মহাকাশে শক্তিশালী বিস্ফোরণের খোঁজ

বিগ ব্যাংয়ের পর থেকে মহাকাশে এখন পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরণের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাকাশে চরম মাত্রার পারমাণবিক ক্ষণস্থায়ী মুহূর্ত (ইএনটি) আবিষ্কার করা হয়েছে। এই মহাজাগতিক বিস্ফোরণের মাধ্যমে ১০০টি সূর্যের সমতুল্য শক্তি নির্গত হতে পারে। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে এই বিস্ফোরণের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মহাজাগতিক বিস্ফোরণের এই নতুন শ্রেণি চিহ্নিত করেছেন। একে চরম মাত্রার পারমাণবিক ক্ষণস্থায়ী মুহূর্ত বলা হচ্ছে। বিগ ব্যাংয়ের পর থেকে দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘটনা হচ্ছে এই বিস্ফোরণ। এসব ঘটনা ঘটে যখন বিশাল নক্ষত্র দূরবর্তী ছায়াপথের কেন্দ্রে সুপার ম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বরের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসব নক্ষত্র আমাদের সূর্যের ভরের কমপক্ষে তিন গুণ বেশি থাকে।
এসব বিস্ফোরণ থেকে ১০০টি সূর্য তাদের সমগ্র জীবদ্দশায় যত শক্তি নির্গত করে, তার সমতুল্য শক্তি নির্গত হয়। বিশাল মহাজাগতিক দূরত্ব ধরে এই বিস্ফোরণের প্রমাণ দৃশ্যমান হয়। নতুন এই আবিষ্কার মহাবিশ্বে নক্ষত্র ও কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে গতিশীল মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করবে।
বিজ্ঞানী হিংকল ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে নির্গত দীর্ঘস্থায়ী অগ্নিতরঙ্গ নিয়ে কাজের সময় ইএনটির প্রথম খোঁজ পান। এ বিষয়ে হিংকল বলেন, ‘আমরা এক দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন হতে দেখেছি। অন্যদিকে ইএনটি বেশ ভিন্ন। এসব বিস্ফোরণ আমরা সাধারণত যা দেখি, তার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি উজ্জ্বলতায় ঘটে। বছরের পর বছর ধরে এসব বিস্ফোরণের আলোকিত প্রমাণ থাকে। সবচেয়ে উজ্জ্বল পরিচিত সুপারনোভা বিস্ফোরণের চেয়ে বেশি শক্তি উৎপাদন করে।
গাইয়া১৮সিডিজে নামের ইএনটির তথ্য বিশ্লেষণের পর এসব তথ্য জানা গেছে। এটি পরিচিত সবচেয়ে বড় সুপারনোভার চেয়ে আশ্চর্যজনকভাবে ২৫ গুণ বেশি শক্তি নির্গমণ করেছে। সাধারণত বিভিন্ন সুপারনোভা মাত্র এক বছরে সূর্যের ১০ বিলিয়ন বছরের সমান শক্তি নির্গমণ করে। অন্যদিকে ইএনটি ১ বছরে ১০০টি সূর্যের সমান শক্তি বিকিরণ করে।