Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
International

ইরানের ইউরেনিয়াম গেল কোথায়?

‘যদি কেউ বলে এই হামলার ফলে ইরানের কর্মসূচি কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে, তবে সেটা হবে নিছক ভুল ভাবনা।’

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের একের পর এক আক্রমণে ইরানের প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো ভেঙে পড়লেও, ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের ৪০০ কেজির বেশি মজুত কোথায় গেছে- এই প্রশ্ন ঘিরে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। ফিনান্সিয়াল টাইমসে এ বিষয়ে ‘হোয়্যার ইজ ইরান’স ইউরেনিয়াম? সার্চ কনটিনিউজ ফর ৪০০ কেজি স্টকপাইল’ নামের যৌথ প্রতিবেদন করেছেন লন্ডন থেকে অ্যান্ড্রু ইংল্যান্ড ও মেহুল শ্রীবাস্তব, তেহরান থেকে নাজমেহ বোজোরগমেহর এবং তেল আবিব থেকে নেরি জিলবার।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ভবিষ্যৎ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সেই কর্মসূচিকে ধ্বংস করার উদ্যোগ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে ৪০০ কেজিরও বেশি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের ভাগ্যে কী ঘটেছে তার ওপর। এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা অস্ত্র তৈরির পর্যায়ের, ৯০ শতাংশ, একেবারে কাছাকাছি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেলথ বোমারু বিমান থেকে যখন ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের ‘বাংকার-বাস্টার’ বোমা ফেলা হয়েছিল ইরানের মূল পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর গলায় দাবি করেছিলেন, ‘ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।’

নাতাঞ্জ এবং ফোরদোর মতো যেসব স্থাপনায় ইরান দীর্ঘদিন ধরে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম তৈরি করছিল, সেগুলোর গুরুতর ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে সংশয় নেই। এছাড়া ইসফাহান শহরের তৃতীয় কেন্দ্র জ্বালানি চক্রের কাজে ব্যবহৃত হতো এবং যেখানে মজুতও রাখা হতো। আমেরিকান সাবমেরিন থেকে ছোড়া টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সেটিও ধ্বংস করা হয়েছে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন এখনো ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ মূল্যায়ন শেষ করতে পারেনি। গতরাতের ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু আসল প্রশ্ন হলো, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কি সত্যিই ধ্বংস হয়েছে? না কি তা এখন আরো গোপন এবং ক্ষুদ্র আকারে অন্য কোথাও গোপনে চালু রয়েছে?

এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই নির্ভর করছে ইরানের সেই ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ৪০৮ কেজি ইউরেনিয়ামের ওপর। অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতা।

ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বোমা বানানোর উপদানের খুবই কাছে পৌঁছে গিয়েছিল।

মূল ব্যাপার হলো, ইউরেনিয়াম কোথায় সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বারাক ওবামা ও জো বাইডেন প্রশাসনের ইরানবিষয়ক সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা রিচার্ড নেফিউ বলেন, ‘মূল বিষয়টা হলো এই উপাদান এবং এটা এখন কোথায় আছে। আমরা এখন পর্যন্ত যা দেখেছি, তা থেকে বলা যায়- আমরা জানিই না এটা কোথায় আছে। এবং এই মুহূর্তে এটা পাওয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্য সক্ষমতা আমাদের নেই।’

তিনি বলেন, ‘যদি কেউ বলে এই হামলার ফলে ইরানের কর্মসূচি কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে, তবে সেটা হবে নিছক ভুল ভাবনা।’

‘ইসরাইলের নজরে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রতিটি ট্রাক’ এমন দাবি শোনা যাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সিবিএস-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ইরান ইউরেনিয়াম সরাতে পেরেছে কি না, তা বুঝতে আরো কয়েকদিন লাগবে।’

তিনি বলেন, ‘আমার তো মনে হয় না, তারা সরিয়েছে। কারণ এখন পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো থেকে ইরানের পক্ষে কিছু সরানো আসলেই সম্ভব নয়। কোনো ট্রাক রাস্তায় নামামাত্রই ইসরাইল সে ট্রাককে শনাক্ত করে হামলা চালিয়েছে।’

তবে ইরান সরকারের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি জানান, ‘ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ওই স্থাপনাগুলোতে মজুত করে রাখা হবে- এমনটা ভাবা একেবারে শিশুসুলভ। ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এখনো অক্ষত আছে।’

এই কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, ইরান সবসময়ই তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক বলে দাবি করেছে। তবে ইসরাইলের সাথে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের শীর্ষস্থানীয় কিছু কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, দেশের পারমাণবিক নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যদি ইরানকে তার প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হয়, তবে তারা গোপন স্থাপনায় বোমা তৈরির পথে দ্রুত এগোতে পারে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা আলি শামখানি বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা এখনো অটুট।

এক্সে (টুইটার) তিনি লিখেছেন, ‘পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো ধ্বংস হয়ে গেলেও খেলা শেষ হয়ে যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, স্থানীয় প্রযুক্তি আর রাজনৈতিক সদিচ্ছা- সবই রয়ে গেছে।’

জানা গেছে, ইসরাইলের প্রথম দফা হামলায় শামখানি আহতও হয়েছেন। তার মৃত্যুর খবরও প্রচারিত হয়েছিল।

ইউরেনিয়াম কোথায় ছিল, কোথায় থাকতে পারে? সে প্রশ্ন পশ্চিমাদের মুখে মুখে ফিরছে। রিচার্ড নেফিউ জানান, ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতার ইউরেনিয়াম আগে রাখা ছিল নাতাঞ্জ, ফোরদো এবং ইসফাহানের পাহাড়ের তলার সুড়ঙ্গে। এই ইউরেনিয়াম ঠাণ্ডা হয়ে গেলে গুঁড়া আকারে বিশাল সিলিন্ডারে সংরক্ষণ করা হয়। এই সিলিন্ডার দেখতে অনেকটা ওয়াটার হিটারের মতো।

৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতার এই ইউরেনিয়ামের মজুত ইঙ্গিত দেয় যে ইরান যদি চায়, তাহলে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই একাধিক পারমাণবিক বোমা তৈরির উপযোগী মিসাইল উপাদান তৈরি করতে পারত। যদিও পরমাণু অস্ত্র বা বোমা তৈরির পরবর্তী প্রক্রিয়ায় আরো কয়েক মাস বা এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের শঙ্কা, ইসরাইল হামলা চালানোর আগেই ইরান গোপনে এই মজুত উন্নত ‘সেন্ট্রিফিউজ’ বা ঘূর্ণনযন্ত্র বসানো হয়েছে, এমন জায়গায় সরিয়ে নিতে পারে। নেফিউ বলেন, ‘এই মুহূর্তে যেটা আমাদের ঘুম হারাম করে দিচ্ছে, তা হলো- এই অনিশ্চয়তা।’

তিনি বলেন, ‘যদি ওদের ইউরেনিয়াম রূপান্তর বা কনভার্শনের লাইন প্রস্তুত থাকে আর যদি ফোরদোতে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধকরণ আগে থেকেই চালু থাকে আর ওরা যদি আট-নয় দিন সময় পেয়ে যায়, তাহলে ইরান কমপক্ষে দু’টি বোমার সমপরিমাণ ইউরেনিয়াম তৈরি করতে পারবে।’

ভারত, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া, এই তিন দেশই কঠোর নজরদারি ও মার্কিন বাধার মাঝেও গোপনে পারমাণবিক কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

‘ইরান এখনো প্রস্তুত, পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি’ এমনই দাবি করছে অনেকে। ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক ইরান বিশেষজ্ঞ সিমা শাইন বিশ্বাস করেন, ইরান এর মধ্যেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ‘ওদের কাছে পর্যাপ্ত ইউরেনিয়াম আছে কোনো না কোনো জায়গায়। আর ওরা উন্নত ঘূর্ণনযন্ত্রও সরিয়ে ফেলেছে, যাতে ভবিষ্যতে যদি দরকার হয়, তাহলে বোমা তৈরির দিকে এগোতে পারে। মার্কিনির যা খুশি তাই বলুক না কেন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।’

ইসরাইলের এক কর্মকর্তা জানান, যদি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান ভবিষ্যতে কোনো চুক্তির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে ফিরতে চায়, তাহলে নেতানিয়াহু ইরানের কাছে দাবি জানাতে পারেন- সমস্ত উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম ইরান থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ কোনো জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।

আরেকজন ইসরাইলি কর্মকর্তা স্বীকার করেন, ইরান কমপক্ষে কিছু পরিমাণ ইউরেনিয়াম লুকিয়ে রাখতে পেরেছে। তবে তিনি যোগ করেন, ‘গত সপ্তাহে যখন ইসরাইল কমপক্ষে ১১ জন ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে, তখন ইরান সরকারের পক্ষে এখন ‘কার্যকর, ছোট আকারের পারমাণবিক বোমা’ তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

ইরান নিয়ে পরিদর্শন নেই, আস্থাও নেই অবস্থায় রয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা সংক্ষেপে আইএইএ। ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জসহ ঘোষিত স্থাপনাগুলোতে নিয়মিত পরিদর্শন চালাত। তবে ইসরাইলের বোমাবর্ষণের ফলে এই পরিদর্শন কাজকর্ম স্থগিত হয়ে গেছে।

আসলে ইসরাইলি হামলার আগেই আইএইএ’র নজরদারি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ট্রাম্প যখন প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে ২০১৫ সালের চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে বের করে আসেন, তখন থেকেই ইরান হাজার হাজার উন্নত ঘূর্ণনযন্ত্র তৈরি শুরু করেছিল, যার বেশিরভাগের ওপর আইএইএ’র নজরদারির কোনো ব্যবস্থা নেই।

এদিকে, ইরান–আইএইএ’র সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ফলে পরিদর্শন আগের মতো আর সম্ভব হচ্ছিল না।

ইসরাইলি হামলার ঠিক আগে আইএইএ যখন ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব নেয়, তখনই ইরান ঘোষণা করে, তারা একটি নতুন, গোপন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। এটিই ইরানের তৃতীয় ‘ঘোষণাহীন’ কেন্দ্র।

আইএইএ জানিয়েছে, ইসরাইল প্রথম দিনেই নাতাঞ্জে হামলা চালিয়েছিল এবং পরে আরো একবার হামলা করে কেন্দ্রের উপরিভাগ ও ভূগর্ভস্থের অংশ বিশেষের ক্ষতি করেছে। ইসফাহানেও কমপক্ষে দু’দফা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।

তবে ফোরদোর মতো পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো সামরিক সক্ষমতা ইসরাইলের নেই। এ কারণেই তেলআবিব মার্কিন হস্তক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করেছিল।

ক্রাইসিস গ্রুপের ইরান বিশেষজ্ঞ আলি ওয়ায়েজ বলেন, ‘আমরা যেটা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বলে জানতাম, সেটা এখন শেষ। এই কর্মসূচি যদি টিকে থাকে, তাহলে তাহলে পারমাণবিক বোমা বানানোর গোপন কর্মসূচি হবে অথবা কোনো চুক্তির অধীনে পরিচালিত নিরীহ বেসামরিক প্রকল্পে পরিণত হবে। যার সাথে পরমাণু জ্বালানি চক্রের কোনোই সম্পর্ক থাকবে না।’

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের এমন জিগির তোলা দেখে অনেকেই জাতিসঙ্ঘকে পাশ কাটিয়ে ইঙ্গ-মার্কিন আগ্রাসনের কথা মনে করবেন।

ইরাকের মারণাস্ত্র রয়েছে বলে গগনবিদারি প্রচারণায় মেতে উঠেছিল বিবিসি, টাইমসসহ পশ্চিমা সকল মাধ্যম। কিন্তু সেখানে শেষ পর্যন্ত কী পাওয়া গিয়েছিল সে কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। ইসরাইলের ভাণ্ডারে তাজা তাজা পারমাণবিক বোমা মজুত রয়েছে অনেককাল। সে বিষয়ে পশ্চিম মৌনব্রত পালন করছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
toto 4d
slot toto
slot gacor
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot toto