মঙ্গলের পরিবেশে ফাঙ্গাস নিয়ে গবেষণা করবে নাসা
নাসা তার বার্ষিক অ্যান্টার্কটিক বেলুন অভিযান শুরু করেছে। রস আইস শেলফের কাছে ম্যাকমারডো স্টেশন থেকে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই বছরের অভিযানে দুটি বৃহৎ বেলুনের মাধ্যমে নয়টি বৈজ্ঞানিক মিশন পরিচালনা করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যভাগে বেলুনগুলো উৎক্ষেপণ শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই প্রকল্পটি নাসার সাইন্টিফিক বেলুন প্রোগ্রাম অফিসের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত রয়েছে মার্কিন ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন, নিউজিল্যান্ড এবং মার্কিন বিমান বাহিনী। অভিযানের জন্য এত দূরবর্তী এবং প্রতিকূল পরিবেশেও এ ধারনের সহযোগিতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
নাসার তথ্য অনুযায়ী, অভিযানের মূল মিশনগুলোর মধ্যে একটি হলো জেনারেল অ্যান্টি-পার্টিকল স্পেকট্রোমিটার (GAPS), যা কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকদের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। মিশনটি ডার্ক ম্যাটার সংক্রান্ত অ্যান্টি-ম্যাটার কণার সন্ধানে কাজ করবে। এ ধরনের কণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং শুধুমাত্র মহাকাশ বা সাবঅরবিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে পর্যবেক্ষণ সম্ভব। এ মিশন ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে অজানা শক্তি পরিসর নিয়ে নতুন তথ্য প্রদান করতে পারে।
অন্য একটি উল্লেখযোগ্য মিশন হলো সল্টার টেস্ট ফ্লাইট ইউনিভার্সাল, যা পরিচালিত হচ্ছে নাসার টেক্সাসের কলাম্বিয়া সায়েন্টিফিক বেলুন ফ্যাসিলিটির তত্ত্বাবধানে। দীর্ঘমেয়াদী বেলুন সিস্টেমের কর্মক্ষমতা যাচাই এবং পিগিব্যাক নামে অতিরিক্ত পরীক্ষাগুলোর সহায়তা দেওয়া এ মিশনের মূল উদ্দেশ্য।
এই অভিযানে মার্কিন নেভাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির মার্সবক্স পরীক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এখানে এক ধরনের ফাঙ্গাসকে মঙ্গলের অনুরূপ স্ট্রাটোস্ফেরিক পরিবেশে পরীক্ষা করা হবে। এ গবেষণা মহাকাশচারীদের জন্য রেডিয়েশন সুরক্ষায় সহায়তা করতে পারে। এ ছাড়া, মেক্সিকোর ইএমআইডিএসএস-৬ স্ট্রাটোস্ফিয়ারে আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে। নাসার স্প্যারো-৬ প্রকল্পটি বায়ু প্রবাহ মাপার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে।
নাসা এই অভিযানে শূন্য-চাপযুক্ত বেলুন ব্যবহার করছে, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ৯৯.৮ শতাংশ উচ্চতায় উঠতে সক্ষম। অ্যান্টার্কটিকার গ্রীষ্মকালীন নিরবচ্ছিন্ন সূর্যালোকে দীর্ঘ সময় ধরে ডেটা সংগ্রহের সুবিধা মিলবে। বেলুনগুলোর প্রস্তুতি Aerostar দ্বারা সম্পন্ন এবং অভিযানের লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করছে ইউএস অ্যান্টার্কটিক প্রোগ্রাম।
নাসা বিশ্বজুড়ে ১,৭০০-এরও বেশি বেলুন উৎক্ষেপণ করেছে। এর মাধ্যমে তারা উচ্চতাপ্রযুক্তি নির্ভর গবেষণার ক্ষেত্রে তাদের প্রতিশ্রুতি এবং বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।