USA

ক্ষমতায় ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন, এশিয়ায় মার্কিন মিত্রদের কপালে চিন্তার ভাঁজ

ইতিহাস সৃষ্টি করে দ্বিতীয়বারে মতো মার্কিন মসনদে বসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই প্রত্যাবর্তন অন্য যে কোনো অঞ্চলের মতো দক্ষিণ এশিয়ার মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত নানাবিধ দ্বন্দ্বের সম্মুখীন হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। কারণ, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে দেখা গিয়েছিল কিছু অগোছালো, অজ্ঞ এবং অস্থির পদক্ষেপ।

যার ফলে ট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। তবে অনেকে আবার সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসার কথার বলছেন। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ, নেপাল, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার জন্য নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ দেখা দেবে।

এদিকে বৈশ্বিক রাজনীতিতে এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি চীন। তারা এখন নিজেদের সামরিক ও পারমাণবিক বাহিনী আধুনিকীকরণ করছে। দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান নিয়ে আঞ্চলিক দাবিতে ব্যস্ত তারা। অন্যদিকে পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়িয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দুটি দেশই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করছে। আর কর্মকাণ্ড তার আক্রমণাত্মক ভাষণ বাড়িয়ে এবং অবৈধ পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে। দুই দেশই রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক গাঢ় করার চেষ্টায় আছে। এ সম্পর্কের কারণে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে এশিয়ার নামও। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীন বা উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক এ কারণে অতিমাত্রায় শীতল অবস্থায় আছে বলা চলে।

অপরদিকে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান যুক্তরাষ্ট্রের বেশ পুরোনো মিত্র। দীর্ঘদিন ধরে নিজের মিত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে মার্কিন প্রশাসন। এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মার্কিন সৈন্য রয়েছে। কোনো হামলার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আরেক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ভারত। এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে থাকা চীন–ভারত মার্কিন হস্তক্ষেপ কতটা সহ্য করবে সেটিও বড় বিষয়। ভারতের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক এখন তিক্ত-মধুর। কিন্তু চীনের আধিপত্য ঠেকাতে ভারতকে প্রক্সি হিসেবে এতদিন ব্যবহারের যে কৌশল, সেটিতে ট্রাম্প প্রশাসন কতটা সন্তুষ্ট থাকবে তা নিয়েও জল্পনা চলছে। যেখানে অর্থনৈতিক ও অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের অবস্থান ভারতের জন্য এরই মধ্যে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন তাদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। ট্রাম্প মনে করেন, এই দেশগুলো নিজেদের প্রতিরক্ষা খাত যথেষ্ট পরিমাণে কাজে লাগাচ্ছে না। স্বৈরশাসকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করছে। ট্রাম্প তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে প্রাধান্য দিয়ে এসব দেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারেন।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এশিয়া অঞ্চল বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তায় আছেন বাইডেনের এশীয় মিত্ররা। ট্রাম্পের এমন কিছু সম্ভাব্য নীতি সামনে নিয়ে আসছে পর্যবেক্ষকরা। যেমন—

১. মিত্রদের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা খাতে আরও বেশি ব্যয় করতে চাপ সৃষ্টি করবেন ট্রাম্প। যদি তারা এ দাবি পূরণ না করতে পারে, তাহলে তিনি মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মতো কঠোর সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন।

২. চীনের সি চিনপিং, উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন বা রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্প এমন চুক্তিতে যাবেন, যা বর্তমান মার্কিন মিত্রদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করতে পারে।

৩.বিদ্যমান মার্কিন মিত্রতা শক্তিশালী করে বৈশ্বিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলবেন।

এসব শঙ্কা বা সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে তৎপর হয়ে উঠেছেন এশিয়ার নেতারা। কারণ, পররাষ্ট্র সম্পর্ক গঠনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন ট্রাম্প।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d online