ক্যালিফোর্নিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত : পাইলটসহ ৬ জন নিহত

যদিও বেকার মৃত্যুর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলেননি, তবে মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) আগেই জানিয়েছিল, উড়োজাহাজটিতে ছয়জন আরোহী ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগোর একটি আবাসিক এলাকায় ঘন কুয়াশার মধ্যে একটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে পাইলটসহ ছয় আরোহী সবাই নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো।
সান দিয়াগো থেকে এএফপি জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর ৩টা ৪৭ মিনিটে (গ্রিনিচ মান সময় সকাল ১০টা ৪৭ মিনিট) সেসনা ৫৫০ সিটেশন বিমানটি বিদ্যুতের তারে ধাক্কা খেয়ে সান ডিয়েগোর মারফি ক্যানিয়ন এলাকার একটি পাড়া অঞ্চলে পড়ে যায়। মার্কিন জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (এনটিএসবি) এই তথ্য জানিয়েছে।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এনটিএসবি’র তদন্তকারী ড্যান বেকার জানান, মাটিতে কেউ গুরুতর আহত হননি।
যদিও বেকার মৃত্যুর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলেননি, তবে মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) আগেই জানিয়েছিল, উড়োজাহাজটিতে ছয়জন আরোহী ছিলেন।
সান ডিয়াগো কাউন্টির মেডিক্যাল পরীক্ষকের দফতর যাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে, তাদের মধ্যে আছেন ৪২ বছর বয়সী সঙ্গীত অ্যাজেন্ট ডেভ শ্যাপিরো, ২৫ বছর বয়সী এমা হিউক এবং ৩৬ বছর বয়সী সেলিনা কেনিয়ন।
সঙ্গীতজগতের পরিচিত মুখ শ্যাপিরো ‘সাউন্ড ট্যালেন্ট গ্রুপ’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি সুম ৪১ ও ভেনেসা কার্লটনের মতো শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব করেছে।
প্রতিষ্ঠানটি মার্কিন গণমাধ্যমকে জানায়, তাদের আরো দুই কর্মী—বুকিং সহকারী হিউক ও কেনডাল ফোর্টনারও এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে সাউন্ড ট্যালেন্ট গ্রুপ বলে, ‘আমাদের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, সহকর্মী ও বন্ধুদের হারিয়ে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। আমরা তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেলিনা কেনিয়ন ছিলেন পেশাদার আলোকচিত্রী ও এক কন্যাসন্তানের জননী। তার বাবা ব্রায়ান চার্লস ফেল্ডম্যান এনবিসি৭-কে জানান, কেনিয়ন বান্ধবীদের সাথে বাণিজ্যিক বিমানে না গিয়ে ব্যক্তিগত বিমানেই ফিরছিলেন, যাতে মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে পারেন।
অন্যান্য নিহতদের মধ্যে ছিলেন সফটওয়্যার প্রকৌশলী ডমিনিক ডেমিয়ান ও ড্যানিয়েল উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ছিলেন মেটালকোর ব্যান্ড ‘দ্য ডেভিল ওয়্যারস প্রাডা’র সাবেক ড্রামার। ব্যান্ডটি ইনস্টাগ্রামে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছে, ‘কোনো কথা নেই। আমরা তোমার কাছে ঋণী। ভালোবাসা চিরকাল।’
দুর্ঘটনার সময় কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে ধ্বংসাবশেষ আঘাত হানে এবং ঘটনাস্থলে পুড়ে যাওয়া গাড়ি ও ছড়িয়ে থাকা ফাইবারগ্লাসের টুকরো দেখা যায়।
এনটিএসবি জানিয়েছে, বিমানটির পাইলট কোনোরূপ ত্রুটি বা জরুরি পরিস্থিতির কথা নিয়ন্ত্রণ কক্ষকে জানাননি। দুর্ঘটনার সময় মন্টগোমারি-গিবস এক্সিকিউটিভ বিমানবন্দরের রানওয়ের আলোকব্যবস্থা ও স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়ার বার্তা দেয়ার ব্যবস্থা কাজ করছিল না।
তদন্তকারী বেকার বলেন, ‘আমরা এখনো নিশ্চিত নই, বিমানে কোনো ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ছিল কিনা।’
এনটিএসবি জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্ত শেষ হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে