Hot

ইরানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধোঁকা দিয়েছে ইসরাইল!

যুক্তরাষ্ট্রকে অন্ধকারে রেখেই শুক্রবার ইরানে হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল- এমন তথ্যই জানা যাচ্ছে। ইসরাইল তার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল, পাসওভারের ছুটি শেষ হওয়ার আগে তারা ইরানে হামলা চালাবে না। এক সিনিয়র কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছেন।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ওই সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, মার্কিনিদের ইসরাইল আশ্বস্ত করেছিল যে পাসওভারের ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইরানে তারা হামলা চালাবে না। উল্লেখ্য পাসওভারের ছুটি শুরু হবে ২২ এপ্রিল, শেষ হবে ৩০ এপ্রিল।

ইরানে ইসরাইলের হামলাটি ছিল সীমিত পর্যায়ের। সম্ভবত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ীই তা করা হয়েছিল।

ইরানি রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ইসফাহান নগরীতে তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ইরানি সিনিয়র কমান্ডার সিয়াভশ মিহানদোস্ত রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেন, হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি। আন্তর্জাতিক পরমাণু জ্বালানি সংস্থাও জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো অক্ষত রয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বাড়া নিয়ে ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সাথে কথা বলার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হামলাটি হয়।

ইতালির ক্যাপ্রি দ্বীপে সাংবাদিকদের মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ইরানের ওপর হামলার ব্যাপারে প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, কোনো ধরনের আক্রমণাত্মক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ছিল না- এটুকু ছাড়া আমি ইরানে হামলার ব্যাপারে কিছুই বলছি না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অংশীদারদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা কমাতে কাজ করে যাবে।’

তবে শুক্রবার সকালে ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনিও তাজানি সাংবাদিকদের বলেন, একেবারে ‘শেষ মুহূর্তে’ হামলাটির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করে ইসরাইল।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাথে হামলাটির ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। এটা ছিল স্রেফ একটি তথ্য।’

মিডল ইস্ট আই এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউসের মন্তব্য চেয়েছিল। কিন্তু এই প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ওয়াশিংটনে মার্কিন দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

এদিকে শুক্রবার বিকেলেই ইরানি বিমানবন্দরগুলোতে বিমান চলাচল শুরু করে। এছাড়া রেভ্যুলশনারি গার্ডের এক কমান্ডার রয়টার্সকে বলেন, বদলা নেয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

মিহানদোস্ত রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, তাদের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘সন্দেহজনক বস্তুকে’ টার্গেট করেছে।

তিনি বলেন, হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি।

এদিকে এক বিশ্লেষক ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, মিনি-ড্রোনগুলো ‘অনুপ্রবেশকারীরা ইরানের ভেতর থেকেই’ উড়িয়েছিল।

ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ হামলার ব্যাপারে নীরব রয়েছে। অবশ্য বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ এবং সাবেক কর্মকর্তা হামলার ব্যাপারে কথা বলেছেন।

ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন গভির একটি শব্দ টুইট করেছেন : ‘দুর্বল!’ উল্লেখ্য, এই কট্টরপন্থী রাজনীতিবিদ শনিবার রাতের ইরানি হামলার ব্যাপারে কঠোর জবাব দেয়ার পক্ষে ছিলেন।

গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকে বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ আরো ছড়িয়ে পড়া রোধের চেষ্টা করছে।

কিন্তু তারা আবার একইসাথে ইসরাইলকে সামরিক সহায়তাও অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, শনিবার রাতে ও রোববার ভোরে ইসরাইলে তিন শতাধিক ড্রোন, ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। তবে এগুলোর বেশিভাগই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জর্ডান প্রতিরোধ করে। ১ এপ্রিল দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরাইলি হামলায় দুই ইরানি কমান্ডার নিহত হওয়ার জবাব এভাবে দেয় ইরান।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button