Trending

বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে বি-২’তে নামাল মুডিস, পূর্বাভাস নেতিবাচক

মুডিস জানায়, উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি ও নিম্ন প্রবৃদ্ধিকে তুলে ধরেছে এই অবনমন, যার ফলে সরকারের নগদ অর্থ সংকট তৈরি হতে পারে। এতে ব্যাংকখাত এবং বাহ্যিক লেনদেনেও দুর্বলতা তৈরি হবে।

বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ইস্যুয়ার ও সিনিয়র আনসিকিউরড ঋণমান – বি১ থেকে অবনমন করে বি২’তে নামিয়েছে মুডিস রেটিংস। একইসঙ্গে স্বল্প মেয়াদি ঋণজারিকে ‘নট-প্রাইম’ শ্রেণিভুক্ত করেছে। 

আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারীটি বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে তাদের পূর্বাভাসকে এর আগে স্থিতিশীল বলেছিল, যা এখন নেতিবাচকে নামিয়েছে। 

মুডিস জানায়, উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি ও নিম্ন প্রবৃদ্ধিকে তুলে ধরেছে এই অবনমন, যার ফলে সরকারের নগদ অর্থ সংকট তৈরি হতে পারে। এতে ব্যাংকখাত এবং বাহ্যিক লেনদেনেও দুর্বলতা তৈরি হবে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার দরুণ এসব ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের।  

মুডিস বলেছে, চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও দুর্বল হয়ে পড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের সরকারকে তার অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর আরও বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে, এতে বাড়ছে তারল্য ঝুঁকি। 

আবার ব্যাংকখাতে ঋণ সম্পদের উচ্চ ঝুঁকি এবং এখাতে মূলধন ও তারল্য দুইই কম থাকায়— সরকারের ওপর এখাতকে জরুরি অবস্থায় সহায়তা প্রদান বা আকস্মিক দায়বদ্ধতার ঝুঁকিও বাড়িয়েছে।  

দেশে আসা রেমিট্যান্স প্রবাহ ও উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ ছাড় সত্ত্বেও – গত কয়েক বছরে রিজার্ভের ক্ষয় হওয়ায় বাহ্যিক ঝুঁকিগুলো মোকাবিলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে বাংলাদেশের – আরও জানায় মুডিস। 

সংস্থাটির মতে, সামাজিক ঝুঁকি বৃদ্ধি, নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার বিষয়টি আবারো সামনে আসায়– রাজনৈতিক ঝুঁকিও অনেকটা বেড়েছে। 

“বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আমাদের বর্তমান প্রত্যাশার বাইরে যেসব ঝুঁকি রয়েছে– পূর্বাভাস নেতিবাচক করার মাধ্যমে তা তুলে ধরা হয়েছে। যা বাংলাদেশের ইতোমধ্যেই চাপের মধ্যে থাকা আর্থিক সক্ষমতাকে আরও দুর্বল করতে পারে এবং বাহ্যিক দুর্বলতাগুলোকে তীব্র করবে” – সতর্ক করেছে মুডিস। 

দুর্বল স্থানীয় ভোগচাহিদা ও সরবরাহ চক্র ব্যাহত হওয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে এসব ঝুঁকি বা বাধা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে পোশাক শিল্পে চলমান শ্রম অস্থিরতাও রপ্তানির পূর্বাভাস নিয়ে শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। 

মুডিস বলছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বৃহত্তর সংস্কারের এজেন্ডার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, তবে এগুলো তারা বাস্তবায়ন করতে পারবেন কিনা, তা অনিশ্চিত। তাছাড়া, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও উচ্চ বেকারত্ব দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার মতো – দ্রুত ফলাফল যদি জনগণকে না দিতে পারে, তাহলে এসব সংস্কার চালিয়ে নেওয়ার মতো রাজনৈতিক পুঁজিও থাকবে না সরকারের। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button