Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

নিত্যপণ্যের চড়া দাম স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম

  • এক দিক সামাল দিতে গিয়ে আরেক দিকে টান
  • কৃষক পর্যায় থেকে খুচরায় কঠোর তদারকির পরামর্শ

নিত্যপণ্যের অসহনীয় দামে দিশাহারা সাধারণ মানুষ। মূল্যবৃদ্ধির পাগলা ঘোড়ার লাগাম টানা যাচ্ছে না কোনোভাবেই। মানুষের আয় না বাড়লেও এভাবে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে তাদের টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। এক দিক সামাল দিতে গিয়ে টান পড়ছে আরেক দিকে।

অনেকটাই হাঁসফাঁস অবস্থা। মধ্যবিত্ত লজ্জায় কিছু না বললেও নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা আরো করুণ। তারা রীতিমতো সংগ্রাম করছে জীবনযুদ্ধে।

তথ্য-উপাত্ত বলছে, গত দুই মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ, ডাল, মুরগির ডিম, সোনালি মুরগি, মাছ ও কয়েকটি সবজির দাম সর্বোচ্চ ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে এখন বাজারে গেলেই মানুষের অসহায় দৃষ্টি চোখে পড়ে। সাধারণ মানুষ আসলে কী করা উচিত বুঝে উঠতে পারছে না। বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা এক রকম কথা বলেন, আবার আড়তদাররা বলেন আরেক রকম। ক্রেতাদের কথা শোনার কেউ নেই। কেন বাড়ছে প্রতিনিয়ত নিত্যপণ্যের দাম তার সদুত্তর পাওয়াও যাচ্ছে না।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ভোক্তারা একরকম অসহায় হয়ে পড়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, বাজার তদারকির অভাব, সরবরাহব্যবস্থার দুর্বলতা এবং আয়-ব্যয়ের অসামঞ্জস্য। ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে সীমিত করে দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ও বাজার নিয়ন্ত্রণ জোরদার না করলে ক্রমবর্ধমান দাম সাধারণ মানুষের জীবনে আরো চাপ তৈরি করবে।

রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার এবং সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির ৪ সেপ্টেম্বর ও ৩ জুলাইয়ের বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত দুই মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩৩ থেকে ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় উঠেছে। দেশি মুরগির বিকল্প হিসেবে সোনালি মুরগির চাহিদা বাজারে ব্যাপক, যার কারণে এই মুরগির দামও থাকে সব সময় চড়া। সোনালি মুরগি কেজিতে ৭ শতাংশ দাম বেড়ে মানভেদে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মসুর ডালের দামও কেজিতে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। চাষের মাঝারি সাইজের (দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের) রুই মাছ কেজিতে ১২ থেকে ১৪ শতাংশ বেড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুন কেজিতে ৩৩ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়ে মান ও জাতভেদে ১০০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও কয়েক দিন আগে ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল দাম। এখন বাজারে যেসব পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে সেগুলো মূলত ভারত থেকে আমদানীকৃত। গত দুই মাসের ব্যবধানে টমেটো কেজিতে ৬০ থেকে ৮৭ শতাংশ দাম বেড়ে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা কেজিতে ২৯ থেকে ৩৩ শতাংশ দাম বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটি কেজিতে ৪৩ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য বেশির ভাগ সবজি ৮০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে না। বর্তমানে বাজারের সবচেয়ে সস্তা সবজি হিসেবে পরিচিত পেঁপে ও আলু। সবজি দুটি যথাক্রমে ৩৫-৪০ ও ২৫-৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারে কথা হলে ক্রেতা হেলাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে সরকারের কোনো নজর নেই, যার কারণে এই টালমাটাল অবস্থা চলছে। বাজারে এখন কোনো কিছুই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নেই। বিক্রেতারা নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়েই যাচ্ছেন। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য করা যায় না। সীমিত আয়ের মানুষকে প্রতি মাসে ঋণ করতে হচ্ছে। ইচ্ছা করলেও এখন আর পছন্দের মাছ কিনতে পারি না। ছোট মাছের দাম আরো চড়া। এক কেজি ছোট চিংড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ-মাংস কিনতে গেলে কয়েক হাজার টাকা নিয়ে যেতে হয়। সরকারের উচিত বাজার তদারকি করে মূল্য কেন বাড়ছে সেটা খুঁজে বের করা।’

রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. রবিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সবজির দাম বেশি হওয়ার কারণে বাজারে সবজির বিক্রিও আগের তুলনায় কমে গেছে। এতে আমরা এখন লোকসানে রয়েছি। মূলত গত কয়েক মাসে টানা বৃষ্টির কারণে কৃষকের সবজিক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যার কারণে বাজারে সরবরাহ কম।’ সবজির সঙ্গে ডিম, মুরগি ও মাছের সরবরাহের ঘাটতির কারণে বাজারে দাম বাড়তি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভলান্টারি কনজিউমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটির (ভোক্তা) নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বর্তমানে ভোক্তারা সবজির বাজারে বড় অসহায় হয়ে পড়েছে। পেঁপে ছাড়া কোনো সবজিই ৮০ টাকার নিচে কেনা যায় না, বেশির ভাগ সবজির দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকা। বেগুন, যা বাংলাদেশের ঘরে ঘরে একটি জনপ্রিয় সবজি, সেটিও এখন ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই পরিস্থিতির মূল কারণ হলো—যখন বাজার অস্থির হয়, তখন তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেগুলো নেওয়া হয় না। ভোক্তারাও এত বেশি সহনশীল হয়ে পড়েছে যে এই কঠিন পরিস্থিতিকে তারা ভাগ্যের ফের বলে মনে করে। এ থেকে দ্রুত উত্তরণের আশা করে না।’ তিনি বলেন, “সরবরাহশৃঙ্খলে বিভিন্ন স্থানে ‘ভ্যালু অ্যাডিশন’ হয়, যা নৈতিক, অনৈতিক, নিয়মমাফিক বা নিয়মবহির্ভূত হতে পারে এবং এর ফলেই জিনিসের দাম বাড়ে। উদাহরণস্বরূপ, নরসিংদীর বাজারে যে বেগুনের দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে থাকে, তা ঢাকায় আসতে আসতে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়।”

খলিলুর রহমান সজল বলেন, ‘দেশের ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের বারবার অনুরোধ ও দাবি সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কোনো কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে না। তারা যদি বাজারে তাদের হস্তক্ষেপ বজায় রাখত, তাহলে ভোক্তাসাধারণ এর সুফল পেত। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, চালের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের দাম চালের মৌসুমেই বেড়ে গিয়েছিল এবং তা এখনো বাড়তির দিকেই আছে, যা সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এটিকে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর একটি বড় ব্যর্থতা বলে মনে করা হচ্ছে। ভোক্তাদের এই অসহায়ত্ব থেকে রক্ষা করার জন্য বাজারে নিয়মিত হস্তক্ষেপ চালু করার এবং এটিকে একটি স্থায়ী ব্যবস্থায় পরিণত করার দাবি জানানো হয়েছে। এটি একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। শুধু আজকের জন্য বা কালকের জন্য একটি হস্তক্ষেপ যথেষ্ট নয়। এই ব্যবস্থা না আনা পর্যন্ত ভোক্তাদের অসহায়ত্ব দূর হবে না।’

বাজার পর্যালোচনা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা যায়, বাজারের সরবরাহ ও বিপণন ব্যবস্থায় একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কম দামে পণ্য কিনে তা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে। এই প্রক্রিয়ায় কৃষকের খরচ তুলতে কষ্ট হলেও মধ্যস্বত্বভোগীরা ঠিকই তাদের অতিমুনাফার অংশটি লুটে নিচ্ছে। জানা যায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে পণ্যের দাম যতটা কম, তার কয়েক গুণ বেশি খুচরায়। মাঝখানে খুব একটা দর বাড়া বা খরচ না হলেও নানা অজুহাতে খুচরায় কয়েক গুণ বেশি দাম নেওয়া হয়। ভোক্তারা বলছে, এই চক্র ভাঙতে হবে সবার আগে। এটি কঠিন না হলেও তা করছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
toto 4d
slot toto
slot gacor
toto slot
toto 4d
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot gacor
slot gacor
bacan4d
slot gacor
paito hk
bacan4d
slot gacor
bacansports
slot gacor
fenomena1688
pasaran togel
bacan4d
slot demo
bacan4d
slot toto
slot toto
slot toto