Bangladesh

আছড়ে পড়ছে ক্ষোভ

অভ্যুত্থানের ৬ মাসেও প্রত্যাশা-প্রাপ্তিতে ফারাক, সারা দেশের সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিসহ হাসিনার অলিগার্কদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ জনগণের বহুমাত্রিক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা এখন ভারতে দাদাদের আশ্রয়ে রয়েছেন। দিল্লির থাকা এই গণহত্যাকারী চরম পৈশাচিকতায় জুলাই-আগস্টে হাজার মানুষকে খুন করে ঢাকার রাজপথ রক্তাক্তের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাভিক্ষা দূরের কথা, অনুশোচনা পর্যন্ত করেননি। দিল্লিতে মোদি সরকারের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে হঠাৎ হঠাৎ তিনি কালনাগিনী শাপের মতো বিষাক্ত ফনা তুলছেন। এতে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে অংশ নেয়া ও সমর্থন করা আমজনতার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করছেন। অন্যদিকে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র-জনতার যে প্রত্যাশা ছিল অন্তর্বর্তী সরকার ছয় মাসে তা পূরণ করতে পারেনি। এনজিও-মার্কা, বয়সের ভারে ন্যুজ ও বিশেষ চেতনাধারীদের উপদেষ্টা করায় তারা প্রশাসনের কর্মরত হাসিনার অলিগার্ক আমলাদের চাকরিচ্যুত করতে চাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের কিছু লোককে গ্রেফতার করা হলেও শত শত দুর্নীতিবাজ-লুটেরা সাবেক মন্ত্রী-এমপি-আমলা-পুলিশ কর্তা পালিয়ে গেছেন। আবার যৌথবাহিনীর গ্রেফতার অভিযান জোরালো না হওয়ায় আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। দেশে থেকেই তারা হুঙ্কার দিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ‘হোমিওপ্যাথি’ তৎপরতার সুযোগ নিয়ে পাচার করা শত শত কোটি টাকা খরচ করে হাসিনা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। টেলিফোন, ফেসবুকে বিষ ছড়ানো বক্তব্য দিয়ে হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখছেন। এসব ঘটনায় ক্ষোভে ফেঁটে পড়ছেন ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতা। তারা হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে এখনো সোচ্চার। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ফেসবুকে লাইভে এসে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বিরোধী বক্তৃতার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের ‘তীর্থস্থান-খ্যাত’ ধানমন্ডির ৩২ নম্বর নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। আগুন দিয়েছে হাসিনার বাসভবন সুধাসদনে। ছাত্র-জনতার এই ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত সাধারণ মানুষ বিগত ১৫ বছর যাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন সেই নেতাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। ছাত্র-জনতার ক্ষোভের আগুন যেন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি সম্পদ বিধ্বংস ও অগ্নিকা-ের বিরোধিতা করছে এবং বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে থামানোর চেষ্টা করছে।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ও সুধাসদনসহ সাবেক প্রেসিডেন্ট, সাবেক সেনাপ্রধান-মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপি-সংস্কৃতিকর্মীসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসাবাড়িতে হামলা-অগ্নিকা- কার্যত বহুমাত্রিক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। বছরের পর বছর ধরে গ্রামের মানুষ নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে, সুযোগ বুঝে তারা প্রতিশোধ নিচ্ছে। ঢাকার বনানীতে শেখ সেলিম, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান, কিশোরগগঞ্জে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ, ভোলায় তোফায়েল আহমদ, বরিশালে আমির হোসেন আমু, জামালপুরে মির্জা আজম, রাজশাহীতে খায়রুজ্জামান লিটন ও শাহরিয়ার আলম, কুষ্টিয়ায় হানিফ, খুলনায় শেখ বাড়ি, বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহসহ যাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; সে সব এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত ১৫ বছরের জুলুমের প্রতিশোধ নিতে তারা অগ্নিসংযোগ করেছেন। তারা নানাভাবে নিগৃহীত হয়েছেন, তাদের জমিজমা দখল হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি করেছেন ওই সব নেতার ছত্রছায়ায়। আমজনতার বিক্ষুব্ধতায় বাতাস দিচ্ছে জামায়াতের কিছু অনুসারি। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ও বনানীর শেখ সেলিমের বাসায় অগ্নিকা-ের সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে অংশ নেয়া লোকজনকে দেখা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ছাত্রনেতা জানান, আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসায় অগ্নিসংযোগে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।

অবশ্য ছাত্র-জনতার উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘থামুন! শান্ত হোন। সরকারকে কাজ করতে দিন। বিচার ও সংস্কার হবেই। ফেসবুক পোস্টে তিনি আরো লিখেনÑ আমি জানি এ উত্তপ্ত মৌসুমে কেউ থামতে বলবে না আপনাদের। কিন্তু, আপনারা গালি দিলেও বলব, থামুন। দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিন, হঠকারিতা করবেন না। অভ্যুত্থানের ফসল নষ্ট করবেন না। শত্রুরা আপনাদের যেভাবে দেখতে ও দেখাতে চায়, সে পথে না যাওয়াই এ দেশের জন্য ভালো।’

ভারতে পালানোর পর হাসিনা জুডিশিয়াল ক্যু, সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যু, পাহাড়ে অশান্তি, গার্মেস্টস সেক্টর ধ্বংসসহ নানা ষড়যন্ত্র করেছে। পাচার করা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে বিদেশে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। সবকিছু ব্যর্থ হওয়ায় এখন নতুন ষড়যন্ত্র করছে। হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছিল হাসিনার পালানোর ১৮০তম দিন। এদিন তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ফেসবুক পেইজে লাইভে বক্তৃতার ঘোষণা দেন। তার সিদ্ধান্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ও অংশ নেয়া মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। শেখ হাসিনাও সেই বক্তৃতায় অন্তর্বর্তী সরকার ও জনগণের উপর ‘বিষ উদগিরণ’ করেন। ফেসবুকে দেয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্ট বিক্ষুব্ধ তরুণরা লুফে নেয়। প্রতিবাদে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা হাসিনার বক্তৃতা শুরু করার সময় ধানমন্ডি ৩২-এর ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে বুলডোজার দিয়ে ভবন ধ্বংস করে দেন। ওই বাড়িতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও ওই বাড়িতে বসেই গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। শেখ হাসিনা ১৫ বছর ওই বাড়িকে ‘ষড়যন্ত্রের আতুড়ঘর’ করে তুলেছিল। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার দাবি বাড়িটির নিচে ‘আয়নাঘর’ সন্ধান পেয়েছেন এবং সেখানে মানুষের মাথার চুল, হেলমেট পাওয়া গেছে। তাদের ধারণাÑ গুম করে সেখানে মানুষকে রাখা হতো। হাসিনার জুলুম-নির্যাতনের শিকার লাখ লাখ ভুক্তভোগী মানুষ ধানমন্ডির ৩২ নম্বরকে তাদের নিপীড়কের প্রতীক মনে করেন। তাই ইট-বালি দিয়ে তৈরি একটি বাড়ির প্রতিটি কনা ধ্বংস করে দেয়া হয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ধানমন্ডির পুরনো ৩২ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাড়ি এবং ধানমন্ডির ৫ নম্বর রোডের সুধাসদন আক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে বিক্ষুব্ধ মানুষ তাদের অঞ্চলের লুটেরা ও ১৫ বছরের নির্যাতনকারীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার উস্কানিতেই ছাত্র-জনতা ৩২ নম্বর ভেঙে দিয়েছে। তবে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা হাসিনাকে প্রতিহত করাই তাদের একমাত্র ক্ষোভের কারণ নয়, তারা সরকারের হোমিওপ্যাথি নীতি মেনে নিতে পারছেন না। ৩২ নম্বরে অগ্নিসংযোগে অংশ নেন এমন কয়েকটি ছাত্র-সংগঠনের নেতাকর্মীরা জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বিচার কার্যক্রমে ধীরগতি, ছয় মাসেও আন্দোলনের সব শহীদ ও আহতের ক্ষতিপূরণ এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে না পারা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, হাসিনার অলিগার্ক আমলাদের চাকরিচ্যুত না করা, হাসিনার নির্দেশে জুলাইয়ে প্রকাশে গুলি করে ছাত্র-জনতা হত্যাকারী পুলিশ সদস্যদের চাকরিতে রাখা, বিভিন্ন মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর পরও গ্রেফতার না করা, নতুন ভ্যাটের ফলে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন কারণে বিক্ষুব্ধ। তারা মনে করছেন, সরকার যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। ছাত্র-সংগঠনের নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারা যা প্রত্যাশা করেছিলেন, তেমন পরিবেশ তৈরি করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এখনো ছাত্রলীগ কোটায় বিসিএস চাকরিপ্রাপ্ত আমলাদের চাকরিচ্যুত না করায় তারা ক্ষুব্ধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রীয়তায় বিতর্কিত নেতা গাজীপুরের মো. জাহাঙ্গীর ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে তোলার হুমিক দিচ্ছে; হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে পালানো পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে সরকার উৎখাতের হুঙ্কার দিচ্ছে। বেনজীরের বক্তব্যে পরিষ্কার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে এখনো আওয়ামী লীগের অলিগার্করা চাকরি করছে। এসব দেখেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্লিপ্ততাসহ নানা কারণে দ্রোহের আগুনে পুড়ছে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেশের সব নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হয়ে শেখ হাসিনার পরিবারের সম্পত্তি ধ্বংস থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের নেতারা দেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে ফেলে গেছে। যতক্ষণ আমরা সতর্ক থাকব এবং নিজেদের নীতি নৈতিকতা বজায় রাখব, ততক্ষণ তাদের ফিরে আসার আর কোনো সুযোগ নেই। তাদের সম্পত্তিতে যেকোনো আক্রমণকে তারা আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করার এবং তাদের বানোয়াট গল্প প্রচার করার সুযোগ হিসেবে নেবে। বিশ্ব আমাদের সাথে আছে। এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলার যেকোনো অবনতি বিশ্বকে ভুল বার্তা দেবে।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ কোনো জাতীয় সম্পদের ক্ষতি না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ধানমন্ডি ৩২-এর বাড়িটা ৫ আগস্টই ধূলিসাৎ করে দেয়া উচিত ছিল, যেটা পরবর্তীতে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছে। অথচ ৫ আগস্টের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পরে সবচেয়ে স্বাধীনতা ভোগ করছে আওয়ামী লীগ। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কমেন্টে হুমকি-ধমকির স্বাধীনতা উপভোগ করছে। তাদের মধ্যে কোনো ভয়ভীতি নেই। তারা এখনো হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে। আমলা ও পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক করে হাসনাত বলেন, সিভিল সোসাইটিতে যারা রয়েছেন, সিভিল সার্ভিসে যারা রয়েছেন, পুলিশে যারা রয়েছেন; আমরা আপনাদের এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই, মানুষ আপনাদের সমর্থন করবে। আওয়ামী লীগ আপনাদের নিয়োগ দিয়েছে, সুযোগ দিয়েছে, সুবিধা দিয়েছে কিন্তু জনগণের বিপক্ষে আপনাদের দাঁড় করিয়েছে। জনগণের বিপক্ষে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই জিনিসটা আপনারা বুঝুন, জনগণের জন্য কাজ করুন, জনগণের শক্তিটা অনুভব করুন। আমি খুব করে চাইব, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পরিণতি যেন সচিবালয়ের না হয়। এটা মন থেকে চাইব- সচিবালয়ের পরিণতি যেন এ বছর না হোক, ১০ বছর পরে, ১৫ বছর পরে ২০ বছরে সচিবালয়ের পরিণতি যেন ধানমন্ডি ৩২, গণভবনের মতো না হয়।


ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা ইস্যুতে হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে। দীর্ঘ ছয় মাস পরও অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনৈতিক দুরবস্থা নিরসন করতে পারেনি। বেকারত্ম দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি; বরং হাসিনার অলিগার্ক আমলাদের পদ-পদবিতে রেখে সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের ভারতে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে গুম-খুন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট এমনকি ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় প্রকাশে গুলি করে মানুষকে পাখির মতো মেরেছে তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। কয়েকটি করে খুনের মামলার আসামি দেশ-বিদেশে থেকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন এবং সরকার উৎখাতের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা হুমকি দিচ্ছেন পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে ছাত্র-জনতাকে জবাব দেয়া হবে। জাহাঙ্গীর নামের গাজীপুরের এক নেতা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘ঢাকায় যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা থাকতে না পরেন তাহলে কাউকে ঢাকায় থাকতে দেয়া হবে না।’ তারপরও হুঙ্কার দেয়া বিতর্কিত নেতাদের গ্রেফতারের কোনো উদ্যোগ নেই।


হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ায় অস্থিরতা নিয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে বিএনপি। দলটি বলেছে, এর ব্যত্যয় হলে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির বিস্তার ঘটবে। বিএনপি বলেছে, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার হাসিনা এবং তার দোসরদের উস্কানিমূলক আচরণ, জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও ক্রোধের জন্ম দিয়েছে। এরই ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচারের স্মৃতি, মূর্তি, স্থাপনা ও নামফলকগুলো ভেঙে ফেলার মতো জনস্পৃহা দৃশ্যমান হয়েছে।’


বিএনপি আরো বলেছে, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারদের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা এবং আহত ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, নিন্দিত ঘৃণিত পলাতক স্বৈরাচার ও তার দোসরদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা, পরাজিত ফ্যাসিস্টদের উস্কানিমূলক তৎপরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অতি জরুরি অগ্রাধিকার, অথচ এসব বিষয়ে দৃশ্যমান ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।’


বিএনপি ও হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য অভিন্ন। ফলে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আগেই অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীলদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। পরিস্থিতির অবনতি কারো জন্যই মঙ্গলজনক হবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
Toto Gacor
bacan4d
bacansport login
slot gacor
pasaran togel resmi
bacan4d
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d toto
Slot Casino
bacan4d toto
slot gacor
bacan4d
bacan4d
Slot Toto
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto slot
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
Slot Gacor
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports
bacansports
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d
slot gacor
pasaran togel resmi
situs toto
bacan4d login
pasaran togel
pasaran togel
situs toto
bacan4d
bacan4d gacor
bacan4d slot
bacan4d rtp
bacan4d rtp
bacan4d slot gacor
toto slot
situs toto
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bandar togel
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor