যে দৃশ্য বিশ্বরোডে

শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা। আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড গোলচত্বরের দক্ষিণ পাশে সড়কের উপর দাঁড়িয়ে আছে ঢাকামুখী কয়েকটি বাস। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে ছেড়ে আসা এসব বাস সার্ভিসের কাউন্টার রয়েছে এখানে। উত্তর দিকে সিএনজি অটোরিকশার জটলা। দাঁড়িয়ে থাকা এসব গাড়ির কারণে চত্বর ঘুরে চলতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে অন্য যানবাহন। স্থানীয়রা জানান, এটি দীর্ঘদিনের চিত্র। খানাখন্দে সড়ক বেহাল হয়ে এ চত্বর কেন্দ্রিক ভয়াবহ যানজটেও এ দৃশ্যের পরিবর্তন হয়নি। একদিকে খানাখন্দ, আরেকদিকে সড়কের উপর স্টপেজে ব্যস্ত এই মহাসড়কে গাড়ি চলার পথ হয়ে পড়ে একেবারেই সীমিত।
তিশা বাসের চালক মো. শাহপরান জানান, এখানে তাদের ১০-১৫ মিনিটের স্টপেজ রয়েছে। গাড়ি বামে উপরে উঠিয়ে রেখেছি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় বিশ্বরোড মোড়ে সার্বক্ষণিক বিচরণ কুট্টাপাড়া গ্রামের মেহেদী হাসানের। তার দৃষ্টিতে গোলচত্বরের উত্তর পাশে নাসিরনগর, লাখাই এবং সরাইলের বিভিন্ন পথে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা এবং দক্ষিণ দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা ঢাকার বাসের কারণে এখানে যানজট হচ্ছে। তাছাড়া অবৈধ দোকানপাটও এখানে সমস্যা সৃষ্টি করছে।
গত ৮ই অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোডে সড়ক নির্মাণকাজ পরিদর্শন করতে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান যানজটের জন্য ট্রাফিক অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন। তিনি নিজেও ৩ ঘণ্টা যানজটের ভোক্তভোগী। উপদেষ্টার পরিদর্শনের পর গত ৩ দিন যানজট দেখা যায়নি। সড়কে যাতে যানবাহন আর আটকে না পড়ে, জনদুর্ভোগ না হয় উপদেষ্টার সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যতিব্যস্ত সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা। সড়কের ভাঙা অংশ মেরামত, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ঠিক করতেই কাজ করছেন তারা। বিশ্বরোডে গোলচত্বরের পশ্চিম পার্শ্বে কনক্রিটের কিছু ডিভাইডার বসানো হয়েছে। শনিবার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ঠিক করার লক্ষ্যে ঢাকা থেকে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে আসা পুলিশ কর্মকর্তারা দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সরাইল ও আশুগঞ্জ গোলচত্বর ঘুরে দেখেন এবং কিছু নির্দেশনা দেন।
আশুগঞ্জ-আখাউড়া ফোরলেন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক-১ মো. মোস্তাকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের শর্টটার্ম কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। সে মতোই আমরা কাজ করছি। এখন প্রোবলেম বিশ্বরোড গোলচত্বরেই। যানবাহন কীভাবে এ স্থানটি অনায়াসে অতিক্রম করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। ভাঙা মেরামত ছাড়াও পাশের জায়গা কাজে লাগিয়ে চত্বরকে আরও বড় করা, যানবাহন যাতে সহজে ঘুরতে পারে। সেই কাজই করছি আমরা। গোলচত্বরে কনক্রিটের ডিভাইডার দেয়া হয়েছে। তাছাড়া আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত যেসব স্থানে ল্যান্ড ডিভাইডার ভেঙে গেছে সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল আওয়াল মোল্লা জানান, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কীভাবে উন্নত করা যায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে সে বিষয়ে বেশ কিছু গাইডলাইন দিয়েছেন। গোলচত্বরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ আরও নানা পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।






বিশ্বরোডের যানজট এবং দোকানপাটের সমস্যা আমাদের জীবনে অত্যন্ত অসুবিধা করে। মনে হোক যে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা এখন একজোট হয়ে সমস্যার সমাধান করছেন, কিন্তু আমি তা মিমাংসা করতে পারছি না। হঠাৎ করে গোলচত্বর বড় হয়ে যাওয়া বা সিসি ক্যামেরা লাগানো আমাদের জীবন সহজ করবে না বলে মনে হয়। কি হতে পারে, আমরা এখন ট্রাফিক লাইটে অপেক্ষা করবে আর কিছু করবে না! 😄Basketball Bros
বিশ্বরোডের জটবিদ্যা এখন প্রতিনিয়ত নতুন রূপ নিয়ে আসে! কিন্তু ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা তাঁদের নির্দেশনা দিতে ভালো ভাবে কাজ করছেন মনে হয়। আশুগঞ্জ-আখাউড়া ফোরলেনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মহোদয়ের কথা ভালো। গোলচত্বর বড় করা এবং ডিভাইডার মেরামত করা সঠিক পদক্ষেপ মনে হয়। কিন্তু কি আসবে দেখতে হবে না যে, আগামীকাল কে যাবেন যানজটে আটকে না পড়েন! 😄