USA

ট্রাম্পের অভূতপূর্ব ও অবৈধ পদক্ষেপ: ইইওসি কমিশনারদের বরখাস্ত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় সোমবার গভীর রাতে সমান কর্মসংস্থানের সুযোগ কমিশনের (ইইওসি) দুই কমিশনারকে বরখাস্ত করেছেন, যা ডেমোক্র্যাটদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। তারা এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন।

ইইওসি-এর ডেমোক্র্যাট কমিশনার জোসেলিন স্যামুয়েলস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউস থেকে পাঠানো একটি ইমেইলের মাধ্যমে তাকে জানানো হয়, ট্রাম্প তাকে তার পদ থেকে অপসারণ করছেন।

তিনি এই বরখাস্তকে ‘অভূতপূর্ব’ ও ‘আইন লঙ্ঘনকারী’ বলে অভিহিত করেছেন। স্যামুয়েলস বলেন, ‘আমি আমার আইনি বিকল্প বিবেচনা করছি এবং কর্মীদের নাগরিক অধিকার রক্ষার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’

কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান শার্লট এ. বারোজও জানান, তাকেও সোমবার রাতে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, তার এবং স্যামুয়েলসের অপসারণ ইইওসি-এর কর্মস্থলে বৈষম্য তদন্ত এবং নাগরিক অধিকার প্রয়োগের প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প ইইওসি-এর প্রধান আইন উপদেষ্টা কার্লা গিলব্রাইডকেও বরখাস্ত করেছেন।

এ বিষয়ে ইইওসি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং হাফপোস্ট-কে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছে।

ট্রাম্পের এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড (এনএলআরবি)-এও প্রতিফলিত হয়েছে। সোমবার রাতে তিনি এই স্বাধীন কর্মস্থল নিয়ন্ত্রক সংস্থার ডেমোক্র্যাটিক প্রধান আইন উপদেষ্টা জেনিফার আব্রুজো এবং বোর্ড সদস্য গুইন উইলকক্সকেও অপসারণ করেন।

একটি ইমেইলে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র বলেন, বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা চরমপন্থী বামপন্থী নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি, যারা প্রচলিত শ্রম আইনকে নস্যাৎ করার রেকর্ড গড়েছেন। তাদের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনে কোনো জায়গা নেই, কারণ জনগণ আমাদেরকে তাদের চরমপন্থী নীতিগুলো বাতিল করার ম্যান্ডেট দিয়েছে।

হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইইওসি এবং এনএলআরবি-এ ট্রাম্পের নিযুক্ত প্রধান আইন উপদেষ্টাদের বরখাস্ত করেছিলেন, তবে বাইডেন তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কমিশনার বা বোর্ড সদস্যদের অপসারণ করেননি।

এই বরখাস্তের ঘটনাগুলি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। কারণ, স্বাধীন সংস্থার সিনেট-নিযুক্ত কর্মকর্তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অপসারণের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত। ৯০ বছর আগের সুপ্রিম কোর্টের একটি সিদ্ধান্ত অনুসারে, প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র অবহেলা বা অসদাচরণের ক্ষেত্রে এ ধরনের কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে পারেন।

ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারি, যিনি সিনেটের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শ্রম ও পেনশন কমিটিতে রয়েছেন, মঙ্গলবার এই বরখাস্তকে ভীতিকর ও অবৈধ বলে উল্লেখ করেন।

মারি বলেন, ‘একজন প্রেসিডেন্ট, যিনি নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করেন এবং কর্মীদের অধিকারকে গুরুত্ব দেন না, তার আরও একটি বেআইনি সিদ্ধান্ত এটি।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button