দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে সামরিক জমির মালিকানা চাইলেন ট্রাম্প

ট্রাম্প বলেন, ‘সামরিক ঘাঁটি রক্ষার জন্য আমরা দূর্গ তৈরি করেছি। তাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছি। দক্ষিণ কোরিয়াও আমাদের সাহায্য করেছে। কিন্তু আমি চাই, আর লিজ নয়, দক্ষিণ কোরিয়া ওই জমি যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন করে দিক।’
যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং। সোমবার (২৫ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠক হয়েছে তার। বৈঠকে লি-র কাছে ট্রাম্প প্রস্তাব দিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সমুদ্র অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটির জমি যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন করে দেয়া হোক।
এছাড়াও বৈঠকে উত্তর কোরিয়া নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। লি জানিয়েছেন, আলোচনায় ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার প্রধান কিম জং উনের সাথে বৈঠকে বসার আগ্রহ দেখিয়েছেন।
ট্রাম্প যা বললেন
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দুই প্রেসিডেন্ট। সেখানে ট্রাম্প বলেছেন, ‘কিম জং উন ও উত্তর কোরিয়ার সাথে আমার অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক।’ শুধু তা-ই নয়, ট্রাম্প জানিয়েছেন, কিমের বোন কিম ও জংয়ের সাথে তার আরো ভালো সম্পর্ক। উল্লেখ্য, কিম ও জং উত্তর কোরিয়ার রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এরপরেই ট্রাম্প বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন কিম ভালো নন। আমি তা মনে করি না। আমি কিছুদিনের মধ্যেই তার সাথে আলোচনায় বসতে আগ্রহী।’
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একাধিক বিষয়ে সম্পর্ক তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন। জাহাজ শিল্পের মতো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছেন তিনি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, লি-র সাথে বৈঠকে বিভিন্ন শিল্পের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
সামরিক অঞ্চলের মালিকানা
দক্ষিণ কোরিয়ার সমুদ্র অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি আছে। এদিনের বৈঠকে লি-র কাছে ট্রাম্প প্রস্তাব দিয়েছেন, ওই সামরিক ঘাঁটির জমি যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন করে দেয়া হোক।
ট্রাম্প বলেন, ‘সামরিক ঘাঁটি রক্ষার জন্য আমরা দূর্গ তৈরি করেছি। তাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছি। দক্ষিণ কোরিয়াও আমাদের সাহায্য করেছে। কিন্তু আমি চাই, আর লিজ নয়, দক্ষিণ কোরিয়া ওই জমি যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন করে দিক।’
লি অবশ্য এনিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেছেন, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ট্রাম্পের চেষ্টা চোখে পড়ার মতো। ট্রাম্পকে শান্তিস্থাপক বলে ব্যাখ্যা করেছেন লি।
ট্রাম্পের তির্যক মন্তব্য
লিয়ের সাথে বৈঠকের আগে ট্রাম্প অবশ্য দক্ষিণ কোরিয়াকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প পোস্ট করেন, ‘কী চলছে দক্ষিণ কোরিয়ায়? বিদ্রোহ? আমরা এসব চাই না, আমরা সেখানে ব্যবসা করতে চাই।’
ঠিক কী বিষয়ে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি তিনি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে এক রিপোর্টার তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ‘আমি শুনেছি দক্ষিণ কোরিয়ায় চার্চের ওপর আক্রমণ হয়েছে। তারা আমাদের সামরিক ঘাঁটিতে ঢুকেও তথ্য সংগ্রহ করেছে। এমনটা হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। তবে এ খবর সত্যি কি-না, আমি জানি না।’
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন চার্চে অভিযান চালিয়েছে দেশের প্রশাসন। এই ধরনের চার্চ যুক্তরাষ্ট্রে খুবই জনপ্রিয়।