গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৭ হাজার কিমি! ধেয়ে আসছে উড়োজাহাজের সমান পেল্লাই গ্রহাণু
শনিবার অর্থাৎ গত ১৩ জুলাই একটি গ্রহাণু পৃথিবীর গা ঘেঁসে বেরিয়ে গিয়েছে। গ্রহাণুটির আকার ১০০ ফুট উচ্চতার একটি জাহাজের সমান বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এই গ্রহাণুটির নাম 2024 NB2। বিজ্ঞানীদের মতে এই গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩২ কিলোমিটার দূরত্ব দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এর গতিবেগ গ্রহাণুটিকে বিশেষ করে তুলেছে। এটি পৃথিবীর দিকে ঘণ্টায় ৪৭ হাজার ৯২১ কিলোমিটার বেগে দেয়ে আসছিল। নাসার বিজ্ঞানীরা এই গ্রহাণুটির গতিবিধি অত্যন্ত কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন।
এই গ্রহাণু থেকে পৃথিবীর ভয় কতটা?
নাসা পৃথিবী থেকে ১৫০ মিটারের চেয়ে বড় এবং ৭৪ লাখ দু হাজার ৯৮২ কিলোমিটারের কম দূরত্বের গ্রহাণুগুলিকে সম্ভাব্য বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচনা করে। এই ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এটিকে খুব একটা বিপজ্জনক বলে মনে করছেন না। কারণ এটির আকার এবং দূরত্ব তাৎক্ষণিক-ভাবে পৃথিবীর ক্ষেত্রে কোনও রকম ঝুঁকির সম্ভাবনার সৃষ্টি করে না। পৃথিবীর ক্ষতি করার জন্য এই গ্রহাণুর আকার অত্যন্ত ছোট।
কিন্তু কোনও রকমের বিপদের আশঙ্কা না থাকলেও এই গ্রহাণুটির উপর নজর রাখছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। কারণ এই গ্রহাণুটি যেভাবে পৃথিবীর গা ঘেঁসে বেরিয়েছে তাতে পরবর্তী কোনও ক্ষতি হতে পারে কিনা তা জানাটা খুব দরকার। এই মহাকাশ শিলাগুলির ট্র্যাক রাখা গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাদের কক্ষপথ যেকোনও সময় পরিবর্তন হতে পারে।
এই সব গ্রহাণুর উপর নজর রাখতে নাসা স্থল-ভিত্তিক টেলিস্কোপ এবং মহাকাশযান ব্যবহার করে। ৭৩০,০০০টিরও বেশি গ্রহাণুর সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। যার মধ্যে ১৬ হাজারটি গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি রয়েছে। এদের মধ্যে এক হাজার ৭৮৪টি সম্ভাব্য বিপজ্জনক হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।
সিএনইওএস-এর মতো বিশেষ কেন্দ্রগুলি এই গ্রহাণুগুলিকে ট্র্যাক করে, তাদের গতিপথ পরিমার্জিত করে এবং যে কোনও প্রভাব বা ঝুঁকির দিকে নজর রাখে। হাওয়াই, অ্যারিজোনা এবং এমনকি NEOWISE এর মতো মহাকাশ ভিত্তিক টেলিস্কোপগুলি এই বস্তুগুলি সনাক্ত করতে এবং তার সম্পর্কে বিশদে জানতে সাহায্য করে।
গ্রহাণু কী?
অভ্যন্তরীণ সৌরজগতকে প্রদক্ষিণ কার একটি ছোট গ্রহকে গ্রহাণু বলে। এই ঠান্ডা, ধাতব এবং পাথুরে গ্রহাণুগুলি সৌরজগতের গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে। এখানে কোনও বায়ুমণ্ডল নেই। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গাণিতিক মডেল এবং উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে গ্রহাণুর পথের পূর্বাভাস দেন। অনেক বিপথগামী গ্রহাণু এবং তাদের টুকরো এর আগে বেশ কয়েকবার পৃথিবীর উপর প্রভাব ফেলেছে।