পর্যটকের ভারে মাউন্ট ফুজির দুর্দশা, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও দূষণে নাকাল এ এলাকা।
মাউন্ট ফুজিতে পর্যটকেরা
যেখানে বিশ্বের অনেক পর্যটনস্থল পর্যটকের অভাবে ‘ধুঁকছে’ শোনা যায়, সেখানে যেন ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটছে জাপানের মাউন্ট ফুজিতে। রীতিমতো সেখানে পর্যটকের সংখ্যা কমাতে মাঠে নামতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার। এ নিয়ে সেখানকার মন্ত্রীরা পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘটা করে বৈঠকও করেছেন।
প্রশাসন বলছে, করোনা মহামারি-পরবর্তীকালে পর্যটকদের চাপ সামলাতে পারছে না মাউন্ট ফুজি। এর ফলে পর্বতশৃঙ্গটি যেন রীতিমতো ‘চিৎকার’ করছে। পর্যটকদের ফেলে দেওয়া খাবারের প্যাকেট ও পানির বোতলে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও দূষণে নাকাল এ এলাকা।
জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে মাউন্ট ফুজির দূরত্ব মাত্র ১০০ কিলোমিটার। মূলত এটি একটি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি। জাপানের সর্বোচ্চ এই পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা ৩ হাজার ৭৭৬ মিটার তথা ১২ হাজার ৩৮৮ ফুট। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থার (ইউনেসকো) বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় রয়েছে মাউন্ট ফুজির নাম।
পর্যটনস্থলের পাশাপাশি অনেকের কাছে মাউন্ট ফুজির রয়েছে ধর্মীয় গুরুত্বও। এ কারণে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা সেখানে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। রাতে মাথায় টর্চ জ্বালিয়ে পর্বতশৃঙ্গে ওঠার জন্য পর্যটক ও দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারিও পড়ে যায়। করোনা মহামারি-পূর্ববর্তী কাল ২০১৯ সালে মাউন্ট ফুজিতে আসা পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৫০ লাখের বেশি, যা ২০১২ সালের চেয়ে দ্বিগুণ। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, মহামারি চলে যাওয়ার পর আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে সেখানকার অবস্থা।
বলা হয়ে থাকে ইউনেসকোর স্বীকৃতি যেন ভালো ও খারাপ দুটোই বয়ে এনেছে মাউন্ট ফুজির ক্ষেত্রে। যেমনটি ঘটেছে বেলজিয়ামের পশ্চিম ফ্ল্যান্ডার্স প্রদেশের রাজধানী ব্রুজস বা ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর সুগারলোফ মাউন্টেনের মতো জায়গার বেলায়। পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে এসব স্থানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ভাসমান দোকান, হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁর মতো প্রতিষ্ঠান। আর যানবাহনের বাড়তি চাপ তো আছেই।
স্থানীয় কর্মকর্তা মাসাতকে ইজুমি বলেন, পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। অনেকে রাতে পর্বতারোহণ করেন। অনেকে আবার প্রথমবারের মতো এখানে পর্বতারোহণের জন্য এসে থাকেন। চলতি মৌসুমে অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। অথচ অনেকে জানেনই না, কীভাবে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা হেঁটে পাহাড়ে উঠতে হয়।