Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

জুলাই সনদের খসড়া: নির্বাচনের আগেই সংস্কার বাস্তবায়ন

আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়ন হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’। বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কারগুলো ভোটের আগেই কার্যকর করবে সরকার। অঙ্গীকারনামায় এ শর্ত রেখে সনদের খসড়া করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইন, আদালতের রায়ের ওপর প্রাধান্য পাবে সনদ। সংবিধানের মতো সনদেরও ব্যাখ্যা দেওয়ার এখতিয়ার থাকবে সুপ্রিম কোর্টের।  সনদের কোনো বাক্য, শব্দ সংবিধান-আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে, সনদ প্রাধান্য পাবে। 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতামতে খসড়াটি চূড়ান্ত করার পর আগামীকাল শুক্রবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া পাঠানো হবে। এরপর সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে। খসড়ায় ৯টি অঙ্গীকার রয়েছে। সনদকে বিশেষ সাংবিধানিক ব্যবস্থা স্বীকৃতি দিয়ে অধ্যাদেশ জারি এবং সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না–  প্রাথমিক খসড়ায় এ দুই অঙ্গীকার থাকলেও গতকাল বুধবারের আলোচনায় তা বাদ গেছে। কমিশন সূত্র সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছে। 

সনদের অঙ্গীকারনামা অংশে কী রয়েছে, তা প্রকাশ না করলেও কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সমকালকে বলেছেন, রাজনৈতিক দল এবং বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যেসব মতামত পাওয়া গেছে, এর ভিত্তিতে খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। প্রাথমিক খসড়ায় বিভিন্ন মতামত সংযোজন, বিয়োজন নিয়মিতই হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, শুক্রবারের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়া পাঠানো সম্ভব হবে। 

কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেসব সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা উল্লেখ থাকবে জুলাই সনদে। সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারে প্রধান উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর থাকবে। 

যেভাবে সনদ হচ্ছে

সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুদক এবং পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৬৬ সুপারিশ নিয়ে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দফার সংলাপে ৬২টি সুপারিশে দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে। গত ৩ জুন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২৩ দিন হয় দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ। এতে অংশ নেওয়া ৩০ রাজনৈতিক দল এবং জোট আরও ১১টি সুপারিশে একমত হয়। কমিশন বাকি ৯টি সুপারিশে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ঐকমত্যের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। 

এর সাতটিতে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) দিয়েছে। এই সাতটির মধ্যে তিনটিতে জামায়াতে ইসলামীর এবং একটিতে এনসিপিরও আপত্তি রয়েছে। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল নারী প্রার্থীদের সরাসরি মনোনয়ন দেওয়া-সংক্রান্ত সুপারিশে আপত্তি দিয়েছে। সিপিবি, বাসদসহ বাম দলগুলোর নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তনে। রাজনৈতিক দলগুলো জানিয়ে রেখেছে, যেসব বিষয়ে তারা আপত্তি জানিয়েছে, ক্ষমতায় গেলে সেগুলো বাস্তবায়ন করবে না। 

গত ২৮ জুলাই জুলাই সনদের একটি নমুনা রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছিল কমিশন। এতে সাত দফা অঙ্গীকার ছিল। 

চতুর্থ দফায় বলা হয়েছিল, যেসব সংস্কারে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আগামী সংসদে গঠিত সরকার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে। 

বিএনপি, এলডিপি, ১২ দলীয় জোট, সমমনা ১১ দল, এনডিএম, লেবার পার্টি এতে সায় দিলেও; রাজি নয় জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ বেশি সংখ্যক দল। তাদের দাবি, নির্বাচনের আগেই সংস্কার হতে হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। সনদের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। 
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ২৮টি দল প্রথম খসড়া সনদের বিষয়ে মতামত জানিয়েছে। ১৮টি দল নির্বাচনের আগে সংস্কার এবং সনদের আইনি ভিত্তি চেয়েছে। জামায়াত এ দাবিতে ইতোমধ্যে রাজপথে নেমেছে।

নতুন খসড়ায় যা আছে

ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ, গণভোট, গণপরিষদ, সংসদ নির্বাচন, পরবর্তী সংসদসহ ছয়টি বিকল্প দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো পরবর্তী সংসদে সংস্কারের বাস্তবায়ন চায়। বিএনপির অবস্থান, সংসদ ছাড়া সংবিধান সংস্কারের উপায় নেই। বামগুলোরও একই অবস্থান। 

জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকারসহ কয়েকটি দল গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছে। এ দলগুলোর ভাষ্য, ১৯৭৬ এবং ১৯৭৭ সালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেভাবে সংসদের বাইরে সংবিধান পরিবর্তন করেছেন, এবারও একই পদ্ধতিতে সংস্কার করতে হবে। পরিবর্তিত সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে। পরবর্তী সংসদে তা অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হবে।  গণপরিষদের মাধ্যমে সংস্কারের বাস্তবায়ন চায় এনসিপিসহ কয়েকটি দল। 

সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেই পথ খুঁজতে গত রোববার কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়। ছয় বিশেষজ্ঞ মতামত দেন, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনায়, অধ্যাদেশ কিংবা গণভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের আগে সংস্কার কার্যকর করা যেতে পারে। অভিমত সংসদের বাইরেও সংবিধান সংস্কার সম্ভব। কারণ, বর্তমান সরকার সংবিধান অনুযায়ী নয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গঠিত। ফলে সংবিধানের বাইরে সমাধান খুঁজতে হবে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন আন্তর্জাতিক স্বীকৃত। জুলাই অভ্যুত্থানের একই অধিকার রয়েছে। আলোচনা হয়, সরকারের লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও) জারির ক্ষমতা আছে কিনা তা নিয়েও।

সনদের খসড়ার অঙ্গীকারনামার দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছে, জনগণের সর্বজনীন অভিপ্রায়ের সুস্পষ্ট এবং সর্বোচ্চ অভিব্যক্তির ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণয়ন করায় সনদের সব বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত বিদ্যমান আইন ও আদালতের রায়ের ওপর প্রাধান্য পাবে। 

এ অংশে আগে বলা হয়েছিল, অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত স্বীকৃতি দেওয়া হবে। অধ্যাদেশ সংসদ গঠনের ৩০ দিনের মধ্যে অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা থাকায় কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামতে অধ্যাদেশ জারির চিন্তা বাদ দিয়েছে। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, অধ্যাদেশ-পরবর্তী সংসদে অনুমোদন না হলে পুরো সনদই ঝুঁকিতে পড়তে পারে। 

অঙ্গীকারনামার তৃতীয় দফায় বলা হয়েছে, সনদের ব্যাখ্যা দেবে আপিল বিভাগ। প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়েছিল, প্রয়োগ ও বৈধতাসংক্রান্ত প্রশ্নেরও জবাব দেবে আপিল বিভাগ। তবে তাও বাদ দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ দফায় বলা হয়েছে, সনদকে আইনগত বলবৎ হিসেবে গণ্য করা হবে। এই বিষয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না– বলে যে শর্ত ছিল তা বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, দায়মুক্তির বিতর্কিত পথে তারা যেতে চান না। 

পঞ্চম দফায় বলা হয়েছে, সনদ বাস্তবায়নে সংবিধান ও আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্তন, লিখন, পুনর্লিখন করতে হবে। পরের দফায় বলা হয়েছে, সনদের আইন সুরক্ষায় পূর্ণ নিশ্চয়তা থাকবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সংবিধানে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে রাজনৈতিক দলগুলো অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে। জুলাই অভ্যুত্থানের হত্যার বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আহতদের পুনর্বাসনের অঙ্গীকার রয়েছে খসড়া সনদের অষ্টম দফায়। 

নবম দফায় রয়েছে, সংস্কারের যেসব সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত হবে, সেগুলো কালক্ষেপণ ছাড়াই সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়নে যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। 

বিএনপি আগে থেকেই বলে আসছে, সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই– এমন সংস্কার প্রস্তাবগুলো সরকার চাইলে বাস্তবায়ন করতে পারবে। তবে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে– এমন সংস্কার আগামী সংসদেই হতে হবে। কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন সমকালকে বলেছেন, আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় এসব বিষয় চূড়ান্ত করা হবে। সনদে ভাষাগত আরও কিছু অদল-বদল হতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot toto