Trending

আইএফআইসি ব্যাংকের ৩০ শতাংশ কর্মী নারী

প্রায় পাঁচ দশক ধরে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি দেশের সব শ্রেণি-পেশা-লিঙ্গ-বর্ণ-বয়সের মানুষের জন্য সবচেয়ে গ্রাহকবান্ধব ব্যাংক হয়ে ওঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে ব্যাংকিং প্রডাক্ট ও সেবায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। এসব ব্যাংকিং প্রডাক্ট ও সেবার সেরা প্যাকেজ সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সবচেয়ে বেশি (১ হাজার ৪০০+) শাখা-উপশাখা নিয়ে দেশের বৃহত্তম ব্যাংক হিসেবে সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী।

এই নারী জনগোষ্ঠীকে গ্রাহক হিসেবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা এবং নিজস্ব মানবসম্পদ কাঠামোতে নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা নিশ্চিত করা ছাড়া অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার চলমান অভিযাত্রা সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে বিশ্বাস করে আইএফআইসি। সে কারণেই গত অর্ধযুগে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ের প্রায়োগিক বাস্তবতায় আইএফআইসি ব্যাংক প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নারীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নারী ও পুরুষের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি ও ব্যাংকের অভ্যন্তরে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইএফআইসি ব্যাংক সূত্র বলছে, ব্যাংকিং সেক্টরে প্রায় সবার চেয়ে অধিক হারে নারী কর্মী নিয়োগ ও তাঁদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংক দেশের কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুসারে, ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত ব্যাংকিং সেক্টরে এক লাখ ৯৯ হাজার ৫০৬ জন কর্মী কাজ করছেন, যার মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৫৬৭ জন। এই হিসাব থেকে জানা যায়, দেশের মোট ব্যাংককর্মীর ১৬.৩২ শতাংশ নারী, যা ২০২২ সালের জুন অবধি ছিল ১৬.২৮ শতাংশ। অর্থাৎ গত এক বছরে ব্যাংকিং সেক্টরে নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে তেমন কোনো আশানুরূপ পরিবর্তন ঘটেনি। সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা বেশি হলেও এ হার সবচেয়ে বেশি বিদেশি ব্যাংকগুলোতে।

তাদের মোট মানবসম্পদের ২৪.১১ শতাংশ নারী। অন্যদিকে সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আইএফআইসি ব্যাংকে মোট পাঁচ হাজার ২৮৭ জন কর্মী আছেন, যার মধ্যে এক হাজার ৫৯০ জন নারী। এটি মোট কর্মীসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ।

এই নারী কর্মীর মধ্যে এক হাজার ২৫০ জন বিভিন্ন শাখা ও উপশাখায় ব্যাংকিং কার্যক্রমে অবদান রাখছেন। ভৌগোলিক অবস্থানের বাধা অতিক্রম করে সারা দেশে আইএফআইসি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ৬৬৪ নারী কর্মী (দেশব্যাপী শাখা পর্যায়ে মোট কর্মীসংখ্যার ৩৫ শতাংশ) এবং উপশাখায় ৫৮৬ নারী কর্মী (দেশব্যাপী উপশাখা পর্যায়ে মোট কর্মীসংখ্যার ২৩ শতাংশ)  কাজ করছেন, যা নারীর অগ্রযাত্রায় এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত।

শুধু তা-ই নয়, ব্যাংকের বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্ব প্রদানেও নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হচ্ছে প্রশংসনীয়ভাবে। মোট ১৬৮ জন এক্সিকিউটিভের মধ্যে নারী কর্মী আছেন ৩৮ জন। ১২ জন নারী কর্মী বিভিন্ন শাখা ও বিভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সাতজন নারী সাতটি শাখায় (একটি করপোরেট শাখাসহ) ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন এবং ৩২৯টি উপশাখায় ইনচার্জ (মোট উপশাখা ইনচার্জ সংখ্যার ২৭ শতাংশ) হিসেবেও কাজ করছেন নারী। এই বিপুলসংখ্যক নারী কর্মীর জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংক কর্মসংস্থানে সমান সুযোগ সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটিয়েছে। 

নিজস্ব কর্মীদের জন্য গৃহীত অভ্যন্তরীণ উদ্যোগ ছাপিয়ে নারীর কল্যাণে আইএফআইসি ব্যাংক তার গ্রাহকদের জন্য আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং ক্ষমতায়নের পথকে সম্প্রসারণ করেছে। এই ব্যাপক আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচির লক্ষ্য হলো নারী গ্রাহকদেরক প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং দক্ষতায় সুসজ্জিত করা, যাতে তারা বুঝেশুনে সঠিক আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এরই মধ্যে শুধু ২০২৪ সালেই আইএফআইসি ব্যাংকের ২৮টি আউটলেটে দুই হাজার ৪৬৩ জন অংশগ্রহণকারীর জন্য ৩৩টি আর্থিক সাক্ষরতা প্রগ্রাম পরিচালনা করা হয়েছে। ২০২৩ সালে ৯২টি আউটলেটে ৯৯টি আর্থিক সাক্ষরতা প্রগ্রাম বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং সাত হাজার ৯৭৬ জন অংশগ্রহণকারীর কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। এ প্রগ্রামগুলোতে মৌলিক ব্যাংকিং নীতি, সঞ্চয়, বিনিয়োগ, আর্থিক পরিকল্পনাসহ বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে চারপাশের জনগোষ্ঠী ও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার ফলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্ষমতায়নের বিষয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের সুদৃঢ় অবস্থান ও অঙ্গীকার প্রকাশ পেয়েছে।

জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মীদের পরিবারে আগত নবজাতকদের গোল্ড কয়েন প্রদানের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হচ্ছে। এ বছর ৩০৪ নবজাতককে এই উপহার দেওয়া হয়েছে। এসএসসি, এইচএসসি, ও লেভেল এবং এ লেভেল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়া আইএফআইসির কর্মীদের সন্তানদের প্রেরণা জোগাতেও বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে। এ বছর আইএফআইসির কর্মীদের পরবর্তী প্রজন্মের ১১৩ জনের জন্য মেডেল ও সার্টিফিকেট দেওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল।  

আইএফআইসি ব্যাংকের এসব উদ্যোগ ব্যাংকিং ছাড়িয়ে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। কর্মীদের মধ্যে নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিতকরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবং নারী গ্রাহকদের মধ্যে আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংক অন্যদের জন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে। এ ছাড়া নারীর জীবন সাজাতে, সময় বাঁচাতে, ব্যাংকিং সহজ করতে আইএফআইসি বিভিন্ন ধরনের নারীবান্ধব অ্যাকাউন্ট, সঞ্চয় স্কিম, গৃহঋণ, ব্যক্তিগত ও ব্যাবসায়িক ঋণ সুবিধার আয়োজনের মাধ্যমে নারীর আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করছে সারা দেশে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button