উপকূলে রিমালের হানা: নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুজনের মৃত্যু
► জলোচ্ছ্বাসের কারণে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে ► অনেক বাঁধ ভেঙে গেছে ► আট লাখের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে
বঙ্গোপসাগরের বুকে সৃষ্টির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় রিমাল গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় দেশের উপকূলে আঘাত হেনেছে। এ সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।
ঝড়ের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলজুড়ে বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে গেছে এবং বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
সাতক্ষীরা ও পটুয়াখালীতে একজন করে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মাছের ঘের ভেসে যাওয়াসহ বেশ সম্পদহানির আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টি পুরোপুরি স্থলভাগ অতিক্রম করে যেতে দীর্ঘ সময় নেওয়ার আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এ কারণে এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ উপকূলীয় ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর এবং উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রামসহ সাত জেলায় ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত বহাল ছিল। উপকূলীয় ১৬ জেলার নদীবন্দরে ছিল ৪ নম্বর নৌ বিপৎসংকেত।
‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ রিমালের কেন্দ্রের অংশটি গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাগেরহাটের মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক গতকাল রাত সাড়ে ১২টায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সামনের অংশটি উপকূল স্পর্শ করতে শুরু করেছিল সন্ধ্যার দিকে। ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগ সম্পূর্ণ অতিক্রম করতে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা লাগবে। রবিবার মধ্যরাত বা সোমবার ভোররাত নাগাদ তা সম্পন্ন হতে পারে।
উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
রিমালের প্রভাবে গতকাল সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, ভোলা, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় জোয়ারের প্রভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় সকাল থেকেই বিভিন্ন মাত্রায় বৃষ্টি হচ্ছিল।
রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, শ্যালার, আলোরকোলসহ বনের বিভিন্ন এলাকায় পানি থইথই করছিল। এর আগে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে চার থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় পানি ছিল। বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার-পাঁচ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়।
কক্সবাজারে সাগর ছিল উত্তাল। উঁচু জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে সাগরপারের সুপারিবাগান ও পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর মাতারবাড়ী এবং ধলঘাটায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে।
নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বিকেল ৩টায় জানান, বাগেরহাটের পশুর নদে বিপৎসীমার ১১৫ সেন্টিমিটার, বলেশ্বর নদে ১৪ সেন্টিমিটার এবং দড়াটানা নদে ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জেলায় ৩৩৮ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে সদর, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলায় ১৬ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। শরণখোলায় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রবল ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়। বলেশ্বর নদে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ছয় ফুট পানি বেড়ে প্লাবিত হয় নিচু এলাকার কয়েক হাজার ঘরবাড়ি।
সাতক্ষীরা ও পটুয়াখালীতে দুজনের মৃত্যু
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকত মোড়ল (৬৫) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। শওকত মোড়ল নাপিতখালী গ্রামের মৃত নরিম মোড়লের ছেলে। গতকাল সন্ধ্যার দিকে শওকত মোড়ল স্ত্রীকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টির মধ্য দিয়ে যাওয়ার পথে তিনি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ তিনি পথের ওপর পড়ে যান। ধরাধরি করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। ইউপি চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধলাসার ইউনিয়নের অনন্তপাড়া গ্রামে স্বজনদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় প্রবল স্রোতে খালে ভেসে গিয়ে মো. শরিফুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত যুবক অনন্তপাড়া গ্রামের আ. রহিমের ছেলে।
মোংলায় নৌকাডুবি
রিমালের প্রভাবে ঝোড়ো বাতাসে বাগেরহাটের মোংলায় গতকাল নদী পারাপারের একটি ট্রলার ডুবে যায়। তবে এতে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ঝড়ের কারণে মোংলা ও মোরেলগঞ্জে খেয়া নৌকা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ব্লকে ধস, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি
বলেশ্বর নদের তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী, গাবতলা, বাবলাতলা, দক্ষিণ সাউথখালীর বেড়িবাঁধের প্রায় এক কিলোমিটারের সিসি ব্লক ধসে গেছে। বাঁধের বাইরের বেশ কিছু বসতঘর ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ি জেলেপাড়ার ১৩টি বসতবাড়ি দুপুরে নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। পাউবোর সেকশন অফিসার (এসও) সাজ্জাদুর রহমান জানান, উপকূলের নদ-নদীতে স্বাভাবিকের তুলনায় দুই-তিন ফুট পানি বেড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ ও জিও রোল মজুদ রয়েছে।
ডুবে গেছে মাছের ঘের
বরগুনায় জোয়ারে মাছের ঘেরসহ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। দুপুরে বেড়িবাঁধ ভেঙে বরগুনা সদরের কুমড়াখালী ও আমতলী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যায়। আমতলীর আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামে নির্মীয়মাণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০ মিটার ভেঙে যায়। পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পাউবোর তথ্যানুযায়ী, গতকাল সেখানে জোয়ারের উচ্চতা ছিল ২.৩২ মিটার, যা বিপত্সীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে। কুমড়াখালীর ছালাম বলেন, ‘পুকুরের মাছ, ক্ষেতের ফসল সব শেষ। যেকোনো সময় ঘরবাড়ি পড়ে যেতে পারে।’
ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-তিন ফুট বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল গতকাল। এতে প্লাবিত হচ্ছিল জেলার নিম্নাঞ্চল। খুলনার উপকূলীয় কয়রার ১০টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সেখানে দিনভর বাঁধ মেরামতে অংশ নেয় সাধারণ মানুষ।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বেড়ে যায় চার-পাঁচ ফুট। এতে কোথাও ভাঙা বাঁধ ভেঙে, কোথাও বাঁধ উপচে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। বিভিন্ন এলাকায় পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি এলাকার বেড়িবাঁধ। ইউএনও মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের ভিড়
ঝড় থেকে বাঁচতে উপকূলীয় জেলা-উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তবে অনেকে ঘরবাড়ি রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চায়নি। বাগেরহাট জেলায় ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে গতকাল বিকেল ৬টা পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয়। সেখানে প্রায় তিন হাজার গবাদি পশুও নেওয়া হয়। বরগুনা জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত ২৪ হাজার ৬২৮ জন আশ্রয় নিয়েছিল। ভোলার ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৪টি মুজিবকেল্লায় প্রায় ৩১ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসন আশ্রিত মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করেছে।
সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকার ১০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেছে। এক হাজার ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সন্দ্বীপের উপকূলীয় এলাকার হরিশপুর, রহমতপুর ও কালাপানিয়া এলাকায় আট কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ১৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ২০টি মুজিবকেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়ের জন্য। কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে।
২৬ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন
ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে গতকাল উপকূলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। ঝোড়ো বাতাসে গাছ পড়ে দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে এ কথা বলেন।
ভোলায় জোয়ারে ভেসে লোকালয়ে হরিণ
জোয়ারে ভোলার চরফ্যাশনে লোকালয়ে ভেসে আসে একটি চিত্রা হরিণ। উপজেলার প্রত্যন্ত চর কুকরিমুকরি ইউনিয়নের মনুরা মাছঘাট এলাকা থেকে হরিণটি উদ্ধার করা হয়। পরে একে ইউনিয়নের বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসে রাখা হয়। রেঞ্জ অফিসার সুমন চন্দ্র দাস এ তথ্য নিশ্চিত করে কালের কণ্ঠকে জানান, পায়ে আঘাত পাওয়া হরিণটি মাদী। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তাকে সুস্থ করে বনে ছেড়ে দেওয়া হবে।
আজ ভারি বৃষ্টিপাতের আভাস
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের সব বিভাগেই আজ সোমবার দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারি (৮৯ মিলিমিটার বা বেশি) বর্ষণ হতে পারে। ভারি বৃষ্টির কারণে এরই মধ্যে দেশের পাঁচ জেলায় পাহাড়ধসের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অল্প সময়ে উপকূলে আঘাত
ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে এত দ্রুত উপকূলে আঘাত করার বিষয়টিকে কিছুটা ব্যতিক্রম বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক এ কে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিম্নচাপটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে স্থলভাগে আঘাত করেছে। অর্থাৎ বিষয়টি খুব দ্রুত হয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটি নতুন বিষয়। আবার ঝড়টি বেশ খানিকটা সময় নিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করবে।’
তবে আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘এই ঘূর্ণিঝড় কোনো দিক থেকে ব্যতিক্রম নয়। কোনো কোনো ঘূর্ণিঝড় দ্রুত উপকূলে আঘাত করে, কোনোটা ধীরগতিতে করে। এটি ব্যতিক্রমী কিছু নয়।’
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই ঘূর্ণিঝড়টির ব্যাস অনেক বড়, প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। ফলে এটি স্থলভাগ অতিক্রম করতে সময় বেশি নেবে।’
জলোচ্ছ্বাসে আইলার মতো ক্ষতি হতে পারে
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মো. শামীম আহসান বলেন, ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলা খুব শক্তিশালী ঝড় না হলেও জলোচ্ছ্বাস বেশি ছিল। জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাঁধ ভেঙে লবণাক্ত পানি ঢুকে যাওয়ায় আইলায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছিল। রিমালেও ৮ থেকে ১২ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে একই রকম ক্ষতি হতে পারে।
যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে : দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান গতকাল জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি রোধের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ সারা দেশের সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সচিবালয়ে আন্ত মন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভার পর তিনি এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আট লাখের বেশি মানুষ এসেছে। ঝুঁকি এড়াতে গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলায় নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ বন্ধ রাখা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি মনিটর করছেন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবেলায় সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবেলার প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ জন্য দেশের প্রতিটি নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও র্যাব অবস্থান নিয়েছে।