Trending

ইরানে ইসরায়েলের হামলা: পারমাণবিক দূষণের শঙ্কা বিশ্বজুড়ে

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এসব হামলা থেকে পারমাণবিক ও রাসায়নিক দূষণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পারমাণবিক কেন্দ্রঘেঁষা সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

জাতিসংঘের পরমাণু তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষতির কারণে পারমাণবিক ও রাসায়নিক উপাদান ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। তিনি সতর্ক করেন, সামরিক উত্তেজনা যত বাড়বে, তত রেডিওলজিক্যাল দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়বে।

গ্রসি জানান, নাতাঞ্জের ভূগর্ভস্থ মূল সেন্ট্রিফিউজ স্থাপনাটি সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত না হলেও হামলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এতে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইড গ্যাস সংরক্ষিত সেন্ট্রিফিউজগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এই গ্যাস অত্যন্ত বিপজ্জনক ও বিষাক্ত—শ্বাস নিলে বা শরীরে লাগলে প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে এখনও এ ধরনের কোনো গ্যাস নির্গমনের তথ্য মেলেনি বলে তিনি জানান।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কায়া কালাসও এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন বন্ধে কূটনৈতিক পথেই সমাধান সম্ভব, সামরিক হামলা নয়।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উত্তেজনা এবং ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে চলমান সংঘাতের মধ্যেই এই হামলা বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে।

আইএইএ এর আগে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জানায়, ইসরায়েলের হামলায় নাতাঞ্জের স্থাপনার উপরের অংশ ধ্বংস হয়েছে। এ ধরনের হামলার নজির ইতিহাসে খুব কম। অতীতে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হলেও সেগুলো বেশিরভাগই নির্মাণাধীন ছিল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ‘ভুল হিসেবে গণ্য হতে পারে’, কারণ সামান্য ভুল তথ্য বা সিদ্ধান্তই বড় ধরনের পারমাণবিক বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও পারমাণবিক আশঙ্কা বাড়ছে। ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টে রুশ বাহিনী ট্যাংক ও গোলাবারুদ নিয়ে অবস্থান করছে, যা বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আইএইএ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles