্য কাছে দাবি করেন, নির্বাচন হওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্র তার তৎপরতার গতি কমিয়ে দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার চিন্তাভাবনা থেকেও সরে এসেছে। ধীরগতি বা সময় নেওয়ার ফলে সরকার সুযোগ পায়। বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়া-নেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হবে। এ বছরটা এভাবেই চালিয়ে যেতে চায় সরকার।

আগামী মার্চে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র আহ্বানের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। গত বছর এ কাজে মার্কিন জ্বালানি কোম্পানি এক্সন মবিল ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয় সরকারকে। কোম্পানিটিকে মার্চের দরপত্রে অংশ নিতে বলা হয়েছে। তবে মার্কিন কোম্পানি শেভরনও দরপত্রে অংশ নেবে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশে এ কোম্পানির পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ আসে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা বলেন, পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথমেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার কৌশল গ্রহণ করে। বিশেষ করে এ জোটভুক্ত দেশ জার্মানি ও ফ্রান্সকে হাতে রাখতে কৌশলী হয়ে ওঠে। কারণ ইইউতে এ দুটি দেশ শক্তিশালী ও প্রভাবশালী।

সরকারের এক প্রতিমন্ত্রী বলেন, জার্মানি ও ফ্রান্স অনেক মুশকিলের আসান করবে। পাশাপাশি চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কও দাবার ঘুঁটি করে রাখা হবে। অন্যদিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত আওয়ামী লীগ সরকারে আস্থাশীল।

তিনি মনে করছেন, পররাষ্ট্রনীতির নানা কৌশল চলতি বছর সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করে তুলবে। বিশেষ করে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়বে এবং তা দৃশ্যমান হবে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। শেখ হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুক্ত বন্ধে উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।

যদিও প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মন্টিটস্কি বলেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারসাম্যের নীতি বজায় রাখবে, এটাই আশা করে রাশিয়া।

জেলেনস্কির সঙ্গে এ বৈঠক ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগের অংশ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কাজ করেন আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভবিষ্যতে জার্মানি ও ফ্রান্সের পরোক্ষ ভূমিকা থাকবে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেও নির্বাচনের আগের অবস্থান থেকে সরে আসতে শুরু করেছে। বাইডেনের চিঠি তারই ইঙ্গিত বহন করে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d