Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

৫০০ মানুষের সার্ক দ্বীপে বিশ্বের ‘সর্বোচ্চ’ বিদ্যুৎ বিল কেন

উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ইংলিশ চ্যানেলের মাঝামাঝি অংশে অবস্থিত ছোট্ট দ্বীপ সার্ক। এই দ্বীপে বাস করছেন ৫০০ জনের কম মানুষ। এটি ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের অংশ হলেও এর নিজস্ব সরকার রয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর থাকলেও দ্বীপটির মানুষদের মন ভালো নেই। কারণ, এখানকার মানুষ এমন পরিমাণে বিদ্যুতের দাম দিচ্ছেন, যা বিশেষজ্ঞদের মতে বিশ্বের সর্বোচ্চ। সর্বশেষ গত দুই সপ্তাহে দ্বীপটিতে এক কিলোওয়াট ঘণ্টা, অর্থাৎ বিদ্যুতের এক ইউনিটের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। খবর বিবিসির

বাংলাদেশের চেয়ে ১৮ গুণ বেশি

দ্বীপটিতে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম ১ দশমিক ১৩ ব্রিটিশ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৮৬ টাকা (প্রতি পাউন্ড ১৬৪ টাকা ৪০ পয়সা ধরে)। এটি বাংলাদেশের বিদ্যুতের দামের তুলনায় অনেক বেশি। যেমন ঢাকায় গড় বিদ্যুৎ খরচ প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৭ থেকে ১০ টাকার মধ্যে।

সার্ক দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সার্ক ইলেকট্রিসিটি লিমিটেড (এসইএল) নামের একটি কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যালান উইটনি-প্রাইস জানান, দ্বীপে বিদ্যুতের দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ হলো সরকারের সম্ভাব্য হস্তক্ষেপ এবং কোম্পানির সেই আইনি প্রক্রিয়া মোকাবিলার ব্যয়ভার।

সার্কের স্থানীয় সরকারকে বলা হয় চিফ প্লিয়াজ। এটি ১৮ জন নির্বাচিত সদস্য, ১ জন প্রেসিডেন্ট ও ১ জন উত্তরাধিকারী লর্ড নিয়ে গঠিত। সরকার চাইলে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি জোরপূর্বক ক্রয়ের জন্য আদালতে যেতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব ডান্ডির অর্থনীতির প্রভাষক দিলীপ জেনা বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিল এতটা বাড়ার পরে আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল “এটি অত্যধিক”। এমন ছোট দ্বীপেও এ রকম দাম হওয়া উচিত নয়।’ দিলীপ জেনা আরও জানান, এটি তাঁর দেখা সর্বোচ্চ বিদ্যুতের দাম।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ এনার্জি ইকোনমিস্টের সহপ্রতিষ্ঠাতা টম মিলারও জানান, এটি বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ বিদ্যুতের দাম। মিলার বলেন, ‘আমি বিশ্বের বিভিন্ন উচ্চমূল্যের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি দেখেছি। কিন্তু সার্ক দ্বীপের বিদ্যুতের দাম দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি।’

সার্ক দ্বীপের সরকারি ওয়েবসাইটের সৌজন্যে

সার্ক দ্বীপের সরকারি ওয়েবসাইটের সৌজন্যে

মূল্যবৃদ্ধির কারণ

দ্বীপে কম জনসংখ্যার কারণে সার্ক ইলেকট্রিসিটি লিমিটেডের (এসইএল) তেমন কোনো মুনাফা বা আর্থিক সুবিধা নেই। এ ছাড়া গত দুই দশকে দ্বীপটির গ্রিডে প্রায় কোনো ধরনের বিনিয়োগ হয়নি। ফলে ডিজেল জেনারেটরে নির্ভরতা তৈরি হয়েছে। সেই ডিজেল জ্বালানি প্রথমে পার্শ্ববর্তী গার্নসির দ্বীপে নেওয়া হয়, তারপর তা সার্কে আনা হয়। এসব কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়তি। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রশাসনিক জটিলতা।

জ্বালানি–বিশেষজ্ঞরা সার্ক দ্বীপের বর্তমান বৈদ্যুতিক অবকাঠামোকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ও ‘জীবনকাল অতিক্রান্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন।

যেভাবে সংকটের শুরু

সার্ক দ্বীপে অধিবাসীদের সঙ্গে বিদ্যুৎ কোম্পানির (এসইএল) সাম্প্রতিক যে উত্তেজনা চলছে, তা নতুন কিছু নয়। ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি সার্ক সরকারের টেবিলে আসে। এরপর সার্কের চিফ প্লিয়াজ ও এসইএলের মধ্যে ছয় বছরের দর-কষাকষির পরে একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়, যার নাম সার্ক ইলেকট্রিসিটি প্রাইজ কন্ট্রোল কমিশনারের কার্যালয়।

২০১৮ সালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট ৬৬ পেন্স (ব্রিটিশ মুদ্রা, পাউন্ডের ভগ্নাংশ মূল্য) নির্ধারণ করে। ওই বছরেই এসইএল কোম্পানির অন্যতম মালিকানা অংশীদার ডেভিড গর্ডন-ব্রাউন সার্কে বিদ্যুৎ বন্ধ করার হুমকি দেন। তাঁর দাবি ছিল, বিদ্যুতের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কোম্পানির ব্যয় মেটাতে যথেষ্ট নয়। এরপর দুই পক্ষ এক বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টির একটি সমাধানে আসে। আর সেটি হলো, সার্কের সরকার কোম্পানিটি কিনে নেবে। কিন্তু সাত বছর ধরে এই কেনাবেচার প্রক্রিয়া ঝুলে আছে।

এসইএলের আগের মালিক ডেভিড গর্ডন-ব্রাউন ২০১৯ সালে মারা গেলে কোম্পানিটি কিনে নেন অ্যালান উইটনি-প্রাইস নামের একজন। এসইএলের বর্তমান মালিক উইটনি-প্রাইস অবশ্য কেনাবেচার ধীরগতিতে সন্তুষ্ট নন। তিনি এই সময়ক্ষেপণের আর্থিক ক্ষতি মেটাতে ‘আইনি প্রক্রিয়ায়’ বাড়তি শুল্ক যোগ করেন। অর্থাৎ এর মাধ্যমে ক্রয়প্রক্রিয়া চলাকালে তাঁর বাড়তি ব্যয়গুলো যেন মেটানো যায়। মূলত এটিই দ্বীপটিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সর্বশেষ কারণ।

এদিকে বিদ্যুতের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দ্বীপের ব্যবসা কার্যক্রমে প্রভাব পড়েছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের খোলার সময় পরিবর্তন করছে। যেমন টাইম অ্যান্ড টাইড নামের দ্বীপের একটি রেস্তোরাঁ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, তাদের বিদ্যুৎ বিল প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। এ জন্য তারা এখন প্রতি সপ্তাহে রেস্তোরাঁ খোলার সময় পর্যালোচনা করবে।

‘আমি বাড়তি দাম দেব না’

সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির জবাবে সার্কের বিদ্যুতের দাম নিয়ন্ত্রণ–বিষয়ক কমিশনার শেইন লিঞ্চ বলেছেন, নতুন দামটি ‘ন্যায্য বা যুক্তিসংগত নয়’। অন্তত অক্টোবরের আগে তিনি বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য কোনো সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করতে পারবেন না।

সাবেক রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতা টনি লে লিভরে সেই বাসিন্দাদের একজন, যিনি বলছেন যে উচ্চতর বিদ্যুতের দাম তিনি দিতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে অধিকাংশ বাসিন্দাও একই কাজ করবে (বাড়তি দাম দেবে না)।’ বরং এসইএল কীভাবে এত বড় মূল্যবৃদ্ধিকে যৌক্তিক মনে করতে পারে, সেটি ভেবে বিস্ময় প্রকাশ করছেন টনি লে।

একটি গেস্ট হাউসের মালিক হেলেন লে পোয়েডভিন বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় সম্প্রতি দ্বীপের প্রায় ৮০ জন বাসিন্দাকে নিয়ে একটি সভার আয়োজন করেছেন। সেখানে তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। ওই সভায় তিনি বলেন, ‘আমি রাগান্বিত। আমরা এখন টিভি চালাতে পারি না, আমাদের যা করণীয়, তা সব সময় ভেবে নিতে হচ্ছে। আমি এ পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’

এসইএল কেনায় কতটা এগিয়েছে চিফ প্লিয়াজ

চিফ প্লিয়াজ (সার্ক সরকারের অংশ) যখন ঘোষণা করেছিল, তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কিনতে চায়, তখন থেকে ক্রয়প্রক্রিয়ায় খুব ধীরগতিতে অগ্রগতি হয়েছে। অর্থাৎ তারা কেন্দ্রটি কিনতে চাইলেও সে জন্য অনেক সময় নিচ্ছে।

অন্যদিকে এর মধ্যেই সরকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করেছে সার্ক দ্বীপের জন্য একটি নতুন শক্তি (বিদ্যুৎ) ব্যবস্থার নকশা করতে, যা নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর ভিত্তি করে হবে। এই নতুন পদ্ধতিতে ব্যয় হতে পারে ৮৬ লাখ পাউন্ড।

পাশাপাশি চিফ প্লিয়াজ সরকার একটি আইন পাস করেছে, যা তাদের বাধ্যতামূলক ক্রয় করার অনুমতি দেয়। সরকার অবশ্য আশা করছে, এসইএলের ক্ষেত্রে এই আইন প্রয়োগ করতে হবে না। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োগ করতে হলেও হতে পারে।

চিফ প্লিয়াজের পক্ষে দ্বীপের বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ নিয়ে কাজ করা কমিটির কাউন্সেলর মাইক লক সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটি আমাদের কমিউনিটির সংবেদনশীল সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়িয়েছে এবং ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এটি গ্রহণযোগ্য নয়।

সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ বাড়ছে। যেমন সম্প্রতি সার্কে স্থানান্তরিত একজন অধিবাসী বলেন, যাদের ছোট পরিবার আছে, তারা এত ব্যয়বহুল পরিস্থিতির মধ্যে কেন সার্কে বসবাস করবে? কেন বিনিয়োগ করবে?

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
toto 4d
slot toto
slot gacor
toto slot
toto 4d
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot gacor
slot gacor
bacan4d
slot gacor
paito hk
bacan4d
slot gacor
bacansports
slot gacor
fenomena1688
pasaran togel
bacan4d
slot demo
bacan4d
slot toto
slot toto
slot toto