Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

মহাসড়কের বেহাল দশা

ঢাকা-সিলেটে ধীরগতি, খানাখন্দে ভরা ঢাকা-চট্টগ্রাম, থমকে আছে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক

ব্যবহারকারীরা সরকারকে দেন বছরে সাড়ে ৪১ হাজার কোটি টাকা :: রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় আয়ের মাত্র ২১ শতাংশ
বেহাল দশায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক। কথা ছিল, ঢাকা থেকে সিলেট সাড়ে তিন ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা। স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমলে মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হলেও তিন বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ এখন আট ঘণ্টায়ও ফুরায় না। এক সময় যে পথে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টায় সিলেট পৌঁছা যেত সেই পথে এখন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টাও লাগে।

আগামী বছরের মধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ২০২৮ সালের আগে তা হচ্ছে না- এটি অনেকটাই নিশ্চিত। সওজের কর্মকর্তাদের দাবি, ভ‚মি অধিগ্রহণ জটিলতায় সময় বেশি লাগছে। অন্যদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সংস্কারের অভাবে বেহাল দশায় পড়েছে। দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন-খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লাসহ কয়েকটি অংশে খানাখন্দকের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। এতে যানবাহনের গতি কমেছে এবং ঘন ঘন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পের কাজ দুই জেলার জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় থমকে আছে। গেল আট বছরেও এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় নির্ধারিত মেয়াদের বাড়তি পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না; বরং এই প্রকল্পে সরকারের বাড়তি শত শত কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে। দুর্ঘটনার পাশাপাশি বেড়েছে দুর্ভোগও। সওজের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পট-পরিবর্তন তথা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিগত সাড়ে পাঁচ মাসে সওজের অধীনে নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ মূলত ধীর গতিতে চলায় সমস্যা আরো প্রকট হয়ে উঠছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনের বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে সড়ক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় সাড়ে ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে সরকার। জ্বালানি তেল ও যানবাহন থেকে শুল্ক, কর ও নিবন্ধন ফি আদায় এবং টোল বাবদ আয় হয় এ অর্থ। যদিও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হয় তার মাত্র ২১ শতাংশ বা আট হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। ফলে দেশের সড়ক নেটওয়ার্কের একটি বড় অংশই থেকে যাচ্ছে ভাঙাচোরা দশায়।

ঢাকা-সিলেট ছয় লেন মহাসড়ক
স্থানে স্থানে খানা-খন্দ, ভাঙাচোরা রাস্তা সব মিলিয়ে ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারীদের এই মহাসড়ক এখন এক মহাদুর্ভোগের নাম। ঢাকা থেকে সিলেটের দিকে যেতে রাস্তার অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও সিলেট থেকে ঢাকা দিকে আসতে গেলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ১০-১২ ঘণ্টা। অথচ ছয় লেনের কাজ শুরু হওয়ার আগেও এই পথে পাঁচ-ছয় ঘণ্টায় যাওয়া যেত। এদিকে ছয় লেনের জন্য ঢিমেতালে নতুন করে নির্মাণকাজ চলায় হচ্ছে না সংস্কারকাজও। শুধু যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুতেই সংস্কার সীমাবদ্ধ রাখতে হচ্ছে বলে সওজের কর্মকর্তারা জানান। অনেক দিন থেকে এই মহাসড়কের যাত্রীরা মারাত্মক দুর্ভোগ পোহালেও কাজে গতি আসছে না। ভুক্তভোগীদের মতে, স্বৈরাচারের পতনের মধ্য দিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে পাঁচ মাসে তেমন কোনো কাজই হয়নি। যদিও সওজের কর্মকর্তাদের দাবি, কাজ চলছে। তবে ভ‚মি অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত জটিলতায় সব জায়গায় কাজ করা যাচ্ছে না।

ভুক্তভোগীরা জানান, মূলত সিলেট থেকে অতিরিক্ত পাথর ও বালি বোঝাই ট্রাকের জন্য মহাসড়কের এই অবস্থা। ঢাকা থেকে বড় বড় ট্রাক মাল নিতে খালি যায়Ñ রাস্তায় চাপ পড়ে কম, কিন্তু সিলেট থেকে যখন অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই করে রওনা দেয় তখন এসব ট্রাকের চাপে অনেক জায়গায় রাস্তা মারাত্মকভাবে দেবে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব স্থানে চালকরা ডানদিকে গাড়ি নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। এতে প্রায়ই বিপরীত দিক থেকে দ্রæত গতিতে আসার গাড়ির জন্য দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কর্মকর্তারা বলছেন, ছয় লেনের কাজ চলায় তারা ভাঙাচোরা মহাসড়ক মেরামতে খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে রাজি নন। কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার চালিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন।

সওজ সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সিলেট-ঢাকা ছয় লেন মহাসড়ক প্রকল্পের চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এই প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২০৯ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ স¤প্রসারণ এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার এলাকা চার লেনে উন্নীতকরণ করার কথা। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের প্রায় চার বছর চলে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ১০ শতাংশ কাজও সম্পন্ন হয়নি। মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে একপাশ বন্ধ রেখে স¤প্রসারণ কাজ চলছে। বেশ কয়েকটি স্থানে চলছে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণকাজ। নির্মাণকাজের কারণে সড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের। এছাড়া মহাসড়কের সিলেট বিভাগ অংশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণকাজ ছাড়াও ভোগান্তি বাড়িয়েছে মহাসড়কের খানাখন্দ। বিভিন্ন স্থানে সড়ক দেবে গেছে, কোথাও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের। আবার কোথাও পিচ সরে গিয়ে নিচের পাথর বের হয়ে এসেছে। এসব কারণে যানবাহনের গতি কমে আসায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও।

মহাসড়কের সিলেট অংশের হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে অলিপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়ক এবং সেতু ও কালভার্ট স¤প্রসারণ কাজ চলছে। সিলেটের ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমার কয়েকটি স্থানে সড়ক স¤প্রসারণের কাজ চলছে। কিন্তু কাজে ধীরগতি থাকায় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। শুধু তাই নয়, একবার যানজটে গাড়ি আটকে গেলে তা স্বাভাবিক হতে এক-দেড় ঘণ্টা সময় লাগছে। পথিমধ্যে এমন তিনটি স্থানে যানজটেই নষ্ট হচ্ছে কমপক্ষে চার-পাঁচ ঘণ্টা। তাতেই পাঁচ ঘণ্টার পথ ১০ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। মহাসড়কজুড়ে খানাখন্দ থাকলেও সওজ সংস্কার কাজে খুব বেশি জোর দিচ্ছে না জানিয়ে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, মহাসড়কটি নতুন করে নির্মাণ হচ্ছে। দুই লেনের মহাসড়কটি ছয় লেন হচ্ছে। তাই পুরোনো সড়কে খুব বেশি ব্যয় করা হচ্ছে না। যানবাহান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন কেবল ততটুকু করা হচ্ছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লাসহ বিভিন্ন অংশে খানাখন্দকের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত ১০৫ কিলোমিটারের রাস্তাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নোয়াপাড়াসহ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অংশেরও একই হাল। গেল বছরের আকস্মিক বন্যায় নিশ্চিন্তপুর থেকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পর্যন্ত দুই লেনের সড়কের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের এই বেহাল অবস্থায় বিশেষ করে পণ্য বোঝাই বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে যানবাহনের গতি কমেছে এবং ঘন ঘন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তার উপর মহাসড়কের উপর যত্রতত্র বাস স্টপেজ ও হাট-বাজার বসায় যানজটের ভোগান্তি আরো বাড়িয়েছে। ২০০৬ সালে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ১৯২ কিলোমিটার দুই লেনের সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প পাস করা হয় একনেকে। এর আগে প্রথম দফায় ঢাকা থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত চার লেনের সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয়। ২০০৬ সালে প্রকল্প অনুমোদনের পর কয়েক দফায় সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা এবং ১০ বছর সময় ব্যয় করে ২০১৬ সালে উদ্বোধন করা হয় মহাসড়কটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিন্তার দৈন্যতা এবং ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি পণ্য ও যাত্রীবান্ধব হয়ে উঠতে পারেনি। ভুল পরিকল্পনায় রাস্তার বিভিন্ন স্থানে যানজট লেগেই থাকে। তিন ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়।

দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কটিতে যানজটের প্রধান কারণ যত্রতত্র বাজার। আরো কারণের মধ্যে রয়েছে যেখানে-সেখানে বাসস্ট্যান্ড, পণ্য উঠানামা, নিষিদ্ধ স্বল্পগতির থ্রি-হুইলার, ব্যাটারি-চালিত রিকশা. অপরিকল্পিত হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট-টোলপ্লাজা ও ক্রসিং, আইন অমান্য করে উল্টোপথে যান চলাচলের প্রবণতা ইত্যাদি। নির্মাণকালে দুপাশে যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্তে¡ও রাস্তার অপরিকল্পিত নকশায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক্সপ্রেসওয়ের আদলে রাস্তার নকশা প্রণয়ন করা হলে কোনো প্রতিবন্ধকতাই তৈরি হতো না। সাধারণ নকশার কারণে রাস্তার দুই ধারে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হাট-বাজার। মহাসড়কে পায়ে হাঁটা পথসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলের সুযোগ রয়েছে অবাধে। এক কথায়, মহাসড়কের কোনো চরিত্রই এই রাস্তায় খুঁজে পাওয়া যায় না।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেশের বৃহত্তম বন্দর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার সংযোগকারী প্রধান সড়ক হিসেবে কাজ করে। এই মহাসড়কটি গার্মেন্টস, ফার্মাসিউটিক্যালস ও কৃষির মতো শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনকে সহজতর করে, যা আমদানি-রফতানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এই রুট দিয়ে পরিচালিত হয়। যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য এর গুরুত্ব তুলে ধরে। যানজট নিরসন ও বাণিজ্য করিডোর হিসেবে মহাসড়কটির সক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

ঢাকা-রংপুর চার লেন মহাসড়ক
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পের কাজ দুই জেলার জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় থমকে আছে। গেল আট বছরেও এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় নির্ধারিত মেয়াদের বাড়তি পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও কাজের অগ্রগতি হয়নি; বরং এই প্রকল্পে সরকারের বাড়তি শত শত কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে। একই সঙ্গে যানজটে দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা দুটোই বেড়েছে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত ১৯০.৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। রংপুর বিভাগ অংশে কাজ শুরুর কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনে। পরে তা ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা। ১১ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হওয়া কাজ পরবর্তী সময়ে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৬৬২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গত ২০১৭ সালের ভ‚মি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী জমির ক্ষতিপূরণ তিন গুণহারে নির্ধারিত হওয়ায় শুধু ভ‚মি অধিগ্রহণ খাতেই দুই হাজার ২৫৩ কোটি টাকা এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় ব্যয় বেড়েছে প্রায় ২২৭ কোটি টাকা।
এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ছিল ১৮ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। কিছু পরিবর্তন আনায় নতুন করে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াবে ১৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। কিন্তু করোনা, বন্যা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে বারবার প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েই চলছে। সর্বশেষ মেয়াদ ছিল ২০২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অথচ এখনো এখনো রংপুরের পীরগঞ্জ ও গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এবং আশপাশের এলাকায় জমি অধিগ্রহণ জটিলতা শেষ হয়নি। এ দুই এলাকায় সড়ক সঙ্কুচিত হওয়ায় প্রায় সময়ই যানজটের সৃষ্টি ও দুর্ঘটনা ঘটছে।

সওজ সূত্র জানায়, রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বড় দরগা থেকে রংপুর নগরীর মডার্ন মোড় পর্যন্ত ২৩.৮ কিলোমিটার সড়কের ৮৫ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি বাজার এলাকায় জমি জটিলতার কারণে দেড় কিলোমিটার অংশে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। সেখানকার প্রায় ২২ একর জমি এখনো অধিগ্রহণ করা হয়নি। নিরাপদ ও টেকসই সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কের শিল্প ও বাজার অঞ্চলে ৫০ কিলোমিটার কংক্রিট পেভমেন্ট, ২৬টি সেতু, ৩৯টি আন্ডারপাস, ছয়টি ফ্লাইওভার, ১৮০টি কালভার্ট ও পথচারী পারাপারের জন্য ১১টি পথচারী সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, মহাসড়কের শঠিবাড়ি ও বড় দরগায় ওভারপাসের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। পায়রাবন্দের ইসলামপুর এলাকায় স্বয়ংক্রিয় টোলপ্লাজার নির্মাণকাজ চলছে। এসব এলাকায় প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক-২)। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত নির্মীয়মাণ ১৯০.৪ কিলোমিটার সড়ক, ইন্টারচেইঞ্জ, মনিটরিং ও কন্ট্রোল স্টেশন, বাস-বে ও আন্ডারপাসের কাজ হলে ওভারলোড নিয়ন্ত্রণ ও দুর্ঘটনা কমানোসহ সাসেক মহাসড়কটি নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজধানীর সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের একটি শক্তিশালী সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টায় (অর্ধেক সময়) ঢাকা থেকে রংপুর যাওয়া যাবে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকবে ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, ছোট-বড় সেতু ও কালভার্ট। ফলে গাড়ির ক্রসিং কম হবে, পাশাপাশি সার্ভিস রোড থাকার কারণে লোকাল গাড়িগুলো নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto