অস্ট্রিয়ায় স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নিহত ১০

পুলিশ জানায়, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্কুলটিকে এখন নিরাপদ। আর কোনো বিপদের সম্ভাবনা নেই। ঘটনার পরপরই কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য পুলিশের বিশেষায়িত কোবরা ইউনিট মোতায়েন করে।
অস্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরের একটি মাধ্যমিক স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ঘটনার জন্য দায়ি সন্দেহভাজন ব্যক্তিও রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, এ ঘটনায় অন্তত আরো ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, তারা ধারণা করছে, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী হামলার পর আত্মহত্যা করেছেন। গ্রাজ অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং রাজধানী ভিয়েনা থেকে এটি প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে।
বার্তা সংস্থা এএফপিরকে দশ জন মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ওই শহরের মেয়র এলকে কাহর।
পুলিশ জানায়, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্কুলটিকে এখন নিরাপদ। আর কোনো বিপদের সম্ভাবনা নেই। ঘটনার পরপরই কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য পুলিশের বিশেষায়িত কোবরা ইউনিট মোতায়েন করে।
এ ঘটনার খবর শুনেই দেশটির চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান স্টকার তার দিনের সব কর্মসূচি বাতিল করেছেন। তিনি হামলার ঘটনাকে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, এই তরুণদের সামনে তাদের পুরো জীবনও পড়ে ছিল। একজন শিক্ষকও আছে যিনি তাদের সাথে ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও গ্রাজ শহরে গেছেন।
এর আগে সকালে বিশাল স্কুলটির দিক থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো বলে স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। এরপর স্থানীয় সময় সকাল দশটার দিকে পুলিশ সেখানে অভিযান শুরু করে।
অভিযানের সময় ওই এলাকায় পুলিশের বিপুল সংখ্যক গাড়ী এবং আকাশে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনায় হতাহতের খবর জানিয়ে বলেন, এতে নিহতদের মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লেয়েন বলেছেন, ‘স্কুল মৃত্যুর জায়গায় পরিণত হওয়াটা মেনে নেয়া কঠিন। স্কুল হলো তারুণ্য, আশা ও ভবিষ্যতের প্রতীক। সেই স্কুল যখন মৃত্যু ও সহিংসতার কেন্দ্র হয় সেটি মেনে নেয়া যায় না।’
উল্লেখ্য, ইউরোপের অন্য অনেক দেশের তুলনায় অস্ট্রিয়ায় বন্দুক আইন কিছুটা উদার। আঠার বছরের বেশি যে কোনো ইউরোপীয় নাগরিক সেখানে রাইফেল ও শটগানের মালিক হতে পারেন। তবে এটি কেনার ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেটি কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে নিবন্ধন করাতে হয়।
এছাড়া পিস্তল, রিভলভার ও সেমি অটোমেটিক অস্ত্র কেনা বা এর লাইসেন্স পাওয়ার জন্য কমপক্ষে একুশ বছর বয়সী হতে হয়। এগুলো কেনার সময় ক্রেতাকে প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে হয়। অনেক সময় মানসিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয় কিন্তু সেটি বাধ্যতামূলক নয়।