মহাকাশ স্টেশনে লেটুস ‘চাষ’ করছেন সুনীতারা
এখনও পৃথিবীর মাটিতে পা রাখতে পারেননি সুনীতা উইলিয়ামস। তবে, মহাকাশযানে হাত পা গুটিয়ে বসে নেই এই নভোশ্চর। নিত্য নতুন গবেষণায় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন তিনি। পৃথিবী থেকে নিয়ে আসা লেটুস পাতার চাষ মহাকাশের এই মাইক্রোগ্র্যাভিটি-তে করা সম্ভব কিনা, সেটাই খতিয়ে দেখছেন সুনীতা। সঙ্গে রয়েছেন সহযাত্রী বুচ উইলমোর। এই গবেষণার অন্যতম লক্ষ্য হল, কীভাবে পানির পরিমাণের তারতম্য অনুসারে লেটুসের উৎপাদন ও বৃদ্ধি প্রভাবিত হয়, তা পর্যবেক্ষণ করা এবং তা থেকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত উপনীত হওয়া। প্ল্যান্ট হ্যাবিট্যাট-০৭ -এ ওই লেটুসগুলি বসানোর আগে তাঁর বর্তমান পরিবেশ থেকেই পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই নমুনার সাহায্যেই লেটুসগুলির পানির প্রয়োজন পূরণ করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সুনীতার এই গবেষণা সফল হলে, তা ভাবী পৃথিবীর কাছে হবে আশীর্বাদস্বরূপ। মহাকাশের মতো প্রতিকূল পরিবেশে নিয়ন্ত্রিত পরিমাণ পানিতে ফসল ফলানো গেলে পৃথিবীর খরাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতেও সহজে ফসল ফলানোর রাস্তা মিলতে পারে। নাসা সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার সময়েই এই সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সুনীতারা। মহাকাশে লেটুস গাছগুলি লাগানোর আগে গাছের পরিচর্যায় ব্যবহার্য পানির নমুনাও পরীক্ষা করেছিলেন।
এই গবেষণা সফল হলে অদূর ভবিষ্যতে দীর্ঘায়িত মহাকাশ অভিযানগুলির ক্ষেত্রে খাবারের সমস্যা মেটানো যাবে। নাসা-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুনীতা উইলিয়ামস ভবিষ্যতের জন্য ‘অ্য়াডভান্সড প্ল্যান্ট হ্যাবিট্যাট অপারেশন’-এ মনোনিবেশ করেছেন। লেটুস চাষ করা ছাড়াও মহাকাশে নিজের সহযোগী মহাকাশচারীকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতেও সাহায্য করছেন সুনীতা উইলিয়ামস।
এর মধ্যে অন্যতম আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানের সাহায্যে সহকর্মী তথা সহযাত্রীর রক্তনালীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা। তাঁরা খতিয়ে দেখছেন, দীর্ঘদিন যদি কোনও নভশ্চর মহাকাশের থাকেন বা থাকতে বাধ্য হন, তাহলে সেই ঘটনা তাঁর শরীরে কী কী প্রভাব ফেলতে পারে।