গাজায় দুর্ভিক্ষ: জাতিসংঘ মহাসচিবের কড়া বার্তা, ৩টি বিষয় নিশ্চিত করার আহ্বান

গাজার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের চিত্র তুলে ধরেছে জাতিসংঘ সমর্থিত আন্তর্জাতিক খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা আইপিসি। সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা শহর ও আশপাশের এলাকায় ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। এ রিপোর্ট প্রকাশের পর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গুতেরেস বলেন, ‘যখন মনে হচ্ছিল গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতি বোঝাতে আর কোনো শব্দ অবশিষ্ট নেই, তখন নতুন একটি শব্দ যোগ হলো—দুর্ভিক্ষ।’ তাঁর মতে, এটি কোনো হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা নয়, বরং মানুষের তৈরি এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। তিনি এটিকে নৈতিকতার চরম ব্যর্থতা এবং মানবতার প্রতি অবমাননা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
মহাসচিব আরও ব্যাখ্যা করেছেন, দুর্ভিক্ষ শুধু খাদ্যের অভাব নয়, এটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিফলন। এখানে চিকিৎসা, খাদ্য, ওষুধ—সবকিছু ইচ্ছাকৃতভাবে বাধাপ্রাপ্ত বা ধ্বংস করা হয়েছে।
গুতেরেস বিশেষভাবে ইসরায়েলের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ইসরায়েলের দায়িত্ব রয়েছে গাজার সাধারণ মানুষের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা আর এই পরিস্থিতিকে দায়মুক্তির সঙ্গে চলতে দিতে পারি না। আর কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। পদক্ষেপ নেওয়ার সময় আগামীকাল নয়—এখনই।’
জাতিসংঘ মহাসচিব অবিলম্বে তিনটি বিষয় নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন:
- যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা।
- গাজায় আটক সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া।
- মানবিক সহায়তার পূর্ণ ও বাধাহীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
গুতেরেসের এই বক্তব্য বিশ্বকে মনে করিয়ে দেয় যে, গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষ শুধু মানবিক সংকট নয়, এটি রাজনৈতিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতার কঠিন পরীক্ষা।