যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত পর্যন্ত ক্ষুব্ধ ট্রাম্পের ওপর

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার ভেতরেই বেশ ভালো রকম ঝামেলা পাকিয়েছেন। তাঁকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার ফল এখন টের পাচ্ছে অভিবাসীরা, এমনকি দেশটির আদালত পর্যন্ত ট্রাম্পের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। রাজ্যের সম্মতি ছাড়াই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সেনা মোতায়নের ঘটনায় বিরক্ত দেশটির ফেডারেল আদালত। দেশের ভিতরে সেনা মোতায়েনের এসব ঘটনা নজিরবিহীন।
অভিবাসন বিরোধী অভিযানের জের ও বিক্ষোভ
অভিবাসন বিরোধী অভিযানের জেরে বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু শহর। চলতি সপ্তাহে শিকাগো, পোর্টল্যান্ড (ওরেগন রাজ্যে) নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। টেনিসি রাজ্যের মেম্ফিস শহরে ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের প্রতিবাদে ছড়ায় বিক্ষোভ।
সংঘাত: ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শহর শিকাগোয় বল প্রয়োগ করেও পরিস্থিতির লাগাম টানতে পারছে না নিরাপত্তা বাহিনী। বাধ্য হয়েই কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করলে ঘন ধোঁয়ায় পুরো এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। শহরের রাস্তায় দেখা যায় বিক্ষুব্ধ মানুষের লোকারণ্য।
ক্ষোভের মাত্রা বৃদ্ধি: অভিবাসন বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। বিক্ষোভকারীদের দমনে পিপার স্প্রে ও রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যেই বর্ডার গার্ড পেট্রোলের সদস্যের গুলিতে আহত হন এক নারী। এতে ক্ষোভের মাত্রা কয়েক গুণ বাড়ে।
প্রতিবাদ: টেনিসি রাজ্যেও রাস্তায় নামে শত শত মানুষ। মেম্ফিস শহরে ন্যাশনাল গার্ড এবং অন্যান্য ফেডারেল সংস্থার সদস্যদের মোতায়েনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রতিবাদ জানায় তারা। ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ছিল নানা স্লোগান। এ সময় ট্রাম্পের ক্ষমতার অবসান চান অনেকেই।
ফেডারেল আদালতের হস্তক্ষেপ ও সাংবিধানিক বিতর্ক
এই পরিস্থিতিতে পোর্টল্যান্ডে আপাতত ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির ফেডারেল আদালত।
ট্রাম্পের ক্ষমতা লঙ্ঘন: হোয়াইট হাউজে ফেরার পর আট মাসে একাধিক ক্ষেত্রে নির্বাহী ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এককভাবে নীতি প্রণয়ন, সরকারি বাজেট ও কর্মী ছাঁটাই এবং স্থানীয় সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ট্রাম্পের ওপর মহাবিরক্ত দেশটির জনগণ।
সাবেক স্টাফের প্রতিক্রিয়া: ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন স্থগিতের ঘটনায় এখনো হোয়াইট হাউস কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও, ট্রাম্পের উপ-প্রধান স্টাফ স্টিফেন মিলার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “এ রায় আমেরিকার সাংবিধানিক কাঠামোর সবচেয়ে গুরুতর লঙ্ঘনগুলোর একটি।”
রাজনৈতিক হুঁশিয়ারি: বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায়ে বার্তা পাবে ট্রাম্প প্রশাসন। রায় উপেক্ষা করলে জনমত হারিয়ে আবারো অভিশংসনের মতো পরিস্থিতিও সামলাতে হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা।
এর আগের মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিনিধি পরিষদে দুইবার অভিশংসিত হয়েছেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিতর্কের লাগাম না টানতে পারলে বিপদে পড়বেন অসংলগ্ন ট্রাম্প।





