দেরিতে বন্দীমুক্তি ইসরায়েলের, হামাস বলছে যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে

হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির চুক্তির অধীনে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে দেরি করায়, পাঁচ সপ্তাহ ধরে চলা গাজা যুদ্ধবিরতি গুরুতর সংকটে পড়েছে।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ মার্চের শুরুতে শেষ হতে চলেছে, তবে পরবর্তী ধাপের বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার মধ্যেও ইসরায়েল পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে। রবিবার, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা ২০ বছর পর প্রথমবারের মতো জেনিন শহরে একটি ট্যাংক ইউনিট মোতায়েন করতে যাচ্ছে।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির অধীনে হামাস মোট ২৫ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। বন্দী বিনিময় অনুষ্ঠানগুলো জনসমক্ষে আয়োজন করা হয়, যেখানে মুখোশধারী বন্দুকধারীরা মঞ্চে বন্দীদের নিয়ে আসে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই অনুষ্ঠানগুলোকে ‘অসম্মানজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। শনিবার হামাস আরও ছয় ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেয়। তবে ইসরায়েল এর প্রতিক্রিয়ায় ৬০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তি স্থগিত রাখে।
হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা বাসেম নাইম এই বিলম্বকে ‘চুক্তির জন্য গুরুতর হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন এবং মধ্যস্থতাকারীদের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বলেছেন, যাতে চুক্তি পুরোপুরি কার্যকর হয়।
ইসরায়েল বলেছে, হামাস তাদের বন্দীদের মুক্তির সময় ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এ কারণেই তারা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেরিতে দিচ্ছে।
গাজা ও পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি বন্দীদের পরিবার শনিবার রাত পর্যন্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে অপেক্ষা করেছে, তাদের স্বজনদের মুক্তির আশায়।
শনিবার মুক্তি পাওয়া ছয় ইসরায়েলি বন্দীর মধ্যে ছিলেন এলিয়া কোহেন (২৭), ওমের শেম টোভ (২২) এবং ওমের ওয়েনকার্ট (২৩)। হামাস জানিয়েছে, তারা মুসলিম বেদুইন হিশাম আল-সাইদকে ‘সম্মান প্রদর্শনের’ জন্য ব্যক্তিগতভাবে মুক্তি দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো নিহত বন্দীদের দেহ হস্তান্তর করা হলে তা ইসরায়েলে ক্ষোভের জন্ম দেয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, ‘মৃতদেহ প্রদর্শন অত্যন্ত নিন্দনীয়।’ হামাস স্বীকার করেছে যে, বন্দীদের মৃতদেহ বিনিময়ে একটি ‘ভুল ঘটনা’ ঘটেছে।