Bangladesh

অতিদারিদ্র্য বৃদ্ধির শঙ্কা

বিদেশি বিনিয়োগ এখনো শুধুই আশার বাণী রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, অব্যাহত মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক খাতে দুর্বলতা, ব্যাংকিং খাতে অনিশ্চিত, সম্পদের মানের অবনতি, দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিঘ্ন , সংস্কার বাস্তবায়নে দুর্বলতা, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ঘাটতি দেশের অর্থনৈতিক গতিধারাকে করেছে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন


ছাত্র-জনতার বিপ্লবে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর সবার প্রত্যাশা ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তি ইমেজ এবং ক্যারিশমায় দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। ঘুরে যাবে আমজনতার ভাগ্যের চাকা। অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তৎপরতায় বিভিন্নভাবে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আমরা আশ্বস্ত হচ্ছি। বিদেশ থেকে শুধু বড় বড় বিনিয়োগের হাতছানির খবর পাচ্ছি, কিন্তু ছিটেফোঁটা বিনিয়োগও আসছে না। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ার পেছনে প্রথমে দেশের ভেতরে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগের যথাযথ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেশীয় বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। ৯ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৩৭ শতাংশেরও কম, বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা, ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা, এলসি নেই, নতুন করে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে না, শ্রমিক অসন্তোষসহ পরিবেশ না থাকায় অনেক ছোট-বড় শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমনকি ব্যবসার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে থেকে ‘নতুন ঋণ’ চাহিদাও নেই। অধিকাংশ ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে। তাই দেশি বিনিয়োগকারীরাই বিনিয়োগে আসছেন না; বরং ব্যবসা গুটিয়ে ফেলছেন। আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি গত বছরের শেষ দিকে পাওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এমনকি ব্যবসার জন্য অন্যতম সহযোগী ব্যাংক খাতও গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের অমূলক বক্তব্যে বিপর্যস্ত। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আরো দুর্বল করা হয়েছে। নানামুখী সঙ্কটে মানুষের হাত খালি, অর্থের প্রবাহ নেই। যে কারণে দেশে বেড়েছে দারিদ্র্যের হার। একই সঙ্গে বেড়েছে অতিদারিদ্র্যের হারও। এমনকি মানুষেরা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পারসেপশন সার্ভে প্রতিবেদনেও বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে অতিদারিদ্র্যের হার গোটা দেশেই বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে গত বুধবার বিশ্বব্যাংক এক পূর্বাভাসে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ধীরগতি এবং শ্রমবাজার সঙ্কুচিত হয়ে আসার কারণে বাংলাদেশে চলতি বছর নতুন করে ৩০ লাখ মানুষ অতিদারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারে।

আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা ব্যবহার করে বিশ্বব্যাংক এই পূর্বাভাস দিয়েছে। ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে দারিদ্র্য পরিস্থিতির এই অবনতির আশঙ্কা করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে বলা হয়েছে ২০২৩-২৪ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারে, যাদের দৈনিক আয় ২ দশমিক ১৫ ডলারের নিচে। এছাড়া সংস্থাটি সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী ৩০ জুন শেষ হতে চলা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে আসবে মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশে, যা গত ৩৬ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ। অথচ মাত্র চার মাস আগেই, জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক ৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করেছিল। তবে বিনিয়োগ কমে যাওয়া, এখনো বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আর্থিক খাতে দুর্বলতা ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে সেই আশাবাদও মলিন হয়ে গেছে। এছাড়া গত মার্চে দেশের ব্যাংকিং খাতেরও ভবিষ্যত যে অনিশ্চিত সে শঙ্কা প্রকাশ করেছিল ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস। মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়েছে। আগে ঋণমান ছিল ‘বি-ওয়ান’, এখন তা নেমে এসেছে ‘বি-টু’ পর্যায়ে। এতে দেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ হয়ে গেছে। মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পদের মানের অবনতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মুডিসের রিপোর্টের এক মাসের মাথায় বিশ্বব্যাংকও শুনিয়েছে হতাশার কথা।

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এই পূর্বাভাস দেশের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলোড়ন তুলেছে। তাদের মতে, বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসের এই অবনমন শুধু একাডেমিক সমন্বয় বলে ধরে নেয়ার অবকাশ নেই; বরং একই সঙ্গে এটি নির্মম সতর্কবার্তাও বটে। তাদের মতে, একদিকে জীবনযাত্রার খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে মজুরি বাড়ছে নাÑ ফলে প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিনিয়োগ কম, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি এবং রাজস্ব ঘাটতিও এই সঙ্কটকে আরো বাড়াচ্ছে। সমাধানে তারা বলছেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি জোরদার করতে হবে এবং আরো মানুষকে এই কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং মানুষ দারিদ্র্যসীমা থেকে উপরে উঠতে পারবে।

বিশ্বব্যাংক যে চিত্র তুলে ধরেছে তা দেশের বাস্তবতাই, বলে উল্লেখ করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
সূত্র মতে, স্বৈরাচার হাসিনার ভারতে পলায়ন পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মকা-ে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ও বিনিয়োগে মন্দার রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের আশ্বাস মিললেও বর্তমান অর্থনীতিতে উদ্দীপনা সৃষ্টিতে কোনো সুখবর নেই। এছাড়া রাজস্ব আহরণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও কমছে। রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ছাড়া বর্তমান অবস্থা চলমান থাকলে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ ভয়াবহ সঙ্কট দেখা দিতে পারে। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে বিনিয়োগে মন্দাদশা কাটার আপাতত কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

গত বুধবার বিশ্বব্যাংকের ‘ম্যাক্রো পোভার্টি আউটলুক’, যা সাউথ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আপডেটের অংশ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে ২০২৩-২৪ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারে, যাদের দৈনিক আয় ২ দশমিক ১৫ ডলারের নিচে। প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থান হ্রাসÑ বিশেষ করে নি¤œআয়ের পরিবারের কল্যাণে বড় আঘাত হেনেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে প্রায় ৪ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন, এবং স্বল্প দক্ষ কর্মীদের মজুরি ২ শতাংশ ও উচ্চ দক্ষদের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এতে চরম দারিদ্র্যের হার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। ফলে অর্থনৈতিক দৈন্যতায় পড়বে আরো ৩০ লাখ মানুষ।

বিশ্বব্যাংক জানায়, আয় বৈষম্য আরো বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা বিগত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে ঊর্ধ্বমুখী। জিনি সহগ পরিমাপে ধরে নেয়া হয়, কারো নিট আয় বা সম্পদ ঋণাত্মক নয়। এই জিনি সূচকে প্রায় এক পয়েন্ট বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে, তবে প্রবাসী আয় পাওয়া পরিবারগুলোতে তা কিছুটা কম হবে। এছাড়া অর্থনৈতিক টানাপড়েনের চাপ সামলাতে পাঁচটির মধ্যে তিনটি পরিবার তাদের সঞ্চয় ভেঙে জীবন চালাতে বাধ্য হবেÑ এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে।

জিনি (কেউ কেউ গিনিও বলেন) সহগ। মূলত এটি বৈষম্য মাপার একটি পদ্ধতি। এটি একটি অনুপাত বা ভগ্নাংশ আকারে প্রকাশ করা হয়, যার মান শূন্য থেকে ১-এর মধ্যে হয়। সবার আয় সমান হলে জিনি সূচক হবে শূন্য। এর অর্থ হলো চরম সাম্য অবস্থা বিরাজ করছে। আর সব আয় একজনের হাতে গেলে সূচকটি হবে এক। এটি আবার চরম অসাম্য অবস্থা। এই দুই সীমার মধ্যে সূচক যত বাড়ে, অসাম্য তত বেশি।

এদিকে প্রবৃদ্ধি নিয়েও বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে বলেছে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতির অনিশ্চয়তা-বিনিয়োগ, রফতানি ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকা-কে আরো দুর্বল করে দিতে পারে। তবে বাহ্যিক চাপ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে, যেমনÑ ব্যালান্স অব পেমেন্ট ঘাটতি হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হওয়া যার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিঘœ, সংস্কার বাস্তবায়নের দুর্বলতা, অব্যাহত মুদ্রাস্ফীতি, মৌসুমি জ্বালানি ঘাটতি এবং ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতাÑ অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে আরো পিছিয়ে দিতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০২৫ সালেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা না আসার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক ও দেশি-বিদেশি গবেষণা সংস্থাগুলোর মতে, চলতি বছর দেশে আরো ৩০ লাখ মানুষ অতি দারিদ্র্যের মধ্যে পড়বে। এতে অতি দারিদ্র্যের হার ৯ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। দুর্বল শ্রমবাজার, মূল্যস্ফীতির চাপ এবং মজুরি না বাড়ার কারণে গরিব মানুষের প্রকৃত আয় কমছে। যার ফলে অনেকেই অতি দরিদ্র হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন। একটি পরিবারে যদি এক সপ্তাহ কাজ না থাকে, তাহলেই তারা দারিদ্র্যের নিচে চলে যাচ্ছে।

এদিকে কয়েক মাস আগে দেশীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষণায়ও দেশের মানুষের করুণ অবস্থার বিষয়টি উঠে আসে। বিআইডিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশে গরিব ছিল ২৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ২০২৪ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৪৩ শতাংশে। একইসঙ্গে অতিদারিদ্র্য মানুষের সংখ্যা ৬ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশে। ২০২২ সালে গ্রামে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ২২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ২০২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৪ দশমিক ১০ শতাংশ। একইভাবে অতিদরিদ্র মানুষের হার ৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশে। শহরে দারিদ্র মানুষের হার ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এছাড়া অতিদারিদ্র্যের হার ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। বিআইডিএসের পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমান মানুষের অবস্থা যে খারাপ সেটি আমরা পেয়েছি। যেটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল রয়েছে।

সিপিডির প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, সামষ্টিক অর্থনীতির বিদ্যমান বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি এই পূর্বাভাসে উঠে এলেও অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের কারণে অর্থনৈতিক তথ্য-উপাত্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হওয়ার ফলেও এটি সম্ভব হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি। ড. মুস্তাফিজুর বলেন, অর্থনীতি বিগত এক বছরে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। তিনি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে বিনিয়োগে স্থবিরতা, প্রবৃদ্ধি হ্রাস ও চাকরি সৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে তিনি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতিকে সবচেয়ে ক্ষতিকর উপাদান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যা নি¤œ আয়ের ও আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারগুলোর ক্রয়ক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতির পরেও আজো অনেক নাগরিক এই দুর্বল সীমায় অবস্থান করছেন। শুধু দুই দিনের কাজ না পেলে প্রায় ২০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এই অর্থনীতিবিদ বলেন, তাই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। এর জন্য আর্থিক ও রাজস্ব নীতিকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হবে। তিনি সতর্ক করেন, বর্তমান ১০ শতাংশ পলিসি রেট (নীতি সুদহার) কমানোর সুযোগ নেই, যতক্ষণ না মূল্যস্ফীতি কমে। চাকরি সৃষ্টি ও প্রবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ উৎসাহিত করাও গুরুত্বপূর্ণ, তবে ব্যবসার ব্যয় কমানোও জরুরি। পরিবহন, লজিস্টিকস ও ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন জরুরি বলেও উল্লেখ করেন ড. মুস্তাফিজুর রহমান। একই সঙ্গে আগামী মাসেই ঘোষিত হতে যাচ্ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। এ প্রেক্ষাপটে তিনি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার আহ্বান জানান, যাতে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা নিশ্চিত করা যায় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor