ইরানে কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, তথ্য প্রকাশ
ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন স্থানে গত শনিবার মধ্যরাতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এ হামলাকে সীমিত পরিসরের অভিযান হিসেবে উল্লেখ করেছে। দখলদার ইসরায়েল ইরানের কোন কোন অবকাঠামোর ওপর হামলা চালিয়েছে- দুই ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সেই তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
হামলার লক্ষ্যবস্তু
১. এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: ইসরায়েল তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত এস-৩০০ সিস্টেমে হামলা চালিয়েছে।
২. ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি): ইসরায়েলি বিমান বাহিনী আইআরজিসির অন্তত তিনটি মিসাইল ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছে।
৩. গোপন পার্চিন সামরিক ঘাঁটি: ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে গোপন পার্চিন সামরিক ঘাঁটিতে। যা রাজধানী তেহরানের উপকণ্ঠে অবস্থিত। হামলায় ইসরায়েল যেসব ড্রোন ব্যবহার করেছে সেগুলোর মধ্যে অন্তত একটি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। আর বাকি ড্রোনগুলো ইরান ভূপাতিত করতে সমর্থ হয়েছে।
এরআগে ২০২২ সালে গোপন এই ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় একজন প্রকৌশলী নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন।
এদিকে এই হামলার কারণে যেন উত্তেজনা না বাড়ে সেজন্য ইরানকে আগে থেকেই ইসরায়েল হামলার পরিকল্পনা জানিয়ে দেয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস তিনটি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলেছে, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ইরানের কাছে ইসরায়েল জানায় তারা কোথায় এবং কোন স্থাপনায় হামলা চালাবে।
সংবাদমাধ্যমটিকে একজন বলেছেন, “ইসরায়েলিরা ইরানিদের কাছে আগেই পরিষ্কার করে দেয় তারা মূলত কীসের ওপর হামলা চালাতে যাচ্ছে এবং কীসের ওপর হামলা চালাবে না।”
দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইরানে ব্যালিস্টিক মিসাইল কারখানা এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। তাদের দাবি, এসব মিসাইল দিয়েই গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে বড় হামলা চালিয়েছিল তেহরান।
দুটি সূত্র জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েল ইরানকে হামলার পরিকল্পনা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি এই হামলার পর ফের পাল্টা হামলা চালানো হয় তখন ইসরায়েলও আবার হামলা চালাবে। যেটির মাত্রা হবে তীব্র এবং শক্তিশালী।
তবে তেহরান জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের উপর পাল্টা হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত। দেশটির আধা সরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজের সূত্রে জানা যায়, ইরান হামলার জবাব দেওয়ার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ইরানি কর্তৃপক্ষ বলেছে, “কোনো সন্দেহ নেই যে, ইরানের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের কঠোর জবাব ইসরায়েল পাবে।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে ইরান তাদের প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান পরিষ্কার করেছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসনের ঘটনা ঘটলে তারা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে।
এই উত্তেজনার পটভূমিতে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে, যা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাতের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলছে।